যেভাবে পারফিউম তৈরি করা হয়:
উৎপাদন প্রক্রিয়া
উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরুর প্রথমে, উৎপাদনের প্রাথমিক উপাদানগুলো উৎপাদন কেন্দ্রে আনতে হয়। সঠিক সুবাসের জন্য সারা বিশ্ব থেকে উদ্ভিদের প্রয়োজনীয় পদার্থগুলো সযত্মে সংগ্রহ করা হয় আর প্রাণীর থেকে আহোরিত পন্য সরাসরি প্রাণীর চর্বিজাতীয় পদার্থ আহরণের দ্বারা প্রাপ্ত করা হয়। বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থের মিশ্রণে অ্যারোমেটিক সিন্থেটিক পারফিউম গবেষণাগারে সুগন্ধি রসায়নবিদ দ্বারা তৈরি করা হয়।
আহরণ পদ্ধতি
ফুল এবং গাছ থেকে বিভিন্ন ধরণের তেল নিষ্কৃত হয়, যা পারফিউম তৈরির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। গাছ থেকে তেল আহরন করে নিতে হয়। এটি করার জন্য বিভিন্ন ধরণের পদ্ধতি আছে। সবথেকে সহজ পদ্ধতি হচ্ছে গাছটিকে নিংড়ে তার থেকে তেল বের করে নেওয়া। Enfleurage এবং maceration হচ্ছে অন্য পদ্ধতি যার মাধ্যমেও তেল আহরন করা হয় গাছ থেকে। এই পদ্ধতিতে গ্রীজ অথবা গরম চর্বি ব্যবহার করে তেল আহরন করা হয়। গাছটিকে সিদ্ধ করেও তেল আহরন করা যায়। এই পদ্ধতিটিকে বলা হয় Steam Distillation. কিছু কিছু উৎপাদক Solvent Extraction পদ্ধতি ব্যবহার করে তেল আহরন করার জন্য। এই পদ্ধতিতে Benzene এবং Ethyl Alchohol মিশিয়ে গাছটিকে ভিজিয়ে রাখা হয়। পরবর্তীতে এটিকে পুড়িয়ে তেল আহরন করার হয়। যদি কখনো মনে করেন কেন পারফিউমের এত দাম, তাহলে জেনে রাখবেন, একটি ১৫ মিলি ফ্রেঞ্চ পারফিউমের বোতল তৈরিতে ৬৬০ টি গোলাপ ফুল লাগে শুধুমাত্র তেল আহরনের জন্য।
মান নিয়ন্ত্রণ
পারফিউম উৎপাদন অনেকবেশি ঝুঁকিপুর্ন কারন উদ্ভিদ পদার্থের যথাযথ ফলন এবং প্রানী পন্যের সহজলভ্যতার উপর পারফিউমের গুনাগুন ব্যাপকভাবে নির্ভর করে। এক পাউন্ড ফুলের তেলের জন্য হাজারো ফুলের প্রয়োজন হয় এবং যদি ফুল মৌসুমি ফসল রোগ এবং প্রতিকূল আবাহাওয়া দ্বারা আক্রান্ত হয় তাইলে সুগন্ধির যথাযথ গুনাগুন বাধাগ্রস্থ হয়। উপরন্ত প্রাকৃতিক তেলের যথাযথ গুনাগুন বজায় রাখা কঠিন হয়।
এই সমস্যা ছাড়াও প্রাকৃতিক পশু তেল সংগ্রহ করতেও নানান ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয়। অনেক প্রানী হত্যা/শিকার করা ছাড়া ওদের থেকে থেকে প্রয়োজনীয় পদার্থ আহরন করা যায় না, আবার অনেক প্রানী হত্যা/শিকার করা বে-আইনি। আবার অনেক প্রানী পন্য আহরন করতে হয় নানান দেশ থেকে, যেমনঃ তিব্বত ও চীন পাওয়া হরিণ থেকে আসতে হবে হরিণের কস্তুরী; সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে beavers; ইথিওপিয়া থেকে গন্ধগোকুল বিড়াল।
ভবিষ্যৎ
বর্তমানে পারফিউম তৈরি আগের থেকে অনেক বেশী সহজতর হয়েছে। বর্তমানে পারফিউমে প্রাকৃতিক তেলের বদলে কৃত্রিম রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয় এবং আগের থেকে অনেক কম ঘনত্তে বাজারজাত করা হচ্ছে এবং স্থায়িত্ব ও আগের থেকে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
অ্যারোমাথেরাপি মত, বিভিন্ন গবেষণায় সুগন্ধির ব্যবহার অনেক বেড়েছে। শরীরের গন্ধ এবং সুগন্ধির গন্ধের সমন্বয়ে অন্যকে আকর্ষণ করার জন্য ব্যবহৃত হয়। মানুষ, অন্যান্য স্তন্যপায়ী মত মস্তিষ্কে pheromones এর release বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট করতে উদ্বুদ্ধ করে। আর পারফিউমে pheromones প্রভাব ডুপ্লিকেট করে এমন পদার্থ ব্যবহার করা হচ্ছে যাতে মানুষের মধ্যে যৌন উত্তেজনার রিসেপ্টর উদ্দীপিত হয়। পারফিউমের মাধম্যে শরীরের খারাপ গন্ধ ধামাচাপা দিতে পারে, শারীরিক ও মানসিক মঙ্গল সেইসাথে তাদের যৌনজীবন উন্নতি করতে পারে।