আস্ক প্রশ্নে আপনাকে স্বাগতম ! এটি একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। এই সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন ...
186 বার প্রদর্শিত
"ইসলাম ধর্ম" বিভাগে করেছেন (2,577 পয়েন্ট) 34 181 234

1 উত্তর

0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন (0 পয়েন্ট) 4 5 15
সম্পাদিত করেছেন

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর প্রিয় হাবীব নবী করীম (সাঃ)-এর প্রিয় উম্মতগণকে চির সুখময় জান্নাত প্রদানের জন্য বেশ কিছু পথ পাথেয় নির্ধারণ করে রেখেছেন। এগুলোর মধ্যে কালেমা তাইয়্যেবা অন্যতম। যারা প্রতিদিন এ সর্বোত্তম কালেমাটি পাঠ করবেন তাদের জন্য রয়েছে অফুরন্ত নেয়ামত।

হযরত ওমর (সাঃ) হতে বর্ণিত আছে, একদিন নবী করীম (সাঃ) এর সাথে আমরা সবাই এক মজলিসে উপস্থিত ছিলাম। এমতাবস্থায় হযরত জিব্রাইল (আঃ) উপস্থিত হয়ে নবী করীম (সাঃ)-এর সম্মুখে বসলেন, আমরা সকলে তাঁকে দেখতে পেলাম। অতঃপর জিব্রাইল (আঃ) নবী করীম (সাঃ)-এর সম্মুখে বসলে নবী কারীমকে (সাঃ) বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ আমাকে বলে দেন ইসলাম কি? তখন হুজুর পাক (সাঃ) বললেন, ইসলাম হল কালেমা তাইয়্যেবা পাঠ করা, নামাজ পড়া, যাকাত দেয়া, রমজানে রোজা রাখা। আর যদি শক্তি সামর্থ থাকে, তবে হজ্ব করা।

হযরত জিব্রাইল (আঃ) এ কালাম শুনে বললেন, হে হযরত আপনি সত্য বলেছেন যে, ইসলামের এ পাঁচটিই রোকন বা স্তম্ভ। অতঃপর হযরত জিব্রাইল (আঃ) নবী করীম (সাঃ)-এর সঙ্গে অনেক ছওয়াল, জওয়াব করার পর চলে গেলেন। তারপর নবী করীম (সাঃ) ছাহাবাগণকে বললেন, এ ব্যক্তি জিব্রাইল (আঃ) তোমাদিগকে ইসলাম সম্বন্ধে শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যে একজন প্রশ্নকারীর ন্যায় এসেছিলেন, উপরোক্ত হাদীসের মর্মার্থই কালেমা তাইয়্যেবাকে অন্যান্য রোকন বা স্তম্ভের ওপর স্থান দেয়া হয়েছে।

হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) নবী করীমে (সাঃ) হতে বর্ণনা করেন, একদিন হযরত মুসা (আঃ) আল্লাহপাকের কাছে মুনাজাত করে বললেন, হে আমার মাবুদ, আমাকে এ রূপ একটি কালেমা বা এছমে আজম শিক্ষাদান করুন, যখন আপনাকে ডাকি তখন যেন কালেমার দ্বারাই ডাকতে পারি। তখন আল্লাহ পাক এরশাদ করেন, হে মুছা বল তুমি ‘লা ইলাহা ইল্লাহল্লাহ এবং ইহার দ্বারা আমাকে ডাক। ইহা শুনে হযরত মুছা (আঃ) দ্বিতীয়বার আরজ করলেন, হে বারে খোদা ‘লাইলাহা ইল্লাহল্লাহ’ এরূপ একটি সাধারণ কালেমা, যা সমস্ত লোকেরাই বলে ডাকে, এর মধ্যে আমার কি বৈশিষ্ট্য আছে? হে খোদা! আমি তো এমন একটি খাছ কালেমা চাইতেছি, যা আমি ব্যতীত অন্য কেহ না জানে। তখন মাবুদের পক্ষ হতে জবাব আসল, হে মুছা তুমি এ কালেমাকে সাধারণ মনে করে, এর ইজ্জত করলে না, ইহা খাছ হতে খাছ একটি কালেমা, যদি সাত স্তর আসমানেও জমিন এক পাল্লাতে রাখা যায়, আর অন্য পাল্লাতে এ কালেমা শরীফকে রাখা হয়, তবে এ কালেমা শরীফের ওজন অনেক বেশি ভারী হবে। তখন মুছা (আঃ) চুপ হয়ে গেলেন। (নাসারী শরীফ)

হযরত আবু আলী আপন মাছনাদে হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন, যে গুনাহগার ব্যক্তি রাতে বা দিনের যে কোনো সময় লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ করে, তখনই তার আমলনামা হতে যাবতীয় পাপ মোচন হয়ে যায়। যত পাপ তার আমলনামা হতে মোচন হয়ে গেছে, অনুরূপ পুণ্য তার আমলনামায় লেখা হয়, ইহার কারণ এই যে, যে ব্যক্তি ‘লা-ইলাহা ইল্লাহল্লাহ’ পাঠ করেছে, সে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত সমস্ত বাতেল মাবুদকে তাদের অস্তিত্ব হতে বিনাশ বা ধ্বংস করে দিয়েছে। এর কারণই তার সমস্ত পাপ মোচন হয়ে যায়, কেননা গুনাহ হল খায়েশ নফসানির কলঙ্ক স্বরূপ। সমস্ত বাতেল মাবুদকে ধ্বংস করার মাধ্যমে খায়েশ নফসানিকে ধ্বংস করা হল। আল্লাহ পাক তখন আপন মেহেরবাণীতে উক্ত বাতেল মাবুদকে অস্বীকার করার কারণে যে সমস্ত পাপ হয়েছিল, তা সমূলে বিনাশ করে বান্দাকে পাপ থেকে নিষ্পাপ করে পবিত্র করেন, আর আল্লাহ পাকের অস্তিত্ব ও একাত্ব স্বীকার করার কারণে তদস্থানে সে পরিমাণ নেকী করলেন কেননা যেখানে আতর বা মেঞ্জ অম্বর থাকে সেখানে সুবাস আপনা আপনি হয়ে থাকে। আর সেখান হতে আবর্জনা দূর করা হয়। সেখান থেকে দুর্গন্ধ দূর হয়ে যায়।

আল্লামা বজ্জিজি আপন মাছনাদে হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, নবী করীম (সাঃ) এরশাদ করেছেন, আল্লাহ পাকের আরশের সম্মুখে একটি নূরের স্তম্ভ আছে, যখন কোনো ব্যক্তি দুনিয়াতে ‘লাইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে থাকে তখন আপনা আপনি সে নূরের স্তম্ভটি কাঁপতে থাকে। তখন আল্লাহ পাক বলেন, হে স্তম্ভ চুপ কর, কেঁপো না। তখন স্তম্ভটি আরজ করবে, হে আল্লাহ পাক, যে পর্যন্ত তুমি কালেমা পাঠকারীকে মাফ না কর, সে পর্যন্ত আমি কি করে চুপ করব? তখন মাবুদের পক্ষ থেকে হুকুম হবে, আমি তাকে মাফ করে দিলাম। এ কথা শোনামাত্র স্তম্ভটি চুপ হয়ে যাবে।

এ পবিত্র কালেমা সম্পর্কে আল্লাহ পাক কোরানুল করীমে এরশাদ করেন কালেমা তাইয়্যেবার উদাহরণস্বরূপ যেমন একটি পবিত্র বৃক্ষ যার শিকড় জমিনের সঙ্গে সংযুক্ত আর উহার শাখা আকাশের দিকে তদ্রুপ কালেমা তাইয়্যেবা দুনিয়াতে আর উহার নূরের শাখাটি স্তম্ভ স্বরূপ সপ্ত আকাশের ওপর।

নাজুহাতুন্নাজায়ের তান বিহেফ কিহে আবু লায়েছ নামক গ্রন্থে কোনো এক ছাহাবী হতে বর্ণিত আছে যে, ‘যে ব্যক্তি একবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ কালেমা শরীফকে তাজিম সহকারে পাঠ করবে, আল্লাহপাক তার চার হাজার পাপ মাফ করে দেবেন। যদি তার চার হাজার পাপ না থাকে, তবে তার পরিবার বর্গের ও তার প্রতিবেশীর চার হাজার পাপ মাফ করে দেবেন।

তাফছিরে রুনুল বায়ন নামক কিতাবে বর্ণিত আছে যে, দাহিয়া কালবী একজন কাফের ছিল। দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করার তার খুবই আগ্রহ ছিল এবং হুজুর পাক (সাঃ) অধিকাংশ সময় তার ইসলাম গ্রহণ করার জন্য আল্লাহ পাকের দরবারে দোয়া করতেন, কেন না তার সঙ্গে তার আত্মীয় স্বজনও প্রায় সাতশ ছিল। এই একটি লোক মাত্র ইসলাম গ্রহণ করলে, সাতশ লোকও চির শান্তিময় ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়ে যায়। যাক অবশেষে হুজুর (সাঃ) এর দোয়া মঞ্জুর হল। একদিন আপনা আপনি হঠাৎ তার অন্তঃকরণে ইসলামের মহব্বত, সত্যতা ও অনুপ্রেরণা জাগ্রত হল এবং মুসলমান হওয়ার জন্য হুজুর (সাঃ) এর সমীপে আসতে লাগল। এদিকে হযরত জিব্রাইল (আঃ) হজুর (সাঃ) কে সুসংবাদ প্রদান করলেন যে, ‘হে নবী আল্লাহ পাক আপনার নিকট ছালাম প্রেরণ করে বলেছেন যে, দাহিয়া-কালবী আপনার খেদমতে ইসলাম গ্রহণ করার জন্য আসছে। অল্পক্ষণের মধ্যেই দাহিয়া কালবী হুজুর সমীপে হাজির হল। হুজুর (সাঃ) তাকে দেখে আপন চাদর মোবারক নিজ স্কন্দ মোবারক হতে নামিয়ে তাকে বসবার জন্য জমিনের ওপর বিছিয়ে ছিলেন।

ইসলাম ধর্মে বিধান আছে যে, যদি কোনো কওমের নেতৃস্থানীয় বা সম্মানিত কোনো লোক তোমাদের নিকট উপস্থিত হয়, তখন তার সম্মান কর। সুতরাং হুজুর (সাঃ) তার সম্মানার্থে আপনি চাদর মোবারক বসবার জন্য বিছিয়ে দিলেন। তারপর দাহিয়া-কালবী হুজুর (সাঃ) এর পূত-পবিত্র চরিত্র ও আপন শত্রুর প্রতি অমায়িক ব্যবহার দেখে অশ্রু বিসর্জন করতে করতে চাদর জমিন হতে তুলে চুমো দিয়ে চোখে লাগিয়ে মাথার ওপর রেখে অতি বিনয় ও নম্রতা সহকারে বলতে লাগলো, হে নবী আমাকে ইসলাম ধর্মের শর্ত সমূহে বলে দিন এবং কালেমা তৌহিদ শিক্ষা দিয়ে দীক্ষিত করুন। তখন নবী করীম (সাঃ) এরশাদ করলেন, হে দাহিয়া বল তুমি, ‘লাইলাহা ইল্লাল্লাহ মোহাম্মদুর রাসুল্লাহ’। দহিয়া-কালবী কালেমা তাইয়্যেবা পাঠ করে কাঁদতে কাঁদতে অস্থির হয়ে যেতে লাগলেন। তখন নবী করীম (সাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করলেন হে দাহিয়া বল তুমি কাঁদছ কেন? দাহিয়া কালবী উত্তর, হুজুর আমি বড় পাপ করেছি, আল্লাহ পাকের দরবারে একটু আরজ করুন, আমার পাপ মোচনের কি কোনো উপায় হতে পারে? যদি আমাকে আপনি হত্যা করে ফেলেন তাও আমি অম্লানবদনে শিরোধার্য করে নেবো। আর যদি আমার যাবতীয় ধন-সম্পদ আল্লাহ পাকের রাস্তায় বিলিয়ে দিতে হয় তাও দেব।

তবুও যেন আমার পাপ মাফ হয়ে যায়। হুজুর (সাঃ) দাহিয়া কালবীর এরূপ অবস্থা দেখে জিজ্ঞেস করলেন, হে নবী আমি আমার কওমের সর্দার। আমি লজ্জায় কারণে ৭০জন মেয়ে জীবিত হত্যা করেছি। হে আল্লাহর নবী আমার এ পাপ কি মাফ হবে? হুজুর (সাঃ) দাহিয়ার এ কথা শুনে স্তম্ভিত হয়ে অঙ্গুলি দন্ত মোবারকে রাখলেন এবং তার জুলুমও অত্যাচারের প্রতি অবাক হয়ে পড়লেন, আর মনে মনে চিন্তা করতে লাগলেন, হায় এ হেন জঘণ্য পাপ কিরূপে মাফ হতে পারে? এ দিকে দাহিয়া হুজুরের সম্মুখে দাঁড়িয়ে ক্রন্দন করতেছে, অপরদিকে হঠাৎ জিব্রাইল (আঃ) হুজুর (সাঃ) এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলতে লাগলেন, হে নবী (সাঃ) আল্লাহরাব্বুল আলামীন আপনার নিকট ছালাম প্রেরণ করেছেন, আপনি দাহিয়াকে বলে দেন যে, দাহিয়া লাইলাহা ইল্লাল্লাহ মোহাম্মদুর রাসুলুল্ল্যাহ পড়ার কারণে আল্লাহ পাক তার ৬০ বছরের মূর্তি পূজা ও কুফরী এবং ৬০ বছরের যাবতীয় পাপরাশি আর ৭০ জন নিস্পাপ মেয়েকে বিনা অপরাধে হত্যা করার যাবতীয় পাপ মার্জনা করে দিয়েছেন। অর্থাৎ পবিত্র ইসলাম ধর্মগ্রহণ করলে পূর্বেও যাবতীয় পাপ মাফ হয়ে যায়। আল্লাহ পাকের এ হুকুম মাত্র হুজুর (সাঃ) কাঁদতে কাঁদতে আকুল হয়ে ওঠলেন, উপস্থিত ছাহাবাগণও কাঁদতে লাগলেন, আর দাহিয়া কালবী তো ক্রন্দন করতে করতে বেহুশ হয়ে গেলেন। এমতাবস্থায় নবী করীম (সাঃ) এর পবিত্র কালেমা শরীফ পড়ে, তার সারা জীবনের মূর্তি পূজা, শিরক কুফর ও মেয়ে হত্যা ইত্যাদি যাবতীয় পাপ হতে মুক্তি পেয়ে গেল। আচ্ছা আমার উম্মতের মধ্যে যদি কোনো মোত্তাকী পরহেজগার জীবনব্যাপী এ কালেমা পাঠ করতে করতে মরে যায় তবে সে কেন তোমার ক্ষমা পাবে না? হে আল্লাহ নিশ্চয়ই সে ব্যক্তি তোমার ক্ষমা পেয়ে থাকবে।

রায়হাকী হতে মাজালেছে মিনাও জাওয়াজের কিতাবে বর্ণিত হয়েছে যে, একজন কাফের বাদশাহ পবিত্র ইসলাম ধর্মের ভয়ানক শক্র ছিল। সে অনেক মুসলমানকে হত্যা করেছিল। ঘটনাক্রমে একবার মুসলমান সেনা তার ওপর জয়লাভ করে, জীবিতবস্থায় তাকে ধৃত করে নিয়ে আসলেন, সমস্ত মুসলমান একত্রিত হয়ে তাকে সাজা দেয়ার মানসে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হল যে, একটি তাম্র ডেকে তাকে রেখে মুখ ঝালাই করে নিচে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হোক। যেন আপন কৃতকর্মের স্বাদ গ্রহণ করতে পারে।

এ রায় সাব্যস্ত হওয়ার পর উক্ত কাফের বাদশাহকে ডেগের মধ্যে রেখে মুখ ঝালাই করে বন্ধ করে দিল এবং নিচে আগুন জ্বালিয়ে ছিল। যখন ডেগটি উত্তপ্ত হয়ে ওই কাফেরকে দুঃসহ কষ্ট দিতে লাগল। তখন সে তার যাবতীয় দেবতাগণকে এ ভীষণ বিপদ থেকে রক্ষার জন্য ডাকতে লাগল, হে আমার প্রভু! আমি তোমাদের জন্যই স্ব স্ব মুসলমানের প্রাণ বিনাশ করেছি। আজ তোমরা আমার এ বিপদকালে সাহায্য কর। এ রূপে অশ্রু বিসর্জন করে বার বার বলতে লাগল। কিন্তু মাটি পাথরের দেবতা কোনোই উপকার করতে পারলো না। অবশেষে কাফের বাদশাহ দেবতাদের হতে বিমুখ হয়ে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে আত্মসমর্পন করে আপন মুখ উর্ধ্বে তুলে বলতে লাগল ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।’ এ পবিত্র কালেমা বলার সঙ্গে সঙ্গেই আল্লাহ পাক তার ইসলাম কবুল করলেন। মহান আল্লাহ কোরানুল করীমের এরশাদ করেন, আল্লাহ ব্যতীত আর কে আছেন, যিনি দুঃখে কষ্টে জর্জরিত হয়ে আহাজারী করতে থাকে, তার বিপদের সময় তাকে সাহায্য করতে পারে। আল্লাহ ব্যতীত আর কেউ নেই যিনি বিপদের সময় সাহায্য করতে পারে।

হযরত ইউসুফ (আঃ) অন্ধকার কূপে নিমজ্জিত হয়ে আল্লাহকে ডেকে কাছে পেয়েছেন। হযরত ইউনুস (আঃ) সমুদ্রের নিচে মাছের পেটের মধ্যে থেকে আল্লাহকে স্মরণ করে নিকটে পেয়েছিলেন। হযরত আইউব (আঃ) বহুদিন অসহ্য রোগে ভুগেও আল্লাহকে কাছে পেয়েছেন। অর্থাৎ সেখানে যে বিপদে আল্লাহকে ডেকেছেন, সে সেখানেও তাঁকে পেয়েছেন।

সুতরাং ওই কাফের বাদশাহ ও কালেমা শরীফ পাঠ করে ডাকার সাথে সাথে পাহাড়ের দিক হতে প্রবলবেগে ঝড় ঝঞ্ছা আসতে লাগলো। বৃষ্টির পানিতে অগনিে নিভে গেল। আর বাতাসে ডেগটিকে শূন্যে তুলে এক কাফেরের দেশে নিয়ে গেল। সে দেশে একটি লোকও আল্লাহ বলার ছিল না। যখন ডেগটি আকাশ হতে নিচে পড়তে লাগল, তখন লোকেরা দেখে আশ্চান্বিত হয়ে গেল। ব্যাপার কি? অবশেষে পতিত ডেগটি খুলে দেখতে পেল, এক ব্যক্তি একেবারেই নিরাপত্তাবস্থায় ডেগের মধ্যে বসে কালেমা তাই য়্যেবা পাঠে মগ্ন রয়েছে। তখন উপস্থিত লোকেরা তাকে জিজ্ঞেস করলো, আপনি কে, কিভাবে এ ডেগের মধ্যে আবদ্ধ হয়েছেন এবং কিভাবে এখন এসেছেন। বাদশাহ বলল, আমি একজন কাফের বাদশাহ ছিলাম। মুসলমানকে হত্যা করা বড়ই পুণ্যের কাজ মনে করে বহু মুসলমানকে হত্যা করেছি। ঘটনাক্রমে মুসলমানরা আমাকে ধৃত করে মারার উদ্দেশ্যে ডেগের মধ্যে রেখে মুখ ঝালিয়ে প্রজ্বলিত অগ্নিমধ্যে ফেলে দেয়। এ সময় আমি আমার উপাস্য দেব-দেবীর নিকট সাহায্য চাই। কিন্তু তারা কোনো উপকার করেনি বিধায় বিশ্ব স্রষ্টা ত্রাণকর্তা পালনকর্তা ও মুক্তিদাতার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করলাম। তিনিই আমাকে এ অবস্থায় এখানে পৌঁছে দিয়েছেন। উপস্থিত লোকজন ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় নিতে লাগল। অল্প দিনের মধ্যেই দেশের সমস্ত লোক মুসলমান হয়ে গেল।

হায়াতুল কুলুব নামক কিতাবে বর্ণিত আছে, একদিন আল্লাহ পাক নবী করীম (সাঃ) কে সংবাদ দিলেন যে, ‘হে নবী আপনার অমুক আনছার ছাহাবীর মৃত্যু আগত প্রায়। এ সংবাদ শ্রবণমাত্র নবী (সাঃ) অস্থির হয়ে সেখানে যেয়ে দেখতে পান যে বাস্তবিকই তার মৃত্যু উপস্থিত হয়েছে। তখন নবী (সাঃ) উক্ত ছাহাবীকে বললেন পড় কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ও মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।’ সাহাবী বার বার চেষ্টা করেও পড়তে পারলেন না, অবশেষে অনন্যোপায় হয়ে আপন আঙ্গুল উর্ধ্বে তুলে ইঙ্গিতে বললেন, হুজুর (সাঃ) তার অবস্থা দেখে হেসে উঠলেন। উপস্থিত ছাহাবীগণ আরজ করলেন ইয়া রাসুলুল্ল্যাহ আমাদের প্রাণ আপনার পা মোবারকে উৎসর্গ হোক, আনছারীর এ দারুণ বিপদের সময় আপনার হাস্য করার কারণ কি জানতে বাসনা। তখন হুজুর (সাঃ) বললেন, আমি যখন তাকে কালেমা শরীফ পাঠ করাতে ছিলাম, তখন সে আপন মুখে কালেমা শরীফ পাঠ করে উপস্থিত লোকগণকে সাক্ষী রাখতে না পারায় তার আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে আকাশের মালিক আল্লাহকে তার সাক্ষী করে রাখলো যখন সে আকাশের দিকে আপন অঙ্গুলী উত্তোলন করল, তখনই আল্লাহ পাকের পক্ষ হতে সংবাদ হয়ে গেল, হে ফেরেস্তারা তোমারা দেখ, যখন আমার বান্দার মুখবন্ধ হয়ে গেল, তখন সে আপন মুখে কালেমা শরীফ পড়ে কাকে সাক্ষী করাতে না পেরে সে আমার প্রতি দৃষ্টি করে আপন অঙ্গুলী দ্বারা আমাকে তার কালেমার সাক্ষী করে রাখল, হে ফেরেস্তারা আমিও তোমাদেরকে সাক্ষী করে রাখলাম যে, আমি আমার বান্দাকে মাফ করে দিলাম। তখন হুজুর (সাঃ) বললেন, হে আমার ছহাবাবাগণ আন্ছারার এহেন অবস্থা দেখতে পেয়ে হেসেছিলাম। এতে আশ্চর্য হবার কিছু নেই।

মোনতাযাবুন্না কায়েছ নামক কিতাবে বর্ণিত আছে যে, হযরত মুসা (আঃ) এর যামানায় এক ব্যক্তি ৪৮০ বছর পর্যন্ত কুফুরী করতে ছিল। একদিন আল্লাহ পাকের রহমতে ঈমানের প্রতি তার মন আকৃষ্ট হল, তখন সে আল্লাহর নবী হযরত মুসা (আঃ) এর খেদমতে হাজির হয়ে কালেমা তাইয়্যেবা পড়ে পবিত্র ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হলেন।

হযরত জিব্রাইল (আঃ) হযরত মুসা (আঃ) কে সুসংবাদ প্রদান করলেন, হে মুসা (আঃ) এ ব্যক্তি একবার কালেমা শরীফ পড়ার কারণে আল্লাহ পাক ৪৮০ বছরের পাপরাশি মাফ করে দিয়েছেন।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

1 উত্তর
13 জুন 2018 "ইসলাম ধর্ম" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Md.Rasel Ahmed (6,181 পয়েন্ট) 495 2298 2406
0 টি উত্তর
19 এপ্রিল 2018 "ইসলাম ধর্ম" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন জুয়েল রানা (2,577 পয়েন্ট) 34 181 234
1 উত্তর
19 এপ্রিল 2018 "ইসলাম ধর্ম" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন জুয়েল রানা (2,577 পয়েন্ট) 34 181 234
1 উত্তর
27 ফেব্রুয়ারি 2018 "ইসলাম ধর্ম" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন শামীম মাহমুদ (7,799 পয়েন্ট) 1009 2971 3067
1 উত্তর
09 এপ্রিল 2018 "ইসলাম ধর্ম" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন শামীম মাহমুদ (7,799 পয়েন্ট) 1009 2971 3067

28,156 টি প্রশ্ন

29,682 টি উত্তর

3,147 টি মন্তব্য

3,920 জন সদস্য



আস্ক প্রশ্ন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে কমিউনিটির এই প্ল্যাটফর্মের সদস্যের মাধ্যমে আপনার প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান পেতে পারেন এবং আপনি অন্য জনের প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান দিতে পারবেন। মূলত এটি বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য।

  1. Jahidul ISLAM

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  2. ratna

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  3. আবু উবাইদাহ

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  4. Apon

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  5. সালেহ

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

শীর্ষ বিশেষ সদস্য

...