তরঙ্গের বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপ:
১. মাধ্যমের কণাগুলোর স্পন্দন গতির ফলে তরঙ্গ সৃষ্টি হয় কিন্তু কণাগুলোর স্থায়ী স্থানান্তর হয় না।
২. যান্ত্রিক তরঙ্গ সঞ্চালনের জন্য মাধ্যম প্রয়োজন।
৩. তরঙ্গ একস্থান থেকে অন্যস্থানে শক্তি সঞ্চালন করে।
৪. তরঙ্গের বেগ মাধ্যমের প্রকৃতির উপর নির্ভর করে।
৫. তরঙ্গের প্রতিফলন ও প্রতিসরণ ও উপরিপাতন ঘটে।
তরঙ্গের প্রকারভেদ:
তরঙ্গ দুই প্রকার: ১)অনুপ্রস্থ তরঙ্গ ২) অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ।
চিত্রের ন্যায় একটা লম্বা দড়ি নাও। দড়ির একপ্রান্ত একটি শক্ত অবলম্বনের সাথে আটকাও। অপর প্রান্তধরে হাত উপর-নিচে বা ডানে-বামে সঞ্চালন কর।
|
দড়িতে এবার ৭.৪ চিত্রের ন্যায় একটি তরঙ্গের সৃষ্টি হবে। লক্ষ কর হাতের সঞ্চালন বা কম্পনের দিক উপর-নিচ বা ডানে-বামে কিন্তু তরঙ্গের গতির দিক অনুভুমিক। এখানে কম্পনের দিক তরঙ্গের গতির দিকের সাথে আড়াআড়ি বা প্রস্থ বরাবর। এই তরঙ্গই হচ্ছে অনুপ্রস্থ তরঙ্গ। সুতরাং আমরা বলতে পারি, যে তরঙ্গ কম্পনের দিকের সাথে লম্বভাবে অগ্রসর হয় তাকে অনুপ্রস্থ তরঙ্গ বলে। পানির তরঙ্গ অনুপ্রস্থ তরঙ্গের উদাহরণ।
একটি স্প্রিংকে চিত্রের ন্যায় ৭.৫ আটকানো হলো। এবার আমরা উক্ত স্প্রিংটির মুক্ত প্রাšত ধরে চিত্রের ন্যায় সামনেপিছে হাত সঞ্চালন করি। হাত সামনের দিকে নিলে স্প্রিং-এ একটি সঙ্কোচন প্রবাহের সৃষ্টি হবে আবার হাত পিছনের দিকে নিলে একটি প্রসারণ প্রবাহের সৃষ্টি হবে। সঙ্কোচন ও প্রসারণ প্রবাহ সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এখানে হাতের সঞ্চালন বা কম্পন যেদিকে তরঙ্গও সেই দিকে অগ্রসর হয়। অর্থাৎ এখানে কম্পনের দিক এবং তরঙ্গের গতির দিক পরস্পর সমান্তরাল বা একই। সুতরাং আমরা বলতে পারি, যে তরঙ্গ কম্পনের দিকের সাথে সমান্তরালভাবে অগ্রসর হয় তাকে অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ বলে। বায়ু মাধ্যমে শব্দের তরঙ্গ অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গের উদাহরণ।
অনুপ্রস্থ তরঙ্গের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বিন্দুকে তরঙ্গশীর্ষ ও তরঙ্গপাদ বলে। অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গে অনুরূপ রাশি হচ্ছে সঙ্কোচন ও প্রসারণ।