আস্ক প্রশ্নে আপনাকে স্বাগতম ! এটি একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। এই সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন ...
308 বার প্রদর্শিত
"জীব বিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (4,388 পয়েন্ট) 273 1554 1592

1 উত্তর

0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন (4,388 পয়েন্ট) 273 1554 1592

মানবদেহের শীর্ষদেশে মস্তিষ্কের অবস্থান। মানদেহের কঙ্কালতন্ত্রের করোটির ভিতরে মস্তিষ্ক সুরক্ষিত অবস্থায় থাকে। মানুষের ভ্রূণদশায় মস্তিষ্ক সুষম্নাকাণ্ডের অগ্রভাগে থাকে। ভ্রূণদশায় মানুষের মস্তিষ্কের তিনটি স্তর থাকে। ভ্রূণের বৃদ্ধির সাথে সাথে মস্তিষ্কের মধ্যবর্তী স্তর বাইরের স্তরের দিকে নানা ধরনের রাসায়নিক দ্রব্যাদি পাঠাতে থাকে। এর দ্বারা নলাকার স্নায়ূকোষ (neurons) গঠিত হয়। এই পর্যায়ে মস্তিষ্কের আদি দশার উৎপত্তি ঘটে। মানবদেহের বিভিন্ন অংশের গঠন প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ করে নানা ধরনের জিনঘটিত উপাদান। এরা সাধারণ নাম জিনোম (Genome)। মানবদেহে জিনের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। এর ভিতরের অসংখ্য জিনের নিয়ন্ত্রণে মস্তিষ্ক গঠিত হয়। কোনো কারণে জিন নষ্ট হয়ে গেলেই জিনঘটিত রোগের সৃষ্টি হয়। মানবভ্রূণের আদিতে এই সকল জিন মস্তিষ্ক গঠনের যে নির্দেশ দেয়, তার সূত্রে তৈরি হয় স্নায়ুকোষ। মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের ভিতরে সংযোগ স্থাপনের উদ্দেশ্যে এই স্নায়ুকোষগুলো তৈরি হয়। মস্তিষ্কের স্নাহুকোষের সংখ্যা প্রায়০০,০০০,০০০,০০০। বলাই বাহুল্য এই সংখ্যা মানবদেহের মোট জিনের সংখ্যার চেয়ে বেশি। মানুষের মস্তিষ্কের ভিতরে স্নায়ুকোষ ছাড়াও থাকে, গিলাল কোষ এবং রক্তবাহী শিরা। স্নায়ুকোষ সমূহের মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গাকে বলা হয় সিন্যাপ্স। এর ভিতর দিয়ে বৈদ্যুত্যিক সঙ্কেত এবং রাসায়নিক সঙ্কেত সঞ্চালিত হয়।

১০০ দিন অতিক্রম করার পর  ভ্রূণের মস্তিষ্ক অংশ দৃশ্যমান হয়ে উঠে। এই সময় মস্তিষ্কের ওজন দাঁড়ায় ১ আউন্স। আর ২৭০ দিন পর যখন শিশুর মস্তিষ্কের ওজন দাঁড়ায় ১৪ আউন্স। প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষের মস্তিষ্কের আয়তন প্রায় ১২৬০ ঘন সেন্টিমিটার, আর নারীর মস্তিষ্কের আয়তন প্রায় ১১৩০ ঘন সেন্টিমিটার। আর ওজন হয় প্রায় ১.৩৬ কেজি।

মস্তিষ্ক সুরক্ষিত থাকে অস্থিময় একটি আবরকের ভিতরে। একে সাধারণভাবে মাথার খুলি বা খুলি বলা হয়। খুলির পরেই রয়েছে ত্রিস্তর বিশিষ্ট একটি শক্ত আবরণ। এই অংশও মস্তিষ্কের সুরক্ষার কাজ করে। দ্বিস্তরী ফাইবারাস টিস্যুর সন্নিবেশে গঠিত প্রথম স্তরের নাম ডুরা ম্যাটার, অনেকটা ঢিলা থলের মত যার ভিতরে থাকে মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ড। এরপর রয়েছে সূক্ষ্ম সংযোজক কলার খুব পাতলা একটি স্তর। একে বলা হয় অ্যারাকনয়েড স্তর। এর পর থাকে পিয়া ম্যাটার নামে আরেকটি স্তর। 

অ্যারাকনয়েড স্তর এবং পিয়া ম্যাটারের মধ্যে থাকে সেরেব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড (CSF) নামের একটি বর্ণহীন তরল দ্রবণ। এই দ্রবণে থাকে সোডিয়াম ক্লোরাইড-সহ নানা ধরনের লবণ। খুলিতে আঘাত পেলে এই অংশ সেই আঘাতকে অনেকখানি কমিয়ে দিতে পারে। এমনকি মস্তিষ্কের খানিকটা প্রসারণের প্রয়োজন হলে মাথার খুলিতে চাপ না দিয়ে যাতে প্রসারণ সম্ভব হয় এই দ্রবণের দ্বারা। 

পিয়া ম্যাটার এই অংশও এক ধরনের সংযোজক কলার দ্বারা সৃষ্ট। এই অংশ তুলনামুলকভাবে একটু শক্ত। এই অংশের পরেই রয়েছে মূল মস্তিষ্ক। এই অংশও বাইরের আঘাত থেকে রক্ষার জন্য কাজ করে।


মস্তিষ্কের বহির্দর্শন 
মাথার খুলি খুলে ফেললে বাইরের থেকে মস্তিষ্ককে একটি প্যাঁচালো জমাটবদ্ধ অংশ দেখা যায়। এই অংশের সাধারণ নাম সেরেব্রাম। এটি মস্তিষ্কের সবচেয়ে বড় অংশ। মানুষের সকল ঐচ্ছিক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করে এই অংশ। এই ঐচ্ছিক অংশের ভিতরে রয়েছে চিন্তা করা, উপলব্ধি করা, পরিকল্পনা করা এবং ভাষা বুঝতে পারা ইত্যাদি এই অংশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। 

সেরেব্রাম দুটি খণ্ডে বিভক্ত। পুরো সেরেব্রামকে একটি গোলক হিসেবে ধরে নিলে, বিভাজিত সেরেব্রামকে বলা যেতে পারে অর্ধগোলক। এই বাইরের পাতলা আবরণকে বলা হয় সেরেব্রাল কর্টেক্স। এই 
স্নায়ু কোষের লম্বা এক্সন থাকে। এর রঙ সাদা। তাই সেরেব্রাল কর্টেক্সকে সাদা দেখায়। কিন্তু এর ভিতরের অংশের রঙ হয় ধূসর।

মাথার উপরের অংশকে যদি উন্মুক্ত করা যায়, তাহলে ভাঁজ খাওয়া নলাকার নরম অংশ চোখে পড়ে। এর মাঝখান দিয়ে একটি গভীর খাঁজ লক্ষ্য করা যায়। এই খাঁজকে বলে লঙ্গিচ্যুডিনাল ফিসার। মস্তিষ্কের ডান এবং বাম পাশের খণ্ডের মধ্যে খুব সামান্য পার্থক্য আছে। সেই কারণে একে প্রায় দ্বিপ্রতিসম বলা যেতে পারে। মধ্যবর্তী এই খাঁজের উভয় পার্শ্বের অংশকে, প্রাথমিকভাবে ডান এবং বাম মস্তিষ্ক নামে অভিহিত করা হয়। এছাড়া উভয় অংশের মস্তিষ্কে মধ্যাঞ্চল জুড়ে আরও একটি ভাঁজ লক্ষ্য করা যায়। এই ভাঁজকে বলা হয় মধ্য সেন্ট্রাল সালকাস। এই ভাঁজের সম্মুখভাগকে বলা হয় অগ্র খণ্ড আর পিছনের অংশকে বলা হয় পশ্চাৎ খণ্ড। পশ্চাৎ খণ্ডের শেষে থাকে অক্সিপেটাল খণ্ড। উভয় অংশের ভিতরে একগুচ্ছ তন্তু বা সুতোর মত কাঠামোওয়ালা টিসু এই দুই অর্ধগোলকের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করে, যার নাম করপাস ক্যালোসাম। এই অংশে মস্তিষ্কের অন্য অংশের তুলনায় স্নায়ূতন্তুর ঘনত্ব বেশি। এই অংশে প্রায় ২০ কোটি স্নায়ূতন্তু সন্নিবিষ্ট থাকে।

মস্তিষ্ককে সামনে থেকে দেখলে প্রথমে চোখে পড়ে গাঢ় এবং হালকা দুই ধরনের অংশ। এদের বলা হয় ধূসর পদার্থ এবং সাদা পদার্থ। ধূসর পদার্থে থাকে প্রধানত স্নায়ূকোষ এবং রক্তনালী। আর সাদা পদার্থে থাকে স্নায়ু কোষের লম্বা এক্সন। এই অংশে চর্বি জাতীয় পদার্থের আধিক্য আছে।

এছাড়াও পাখির ডানার মত বিস্তৃত ল্যাটারাল ভেন্ট্রিকল নামে গহবর দেখা যাচ্ছে যায়। উল্লেখ্য মস্তিষ্কে মোট চারটি ভেন্ট্রিকল আছে, রাইট ল্যাটারাল ভেন্ট্রিকল, লেফট ল্যাটারাল ভেন্ট্রিকল, থার্ড ভেন্ট্রিকল, ফোর্থ ভেন্ট্রিকল। মস্তিষ্কের পার্শ্বদেশীয় ক্রসসেকশনাল ভিউতে তৃতীয় এবং চতুর্থ ভেন্ট্রিকলের দেখা মেলে। এরা মস্তিষ্কের মধ্যরেখা বরাবর থাকে।

কার্যকারিতার ভিত্তিতে সেরেব্রালকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়। এই ভাগগুলো হলো। অগ্রমস্তিষ্ক, মস্তিষ্কমূল এবং ব্যাসাল গ্যাঙ্গলিয়া।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

1 উত্তর
23 মে 2018 "জীব বিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Siddique (4,388 পয়েন্ট) 273 1554 1592
1 উত্তর
22 মে 2018 "জীব বিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Siddique (4,388 পয়েন্ট) 273 1554 1592
1 উত্তর
24 এপ্রিল 2018 "চিকিৎসা বিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন শামীম মাহমুদ (7,799 পয়েন্ট) 1015 2984 3067
2 টি উত্তর
24 এপ্রিল 2018 "চিকিৎসা বিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন শামীম মাহমুদ (7,799 পয়েন্ট) 1015 2984 3067

28,156 টি প্রশ্ন

29,682 টি উত্তর

3,147 টি মন্তব্য

3,930 জন সদস্য



আস্ক প্রশ্ন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে কমিউনিটির এই প্ল্যাটফর্মের সদস্যের মাধ্যমে আপনার প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান পেতে পারেন এবং আপনি অন্য জনের প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান দিতে পারবেন। মূলত এটি বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য।

  1. rjsiraz

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  2. Hasan১

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  3. তামিম আল আদনানী

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  4. Tarun

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  5. Rasel rana

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

শীর্ষ বিশেষ সদস্য

...