আস্ক প্রশ্নে আপনাকে স্বাগতম ! এটি একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। এই সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন ...
256 বার প্রদর্শিত
"স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে করেছেন (2,723 পয়েন্ট) 97 693 745

1 উত্তর

0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন (273 পয়েন্ট) 1 2 12
অ্যাজমা বা হাঁপানি হচ্ছে ফুসফুসের একটি রোগ যার কারনে শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা হয়। এটি সাধারণত দুই ধরনের হতে পারে একটি খুব তীব্র হয় আর অন্যটি হচ্ছে দীর্ঘস্থায়ী। যখন ফুসফুসে বাতাসের প্রবাহে বাধার সৃষ্টি হয় তখনি হাঁপানির আক্রমন হয়। এই রোগের সঠিক কারন যদিও জানা নেই তবে সালফাইট যুক্ত কিছু খাবার ও ঔষধ, অ্যালার্জি, বায়ু দূষণ, শ্বাস প্রশ্বাসের সংক্রমন, মানসিক চাপ, আবহাওয়ার পরিবর্তন ইত্যাদির কারনে হাঁপানির আক্রমণ হতে পারে। বিশেষ করে শীতকালে হাঁপানি রোগীদের রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায় বেশি। যেহেতু শীতকাল চলে আসছে তাই হাঁপানি রোগীদের জন্য সতর্ক থাকার সময় এই সময়ই। আর হাঁপানির সাধারণ লক্ষণগুলো হলো প্রচুর কাশি, নিঃশ্বাসে শব্দ হওয়া, নিঃশ্বাস নিতে না পারা এবং বুকে টান লাগা। হাঁপানি রোগের প্রতিরোধে যদিও অনেক ঔষধ রয়েছে তবে কিছু ঘরোয়া উপায়ের মাধ্যমেও হাঁপানির আক্রমনে উপশম করা সম্ভব। এখানে হাঁপানির সমস্যা উপশমের কিছু ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানাচ্ছি: আদা: আদা হাঁপানিসহ বিভিন্ন রোগের প্রাকৃতিক চিকিৎসার জন্য বেশ পরিচিত। গবেষকরা গবেষণায় পেয়েছেন যে শ্বাসনালীর প্রদাহ এবং শ্বাসনালীর সংকোচনের ক্ষেত্রে আদা সাহায্য করে। এছাড়া তারা এটাও পেয়েছেন যে হাঁপানির কিছু ঔষধের মতো আদাতেও পেশিকে শিথিল করার মতো উপাদান রয়েছে। হাঁপানির কষ্ট উপশমে সামান্য একটু আদা লবন দিয়ে খেতে পারেন। সমপরিমাণ আদার রস, বেদানার রস এবং মধু মিশিয়ে সেই মিশ্রণ থেকে ১ টেবিল চামচ করে দিনে ২-৩ বার খেতে পারেন। এছাড়া ১ চা চামচ আদার গুঁড়া দেড় কাপ পানিতে মিশিয়ে সেই মিশ্রণ থেকে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ১ টেবিল চামচ খেতে পারেন। ১ ইঞ্চি আদার টুকরো কুঁচি করে কেটে বেশ অনেকটা পানি দিয়ে কম আঁচে ৫ মিনিট ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে খেতে পারেন হাঁপানির সমস্যা কমাতে। সরিষার তেল: যখন হাঁপানির আক্রমণ হয় তখন কিছুটা সরিষার তেল কুসুম গরম করে বুকে এবং পিঠে মালিশ করলে শ্বাস প্রশ্বাসের পথ পরিষ্কার হয় এবং স্বাভাবিক ভাবে নিঃশ্বাস নিতে পারে। শুকনো ডুমুর ফল: ডুমুর ফলের পুষ্টি গুনাগুন শ্বাস যন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করতে এবং কফ পরিষ্কার করত ও শ্বাস কষ্ট কমাতে সাহায্য করে। এক কাপ পানিতে ৩টি শুকনো ডুমুর ফল সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই ফল এবং ফল ভেজানো পানিটা খালি পেটে খেতে হবে। কয়েকমাস একটানা খেলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। রসুন: নিচে উল্লেখিত প্রক্রিয়াতে রসুন খেলে তা হাঁপানির প্রাথমিক পর্যায়ের ফুসফুসের বাধা দূর করতে সাহায্য করে। পৌনে এক কাপ পানিতে বড় ২-৩ কোয়া রসুন ফুটিয়ে নিয়ে কক্ষ তাপমাত্রায় এলে সেটা পান করুন। কফি: সাধারণ ক্যাফেইন থাকা কফি পান করলে তা হাঁপানির সমস্যায় বেশ উপকারে আসে। গরম কফি শ্বাস নালীকে পরিষ্কার করে এবং নিঃশ্বাস নেয়া সহজ করে। তবে মনে রাখতে হবে অতিরিক্ত কফি খাওয়া যাবে না। দিনে খুব বেশি হলে ৩ কাপ কালো কফি খেতে পারেন। আর যদি কফি পছন্দ না হয় তাহলে গরম রঙ চা খেতে পারেন। ইউক্যালিপটাস তেল: বিশুদ্ধ ইউক্যালিপটাস তেল হাঁপানির চিকিৎসায় বেশ কার্যকরী। কারন এতে রয়েছে জমাট বাধা দূর করার গুনাগুন। গবেষণায় দেখা যায় যে ইউক্যালিপটাস তেলে থাকা ইউক্যালিপটল নামক রাসায়নিক পদার্থ মিউকাস ভাঙতে সাহায্য করে। যদিও এই তেলটি আমাদের দেশে সহ্জলভ্য নয় তবে চাইলে অনলাইনে কিনে নিতে পারেন। সামান্য কয়েক ফোঁটা ইউক্যালিপটাস তেল পেপার টাওয়েল বা রুমালে নিয়ে ঘুমানোর সময় মাথার পাশে রাখুন যেন এর গন্ধটা নিঃশ্বাসের সাথে যায়। এছাড়া কয়েক ফোঁটা ইউক্যালিপটাস তেল গরম পানিতে দিয়ে সেটার বাষ্পের মাঝে গভীর নিঃশ্বাস নিন। দ্রুত উপশম পাবেন। মধু: মধু হচ্ছে হাঁপানির সবচেয়ে পুরনো নিরাময়ক উপাদান। মধুতে থাকা অ্যালকোহল এবং ইথারিয়েল তেল হাঁপানির উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে। অনেক সময় শুধুমাত্র মধু গন্ধ শুঁকেই অনেকে ভালো ফলাফল পেয়ে যায়। এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ১চা চামচ মধু মিশিয়ে ধীরে ধীরে পান করুন দিনে ৩ বার। রাতে ঘুমাতে যাবার আগে ১ চা চামচ মধুর সাথে আধা চা চামচ দারচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে খেয়ে নিন। এটি গলার কফ দূর করতে এবং ভালো ঘুমাতে সাহায্য করবে। পেঁয়াজ: পেঁয়াজের প্রদাহ বিরোধী গুনাগুন হাঁপানির শ্বাস কষ্ট দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়া পেঁয়াজে থাকা সালফার ফুসফুসের প্রদাহ দূর করতেও সাহায্য করে। ভালো শ্বাস প্রশ্বাসের জন্য শুধু কাঁচা পেঁয়াজ খেতে পারেন। যদি কাঁচা খেতে না পারেন তাহলে রান্নায় একটু বেশি করে পেঁয়াজ দিয়ে সেই পেঁয়াজ খান। লেবু: হাঁপানির রোগীদের দেহে অনেক সময় ভিটামিন সি এর মাত্রা কম থাকে। লেবুতে থাকা প্রচুর ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হাঁপানির উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে। এক গ্লাস পানিতে অর্ধেকটা লেবু চিপে স্বাদ অনুযায়ী কিছুটা চিনি দিয়ে নিয়মিত খেতে পারেন হাঁপানির আক্রমণ কমাতে। এছাড়া বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানে ভরপুর কমলা, পেঁপে, ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি ইত্যাদি ফলও হাঁপানির উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে। কিছু টিপস: যাদের হাঁপানি আছে তারা হাঁপানির আক্রান্ত হবার কারনগুলো খুঁজে বের করুন এবং চেষ্টা করুন সেগুলো থেকে দূরে থাকতে। রান্নায় ভেষজ মশলাগুলো ব্যবহারের চেষ্টা করুন। খাবারে অমেগা৩ ফ্যাটি এসিড রাখার চেষ্টা করুন। তেল, মাছ ইত্যাদি। খাবার তালিকাতে প্রচুর তাজা ফল ও সবজি রাখুন। বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান যেমন ম্যাগনেসিয়াম, সেলেনিয়াম, বিটা ক্যারোটিন এবং ভিটামিন সি এবং ই ফুসফুসের কার্যকারিতাকে উন্নত করতে সাহায্য করে। প্রক্রিয়াজাত করা ও আলাদা খাবারের গন্ধ দেয়া ও প্রিজারভেটিভ দেয়া খাবার পরিহার করুন হাঁপানির আক্রমণ কমাতে। যদি কারো ল্যাক্টোজে অসহিষ্ণুতার জন্য দুধে অ্যালার্জি থাকে তাহলে দুধ ও দুগ্ধ জাতীয় খাবার বাদ দিন। হাঁপানির সমস্যা কমাতে এগুলো কিছু ঘরোয়া উপায়। তবে রোগের সমস্যা যদি প্রকট হয় এবং এসব উপায়ে কোনো উপশম না হয় তাহলে সঠিক রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। - লেখক: জনস্বাস্থ্য পুষ্টিবিদ; এক্স ডায়েটিশিয়ান,পারসোনা হেল্থ; খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান(স্নাতকোত্তর)(এমপিএইচ); মেলাক্কা সিটি, মালয়েশিয়া। সূত্র - http://www.paribarik.com/article/103

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

1 উত্তর
18 অগাস্ট 2019 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Yasin Arafath (1,283 পয়েন্ট) 10 68 81
1 উত্তর
22 জুন 2018 "রূপচর্চা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Md.Rasel Ahmed (6,181 পয়েন্ট) 500 2305 2406
1 উত্তর
31 মার্চ 2018 "গণিত" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Ayaan (2,796 পয়েন্ট) 158 421 438

28,156 টি প্রশ্ন

29,682 টি উত্তর

3,147 টি মন্তব্য

3,930 জন সদস্য



আস্ক প্রশ্ন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে কমিউনিটির এই প্ল্যাটফর্মের সদস্যের মাধ্যমে আপনার প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান পেতে পারেন এবং আপনি অন্য জনের প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান দিতে পারবেন। মূলত এটি বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য।

  1. rjsiraz

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  2. Hasan১

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  3. তামিম আল আদনানী

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  4. Tarun

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  5. Rasel rana

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

শীর্ষ বিশেষ সদস্য

...