নিম্নোক্ত পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করে ঐ সমস্ত মুসলমানকে রোযা রাখার প্রতি দাওয়াত দেয়া, রোজা রাখার প্রতি তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করা এবং এ মহান ইবাদত পালনে অবহেলা করা থেকে তাদেরকে সাবধান করা ওয়াজিব। ১। তাদেরকে অবহিত করা যে, রোজা একটি ফরজ ইবাদত, ইসলামে রোজার মর্যাদা অতি মহান, ইসলাম যে ভিত্তিগুলোর উপর নির্মিত রোজা সেগুলোর অন্যতম। ২। রোজা পালনের মহান প্রতিদান তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয়া। যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ( ﻣَﻦْ ﺻَﺎﻡَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺇِﻳﻤَﺎﻧًﺎ ﻭَﺍﺣْﺘِﺴَﺎﺑًﺎ ﻏُﻔِﺮَ ﻟَﻪُ ﻣَﺎ ﺗَﻘَﺪَّﻡَ ﻣِﻦْ ﺫَﻧْﺒِﻪِ ) ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ( 38 ) ﻭﻣﺴﻠﻢ ( 760 ) “যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় রমজান মাসে রোজা পালন করবে তাঁর পূর্বের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।”[আল-বুখারী (৩৮) ও মুসলিম (৭৬০)] তিনি আরো বলেছেন: ﻣَﻦْ ﺁﻣَﻦَ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺑِﺮَﺳُﻮﻟِﻪِ ﻭَﺃَﻗَﺎﻡَ ﺍﻟﺼَّﻼﺓَ ﻭَﺻَﺎﻡَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﻛَﺎﻥَ ﺣَﻘًّﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺃَﻥْ ﻳُﺪْﺧِﻠَﻪُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ، ﺟَﺎﻫَﺪَ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺃَﻭْ ﺟَﻠَﺲَ ﻓِﻲ ﺃَﺭْﺿِﻪِ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﻭُﻟِﺪَ ﻓِﻴﻬَﺎ . ﻓَﻘَﺎﻟُﻮﺍ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ، ﺃَﻓَﻼ ﻧُﺒَﺸِّﺮُ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﺇِﻥَّ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ ﻣِﺎﺋَﺔَ ﺩَﺭَﺟَﺔٍ ﺃَﻋَﺪَّﻫَﺎ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟِﻠْﻤُﺠَﺎﻫِﺪِﻳﻦَ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ، ﻣَﺎ ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﺪَّﺭَﺟَﺘَﻴْﻦِ ﻛَﻤَﺎ ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀِ ﻭَﺍﻷَﺭْﺽِ ، ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺳَﺄَﻟْﺘُﻢُ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻓَﺎﺳْﺄَﻟُﻮﻩُ ﺍﻟْﻔِﺮْﺩَﻭْﺱَ ، ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﺃَﻭْﺳَﻂُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ ، ﻭَﺃَﻋْﻠَﻰ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ ، ﻭﻓَﻮْﻗَﻪُ ﻋَﺮْﺵُ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ، ﻭَﻣِﻨْﻪُ ﺗَﻔَﺠَّﺮُ ﺃَﻧْﻬَﺎﺭُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ ) ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ( 7423 “যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনে, সালাত কায়েম করে, রমজানের রোজা পালন করে আল্লাহর উপর তার এই অধিকার এসে যায় যে, তিনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন; সে আল্লাহর পথে জিহাদ করুক কিংবা তার জন্মস্থান থেকে বের না হোক। সাহাবায়ে কেরাম বললেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমরা কি মানুষকে এ সুসংবাদ দিব না? তিনি বললেন: নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা জান্নাতের ১০০টি স্তর আল্লাহর পথে জিহাদকারীদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন। দুই স্তরের মধ্যে ব্যবধান হল আসমান ও যমীনের ব্যবধানের ন্যায়। আপনারা যখন আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবেন তখন জান্নাতুল ফেরদাউস চাইবেন। ফেরদাউস হচ্ছে- সর্বোত্তম জান্নাত ও সুউচ্চ জান্নাত। এর উপরে হচ্ছে- আর-রহমানের (পরম দয়ালুর) আরশ। সেখান থেকে জান্নাতের নহরগুলো প্রবাহিত হয়।”[সহিহ বুখারী (৭৪২৩)] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন: ﺍﻟﺼَّﻮْﻡُ ﻟِﻲ ﻭَﺃَﻧَﺎ ﺃَﺟْﺰِﻱ ﺑِﻪِ ، ﻳَﺪَﻉُ ﺷَﻬْﻮَﺗَﻪُ ﻭَﺃَﻛْﻠَﻪُ ﻭَﺷُﺮْﺑَﻪُ ﻣِﻦْ ﺃَﺟْﻠِﻲ . ﻭَﺍﻟﺼَّﻮْﻡُ ﺟُﻨَّﺔٌ ، ﻭَﻟِﻠﺼَّﺎﺋِﻢِ ﻓَﺮْﺣَﺘَﺎﻥِ ، ﻓَﺮْﺣَﺔٌ ﺣِﻴﻦَ ﻳُﻔْﻄِﺮُ ، ﻭَﻓَﺮْﺣَﺔٌ ﺣِﻴﻦَ ﻳَﻠْﻘَﻰ ﺭَﺑَّﻪُ، ﻭَﻟَﺨُﻠُﻮﻑُ ﻓَﻢِ ﺍﻟﺼَّﺎﺋِﻢِ ﺃَﻃْﻴَﺐُ ﻋِﻨْﺪَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻣِﻦْ ﺭِﻳﺢِ ﺍﻟْﻤِﺴْﻚِ ) ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ( 7492 ) ﻭﻣﺴﻠﻢ ( 1151 ) “আল্লাহ তাআলা বলেন: রোজা আমার-ই জন্য, আমিই এর প্রতিদান দিব। রোজাদার আমার জন্য যৌন চাহিদা ও পানাহার ত্যাগ করে। রোজা হচ্ছে- ঢালস্বরূপ। রোজাদারের জন্য দু’টি খুশি রয়েছে। একটি ইফতারের সময়। অন্যটি যখন সে তার রবের সাথে সাক্ষাত করবে। নিশ্চয় রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহ্র নিকট মিসকের সুবাসের চেয়েও সুগন্ধিময়।”[সহিহ বুখারী (৭৪৯২) ও সহিহ মুসলিম (১১৫১)] ৩। রোজা না-রাখার ভয়াবহতা সম্পর্কে তাদেরকে ভয় প্রদর্শন করা। পরিষ্কার ধারণা দেয়া যে, রোজা না-রাখা কবিরা গুনাহ। ৪। রোজা পালন করা যে সহজ, এতে যে কি আনন্দ, খুশি, তুষ্টি, মনের প্রশান্তি ও অন্তরের স্বস্তি রয়েছে তা বর্ণনা করা। কুরআন তেলাওয়াত ও কিয়ামুল লাইলের মাধ্যমে দিবানিশি ইবাদতে মশগুল থাকার যে মজা তা তুলে ধরা। ৫। রোজা, রোজার গুরুত্ব ও রোজার মাসে একজন মুসলিমের করণীয় বিষয়ক কিছু আলোচনা শুনার উপদেশ দেয়া এবং এ বিষয়ক কিছু লিফলেট পড়তে দেয়া। ৬। কোমল ভাষা ও উত্তম কথা দিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে তাদেরকে দাওয়াত দিয়ে যাওয়া ও নসীহত করা। সাথে সাথে তাদের হেদায়াত ও মাগফিরাতের জন্য দোয়া করতে থাকা।
আ ক ম আজাদ আস্ক প্রশ্ন ডটকমের সাথে আছেন সমন্বয়ক হিসাবে। বর্তমানে তিনি একজন শিক্ষক। আস্ক প্রশ্ন ডটকমকে বাছাই করে নিয়েছেন জ্ঞান আহরণ ও জ্ঞান বিতরণের মাধ্যম হিসাবে। ভবিষ্যতে একজন বক্তা ও লেখক হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছেন। এই আশা পূর্ণতা পেতে সকলের নিকট দু'আপার্থী।