আস্ক প্রশ্নে আপনাকে স্বাগতম ! এটি একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। এই সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন ...
277 বার প্রদর্শিত
"ইসলাম ধর্ম" বিভাগে করেছেন (2,723 পয়েন্ট) 96 689 745

1 উত্তর

1 টি পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন (1,496 পয়েন্ট) 14 32 43


তওবা কিভাবে করতে হবে?

তওবা করার জন্য জন্য কয়েকটি শর্ত পূরণ করতে হবে, তাহলেই আল্লাহ তাআ'লা সেই তওবা কবুল করবেন।

১. পাপ কাজ করা বন্ধ করতে হবে। এখন শুধু মুখে মুখে তওবা করে নেই, কয়েকদিন পর থেকে পাপ কাজটা ছেড়ে দেবো – এরকম হলে তওবা কবুল হবেনা।

২. অতীতের সমস্ত পাপ কাজ ও ভুল ত্রুটি আল্লাহর কাছে স্বীকার করে তাঁর কাছে অনুতপ্ত ও লজ্জিত হতে হবে।

৩. অন্তরে ঐ কাজগুলোর প্রতি ঘৃণা রেখে সেইগুলোতে আর ফিরে না যাওয়ার জন্য প্রতিজ্ঞা করতে হবে। তব কসম করবেন না, কসম না করে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করবেন।

৪. লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে সমস্ত গুনাহ-খাতার জন্য “ইস্তিগফার” করতে হবে (ক্ষমা চাইতে হবে) + “তওবা” করতে হবে (গুনাহ করা বন্ধ করে আল্লাহর কাছে ফিরে আসতে হবে)।

৫. কারো হক্ক নষ্ট করে থাকলে যে ভাবেই হোক তাকে তার পাওনা ফিরিয়ে দিতে হবে, সামর্থ্য না থাকলে অনুরোধ করে, ক্ষমা চেয়ে তার কাছ থেকে মাফ করিয়ে নিতে হবে। উল্লেখ্য, তওবা করলে আল্লাহ সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেন, এমনকি কারো পাপ জমীন থেকে আকাশ পর্যন্ত পৌঁছে গেলেও আল্লাহ তাকে মাফ করে দেবেন। কিন্তু বান্দার কোনো হক্ক নষ্ট করে থাকলে সেটা বান্দা মাফ না করলে আল্লাহও ক্ষমা করবেন না।

৬. অন্তরে আশা রাখতে হবে যে, আমি গুনাহগার কিন্তু আল্লাহ গাফুরুর রাহীম – অতীব ক্ষমাশীল ও দয়ালু। সুতরাং আমি যতবড় গুনাহগার হয়ে থাকি না কেনো, তিনি আমার তওবা কবুল করবেন ইন শা’ আল্লাহ।

৭. তওবা করার পরে প্রাণপণে চেষ্টা করতে হবে পাপ কাজ থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকতে, এবং সাধ্য অনুযায়ী বেশি বেশি করে নেকীর কাজ করার জন্য।

৮. যে পাপ কাজ থেকে তওবা করা হলো (সমস্ত পাপ কাজ থেকেই তওবা করা ফরয), কোনো ভুলে বা কুপ্রবৃত্তির কারণে পাপ কাজটা আবার করে ফেললে সাথে সাথে আবার তওবা করে সেটা থেকে ফিরে আসতে হবে। এইভাবে যখনই কোনো পাপ কাজ সংঘটিত হবে, সাথে সাথেই তওবা করতে হবে, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত।

৯. কারো তওবা কবুল হয়েছে কিনা এটা কিভাবে বুঝবেন? অনেক আলেম এ সম্পর্কে বলেনঃ কারো যদি তওবা করার পরের জীবন আগের জীবন থেকে ভালো হয় অর্থাত পাপের কাজ অনেক কমে যায় ও ভালো কাজ বৃদ্ধি পায় তাহলে আশা করা যেতে পারে – তার তওবা আল্লাহর দরবারে কবুল হয়েছে।

কিন্তু কারো যদি এমন না হয় অর্থাৎ, তওবার আগের ও পরের জীবনে কোনো পার্থক্য না থাকে তাহলে বুঝতে হবে তার তওবাতে ত্রুটি আছে। তার উচিত হতাশ না হয়ে – বার বার আন্তরিকতার সাথে খালেস নিয়তে তওবা করা, আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া।

***আন্তরিক তওবা যদি আল্লাহর কাছে কবুল হয় – তাহলে তার আগের সমস্ত গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দেন। এমনকি যেই গুনাহগুলো মাফ করে দেন, কেউ যদি সেইগুলো থেকে ফিরে আসে – এইগুলোর বিপরীতে আল্লাহ তাকে সওয়াব দান করেন। যেমনটা আল্লাহ কুরানুল কারীমে উল্লেখ করেছেনঃ

“কিন্তু যারা তওবা করে ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গোনাহসমূহকে পুন্য দ্বারা পরিবর্তত করে দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু”। (সুরা ফুরক্বানঃ ৭০)।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে আন্তরিক তওবা করার তোওফিক দান করুন।

***কি দুয়া পড়ে তওবা করতে হবে?

আমাদের দেশের মানুষকে তওবার দোয়া নামে যে দোয়া শেখানো হয় তা হলোঃ

"আস্তাগফিরুল্লাহা রাব্বি মিন কুল্লি যামবিও ওয়া আতুবু ইলাইহি, লা হা’উলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলায়্যিল আযীম"।

এটা একটা দোয়া, কিন্তু সমস্যা হলো কোরান-হাদীসের কোথাও এই দোয়া খুঁজে পাওয়া যায়না! তার মানে এই দোয়া হলো হুজুরের বানানো দোয়া, ম্যান মেইড!!

অনেকে যুক্তি দেখাতে পারেন, দোয়াতো দোয়াই, আল্লাহর কাছে একভাবে চাইলেই হবে। তাদেরকে বলবোঃ

১. নবী ﷺ আমাদেরকে যেই দোয়া শিখিয়ে গেছেন, তা না শিখিয়ে হুজুরের বানানো দোওয়া কেনো শেখানো হবে?

হুজুর কি নবী ﷺ এর থেকে ভালো দোয়া বানাতে পারে (নাউযুবিল্লাহ)!

২. হুজুরের দোয়া পড়লে কতটুকু নেকী পাওয়া যাবে? কোনো গ্যারান্টি আছে হুজুরের বানানো দোয়া আল্লাহ কবুল করবেন?

উত্তর হচ্ছেঃ না, নাই।

আসলে এগুলো একটা ষড়যন্ত্র, মানুষকে কুরান হাদীস ছেড়ে হুজুরের বানানো ভুয়া ইসলাম শেখানোর জন্য।

যেই দোয়া পড়ে রাসুলুল্লাহ ﷺ তওবা করতেন ও আমাদেরকে পড়তে বলছেনঃ

أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الْعَظيمَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ القَيّوُمُ وَأَتُوبُ إِلَيهِ

উচ্চারণঃ আসতাগফিরুল্লা-হাল আ’যীমাল্লাযী লা-ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হা’ইয়ুল ক্বাইয়ূমু ওয়া আতুবু ইলাইহি।

অর্থঃ আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যিনি ছাড়া ইবাদতের আর কোন যোগ্য উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী। আমি তাঁর কাছে তওবা করছি।

রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ

“যেই ব্যক্তি এই দোয়া পড়বে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেবেন, যদিও সে জিহাদের ময়দান থেকে পলাতক আসামী হয়”।

(অর্থাত, সে যদি বড় রকমের গুনাহগার হয়, তবুও আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেবেন।)

হিসনুল মুসলিম পৃষ্ঠা ২৮৬।

তিরমিযী ৪/৬৯, আবুদাঊদ ২/৮৫, মিশকাত হা/২৩৫৩, হাদীসটি সহীহঃ সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৭২৭।

হুজুরের বানানো দুয়া থেকে রাসুলুল্লাহ ﷺ এর দুয়া বেশি দামী। অলসতা করবেন না। তওবার মতো এতো গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়, তাই এই দুয়াটা অবশ্যই মুখস্থ করবেন এবং নিয়মিত উঠতে বসতে, যখনই মনে পড়বে বেশি বেশি করে এই দুয়া পড়ে আল্লাহর কাছে মাফ চাইবেন ইন শা’ আল্লাহ।

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) বলেছেন, “যে কেউ দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে দিনের বেলা এই দু‘আটি (সাইয়েদুল ইসতিগফার) পাঠ করবে ঐ দিন সন্ধ্যা হওয়ার আগে মৃত্যু বরণ করলে সে জান্নাতবাসী হবে এবং যে কেউ ইয়াকিনের সাথে রাত্রিতে পাঠ করবে ঐ রাত্রিতে মৃত্যুবরণ করলে সে জান্নাতবাসী হবে।” (বুখারী)


اللّهـمَّ أَنْتَ رَبِّـي لا إلهَ إلاّ أَنْتَ ، خَلَقْتَنـي وَأَنا عَبْـدُك ، وَأَنا عَلـى عَهْـدِكَ وَوَعْـدِكَ ما اسْتَـطَعْـت ، أَعـوذُبِكَ مِنْ شَـرِّ ما صَنَـعْت ، أَبـوءُ لَـكَ بِنِعْـمَتِـكَ عَلَـيَّ وَأَبـوءُ بِذَنْـبي فَاغْفـِرْ لي فَإِنَّـهُ لا يَغْـفِرُ الذُّنـوبَ إِلاّ أَنْتَ


উচ্চারণ:

“আল্লাহুম্মা আনতা রব্বী, লা-ইলাহা ইল্লা আনতা খালাকতানী ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহদিকা ওয়া ও’য়াদিকা মাসতাত’তু আউযুবিকা মিন শার্ রি মা ছা’নাতু আবূউলাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়্যা ওয়া আবূউলাকা বিযামবী ফাগ্ ফির্ লী ফাইন্নাহু লা-ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আনতা”


অর্থঃ

“হে আল্লাহ, তুমি আমার প্রতিপালক, তুমি ছাড়া প্রকৃত এবাদতের যোগ্য কেউ নাই।

তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ, আর আমি তোমার গোলাম আর আমি সাধ্যমত তোমার সাথে কৃত অঙ্গীকারের উপর অবিচল রয়েছি। আমার কৃত-কর্মের অনিষ্ট থেকে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমাকে যত নেয়ামত দিয়েছে সেগুলোর স্বীকৃতি প্রদান করছি। যত অপরাধ করেছি সুগুলোও স্বীকার করছি। অত:এব, তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। কারণ, তুমি ছাড়া ক্ষমা করার কেউ নেই।”

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

2 টি উত্তর
04 জুন 2018 "ইসলাম ধর্ম" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন At Munna (1,670 পয়েন্ট) 97 1318 1427
1 উত্তর
06 জুন 2018 "ইসলাম ধর্ম" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন At Munna (1,670 পয়েন্ট) 97 1318 1427

28,156 টি প্রশ্ন

29,682 টি উত্তর

3,147 টি মন্তব্য

3,920 জন সদস্য



আস্ক প্রশ্ন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে কমিউনিটির এই প্ল্যাটফর্মের সদস্যের মাধ্যমে আপনার প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান পেতে পারেন এবং আপনি অন্য জনের প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান দিতে পারবেন। মূলত এটি বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য।

  1. Jahidul ISLAM

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  2. ratna

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  3. আবু উবাইদাহ

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  4. Apon

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  5. সালেহ

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

শীর্ষ বিশেষ সদস্য

...