আস্ক প্রশ্নে আপনাকে স্বাগতম ! এটি একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। এই সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন ...
4,488 বার প্রদর্শিত
"ইতিহাস এবং ঐতিহ্য" বিভাগে করেছেন (4,388 পয়েন্ট) 273 1554 1592

2 উত্তর

1 টি পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন (525 পয়েন্ট) 5 8 41
পাক ভারত উপমহাদেশে রাজনৈতিক ভাবে ইংরেজ শাসন চূড়ান্ত ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় পলাশী যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের মধ্য দিয়ে। যে গোষ্ঠি এসেছিল এ দেশে ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে, তারা হত্যা করল নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে, প্রতিষ্ঠিত করল ভারতের বুকে ইংরেজ শাসন। পলাশীর যুদ্ধের পরাজয়ের অনেক গুলি কারণ ছিল , কিছু ছিল প্রত্যক্ষ কারণ আবার কিছু ছিল পরোক্ষ।   

পরোক্ষ কারণের প্রধান ছিল আলীবর্দী খানের প্রতি তাঁর নিকটাত্মীয়দের  ঈর্ষাপরায়নতা। আলীবর্দী খানের আসল নাম ছিল মির্জা মুহম্মদ আলী। তদানীন্তন বাংলার সুবাদার শুজাউদ্দৌলার দরবারে তিনি সামান্য সৈনিক হিসেবে যোগদান করেন । এই রাজদরবারে তিনি  তাঁর নিকটাত্মীয়দের চেয়ে অধিক প্রতিভা প্রদর্শন করায় কালক্রমে আত্মীয় ও অপরিচিত সকলেরই তিনি ঈর্ষার পাত্র হয়ে পড়েন। এই হিংসা আরও চরমে ওঠে তখন  , যখন তিনি তাঁর জন্য মুহম্মদ আলীবর্দী খাঁ উপাধি সহ একটি মসনব আনয়ন করেন। ঈর্সা পরায়ন ব্যক্তিদের পক্ষে এই সকল সহ্য করা অসম্ভব ছিল।   এই ঈর্ষাপরায়ণতা নবাব আলবির্দীর জীবদ্দশায় কোন প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়নি। এই ঈর্ষা পরায়ণতার শিকারে পরিণত হন আলীবর্দীর  উত্তরাধিকারী নবাব সিরাজউদ্দৌলা। 

অপুত্রক আলীবর্দী খানের দুই জামাতার মধ্যে একজন ছিলেন ঢাকার শাসনকর্তা, তারা আশা করেছিলেন  আলীবর্দী খানের মৃত্যুর পরে তারা মসনদের উত্তরাধিকারী হবেন। কিন্তু সিরাজকে উত্তরাধিকারী হিসেবে বেছে নেয়ার তাদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয় এবং তা  অবশেষে শত্রুতায় পরিণত হয়।  

নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রধান শত্রু ছিল তাঁর খালাত ভাই পূর্ণিয়ার নবাব শওকত জঙ্গ।  সিরাজউদ্দৌলার অপর শত্রু ছিল তাঁর খালা ঢাকার ভূতপূর্ব শাসনকর্তার বিধবা পতœী মেহেরুন নেসা। মেহেরুন নেসা ওরফে ঘসেটি বেগম ছিলেন অপুত্রক। তিনি সিরাজ উদ্দৌলার ছোট ভাই  ইকরামুদ্দৌলাকে লালন পালন করেন।  ঘসেটি বেগমের ইচ্ছা ছিল  নবাব আলীবর্দী খানের মৃত্যুর পরে ইকরামুদ্দৌলাকে মসনদে বসাবেন। কিন্তু ইকরামুদ্দৌলা অকালে মৃত্যু বরণ করেন।  ঘসেটি বেগম শওকত জঙ্গের প্রতি সহানুভুতিশীল হয়ে পড়েন। এক সময় ঘসেটি বেগম শওকত জঙ্গকে  সিরাজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।  

 সিরাজ উদ্দৌলার প্রধান শত্রু ছিলেন মীর জাফর আলী খান। তিনি আলীবর্দ্দী খানের বৈমাত্রেয় বোন  শাহখানমকে বিয়ে করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ পান। মীর জাফর আলী  খান ছিলেন অত্যন্ত লোভী ও অকৃতজ্ঞ।  তিনি প্রভু আলীবর্দী খানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে দ্বিধা বোধ করেননি। তার অভিলাষ ছিল আলীবর্দী খানকে হত্যা করে ক্ষমতার মসনদে আরোহন করা। কিন্তু তিনি সে  সুযোগ অর্জন করতে সক্ষম হননি। কিন্তু মীর জাফর নবাব সিরাজ উদ্দৌলার প্রধান সেনাপতি হয়ে নবাব সিরাজের প্রধান শত্রু হয়ে ওঠেন। ঘসেটি বেগম ও শওকত জঙ্গের সাথে যখন নবা সিরাজ উদ্দৌলা ব্যতিব্যস্ত তখন মীর জাফর ইংরেজ কোম্পানীর সাথে সিরাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন।  

নবাব সিরাজউদ্দৌলা খালা  ঘসেটি বেগমকে তার প্রাসাদ থেকে নিজ প্রাসাদ মনসুর গঞ্জে নিয়ে আসেন।  এসময় সিরাজ মীর জাফরকে প্রধান সেনাপতি থেকে সরিয়ে  মীর মদনকে ঐ পদে নিয়োাগ প্রদান করেন। পরে  তিনি অবশ্য  মীর জাফরকে প্রধান সেনাপতির দায়িত্ব প্রদান করেন। কিন্তু মীর জাফর মনে মনে নবাবের প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলেন।  

এ সময় মুর্শিদাবাদে সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ঘনিভূত হয়ে ওঠে।  সিরাজের প্রতি নাখোশ  জগৎশেঠ ,  রাজবল¬ভ , রায়দুর্লভ , ঊমিচাঁদ প্রমুখ সিরাজকে সিংহাসন চ্যুত করে তদস্থলে মীর জাফরকে অধিষ্ঠিত করার চক্রান্ত করেন।  মীরজাফর প্রথম দিকে এদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।  কিন্তু চক্রান্ত কারীরা ইয়ার লতীফকে সিংহাসনে বসানোর ষড়যন্ত্র করে।  তখন মীর জাফর নবাব পদ লাভের জন্য উঠে পড়ে লেগে যান। 

আলীবর্দী খানের হিন্দুদের প্রতি উদার নীতি সিরাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের বীজ বপনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।  নবাব আলীবর্দী খানের শাসনামলে হিন্দু কর্মকর্তাদের নিয়োগ বৃদ্ধি পায়। এ সময় যারা প্রধান ভূমিকা পালন করেন তাদের মধ্যে জানকী রাম , দুর্লভ রাম,  রাম নারায়ন , কিরাত চাঁদ, বিরু দত্ত, গোকুল চাঁদ , উমিচাঁদ রায় এবং রাম রাম সিংহের নাম উলে¬খযোগ্য। 

 সামরিক ও বেসামরিক উভয় ক্ষেত্রে হিন্দু কর্ম কর্তা অধিক সংখ্যায় নিয়োগ পান।  এ ভাবে আলীবর্দী খানের শাসনামলে হিন্দুরা সকল ক্ষেত্রে প্রতিপত্তিশালী হয়ে ওঠে।এর পরিণতি হয়েছিল অত্যন্ত অশুভ। 

নবাব সিরাজউদ্দৌলার শাসনামলে তারা ইংরেজদের  সাথে ষড়যন্ত্রে  লিপ্ত হয়ে বাংলার  মুসলিম রাজত্বের অবসানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।  সিরাজউদ্দৌলাও তাঁর নানার মতই হিন্দুদেরকে উচ্চপদে নিয়োগ দেন।  তিনি মোহনলাল নামক এক কাশ্মিরী  হিন্দুকে উচ্চপদে নিয়োগ দেন। মোহন লাল সিরাজের উপরে প্রভাব বিস্তার করে নবাবের প্রধান উজিরে পরিণত হন।  আর এ সব হিন্দুরাই নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন ত্বরান্বিত করে। 

সূত্রঃ পাক ভা রত ও ব্রিটিশ উপনিবেশ সমগ্র
0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন (1,193 পয়েন্ট) 6 154 172
পলাশীর যুদ্ধে নবাবের পরাজয়ের অনেক কারণ থাকলেও প্রধান কারণ ছিল , নবাবের প্রধান সেনাপতি মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতা । মীর জাফর যুদ্ধের সময় নবাবের সৈন্যদের ইংরেজদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করার হুকুম না করায় সৈন্যরা কেউই নবাবের পক্ষে অস্ত্র ধরেননি । নবাব তাদের অনেক বলা সত্ত্বেও তারা যুদ্ধ করেনি । কারণ , সৈন্যরা কেবল প্রধান সেনাপতির আদেশ মানতেই বাধ্য । মীর মদন ও মোহনলাল এবং নবাবের আরো কিছু শুভাকাঙ্ক্ষীরা নবাবের পক্ষে অস্ত্র ধরেছিল । কিন্তু ইংরেজদের বিশাল সৈন্যের সামনে তারাও বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেনি । মূলত , মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতাই ছিল বাংলার স্বাধীন সূর্য ২০০ বছর অস্তমিত করার জন্য প্রধান কারণ । তাই আজও বাংলার সবচেয়ে ঘৃণিত ব্যক্তি হলো মীর জাফর । তথ্যসূত্র : বাংলার ইতিহাস ।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

1 উত্তর
15 এপ্রিল 2018 "ইতিহাস এবং ঐতিহ্য" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন বিজ্ঞান (386 পয়েন্ট) 18 71 88
1 উত্তর
06 এপ্রিল 2018 "ইতিহাস এবং ঐতিহ্য" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন শামীম মাহমুদ (7,799 পয়েন্ট) 1015 2984 3067
0 টি উত্তর
08 জুন 2018 "ইতিহাস এবং ঐতিহ্য" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Siddique (4,388 পয়েন্ট) 273 1554 1592
1 উত্তর
07 জুন 2018 "ইতিহাস এবং ঐতিহ্য" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Siddique (4,388 পয়েন্ট) 273 1554 1592

28,156 টি প্রশ্ন

29,682 টি উত্তর

3,147 টি মন্তব্য

3,930 জন সদস্য



আস্ক প্রশ্ন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে কমিউনিটির এই প্ল্যাটফর্মের সদস্যের মাধ্যমে আপনার প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান পেতে পারেন এবং আপনি অন্য জনের প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান দিতে পারবেন। মূলত এটি বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য।

  1. rjsiraz

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  2. Hasan১

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  3. তামিম আল আদনানী

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  4. Tarun

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  5. Rasel rana

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

শীর্ষ বিশেষ সদস্য

...