আস্ক প্রশ্নে আপনাকে স্বাগতম ! এটি একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। এই সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন ...
429 বার প্রদর্শিত
"যৌন" বিভাগে করেছেন অজ্ঞাতকুলশীল

1 উত্তর

0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন (2,723 পয়েন্ট) 97 693 745

কারণঃ


কোন অসুখ প্রতিরোধ ও প্রতিকারের আগে আমাদের জানতে হবে অসুখটার কারণ কি? কেনোনা কারণ জানলে অসুখ মোকাবেলা সহজ হয়। যোনিতে অনেক কারণে চুলকানি হতে পারে। তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য কারণসমূহ হলো –


০১. ঈস্ট বা ছত্রাকের আক্রমনঃ


এটি যৌনাঙ্গের চুলকানি বা ইচিং হওয়ার অন্যতম কারণ। সাধারণত Candida Albicans, এই ছত্রাকের কারণে যোনিতে চুলকানি হয়। এই ছত্রাক নরমালি মেয়েদের যৌনাঙ্গে পরজীবী হিসেবে থাকে। কিছু ল্যাকলোব্যাসিলাস নামে উপকারী ব্যাকটেরিয়া এই ছত্রাকের বংশবিস্তারকে নিয়ন্ত্রণে রাখে।  কিন্তু এন্টিবায়োটিক খেলে, গর্ভাবস্থায়, দুশ্চিন্তাগ্রস্থ থাকলে, হরমোনাল ইমব্যালেন্স থাকলে ও খাদ্যাভাসের কারণে এই উপকারী ব্যাকটেরিয়া মরে যায়, ফলে ঈস্টগুলো তাদের জন্মের জন্য অনুকূল পরিবেশ পায়। এর কারণে যোনিতে ইনফেকশন হয়।


উপসর্গ :


– যোনি পথ দিয়ে ঘন, সাদা তরলের নির্গমন হয়।


– চুলকানি, ব্যথা ও প্রদাহ হয়।


– যৌন মিলনের সময় ব্যথ্যা হয়।


০২.ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিসের সংক্রমণঃ


এটি ভ্যাজাইনা বা যোনিতে চুলকানি হওয়ার অন্যতম কারণ। যোনিতে নরমালি কিছু ব্যাকটেরিয়া থাকে। যখন কোন কারণে এই ব্যাকটেরিয়া গুলোর অনেক বেশি বংশবিস্তার ঘটে তখন যোনিতে ইনফেকশন হয়।


উপসর্গঃ


– গন্ধযুক্ত ও মাছের আশঁটে গন্ধযুক্ত তরল নির্গত হয় যোনি দিয়ে।


– চুলকানি হয় প্রচুর।


– প্রসাবের সময় জ্বালাপোড়া হওয়া।


০৩.ট্রাইকোমোনিয়াসিস এর আক্রমণঃ


এটি একটি প্যারাসাইট। এটির আক্রমণে যোনিতে চুলকানি হয়।


উপসর্গ :


– হলুদ, সবুজ রঙের ও খুব তীব্র বাজে দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব হয়।


– তলপেটে ব্যথ্যা হয়।


– যোনিতে চুলকানি হয়।


০৪. এছাড়াও যৌনাঙ্গে উকুন, খোসপাচড়া ও মাইকোপ্লাজমা জেনেটালিয়াম এর সংক্রমণ হলে যোনিতে চুলকানি হয়।


০৫. কিছু সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ যেমন – সিফিলিস, গনোরিয়া, এইডস ইত্যাদির কারণে যৌনাঙ্গে ইচিং বা চুলকানি হতে পারে।


০৬. বিভিন্ন বিরক্তিকর পদার্থ যেমন – বিভিন্ন ডিটারজেন্ট, কেমিক্যাল, সুগন্ধিযুক্ত সাবান, রঙ ওয়ালা টিশ্যু পেপার, ফেমিনিন হাইজেনিক স্প্রে, ডুশ ব্যবহার করলে যোনিতে চুলকানি হতে পারে।


০৭. মেনোপোজের পর মহিলাদের ইস্ট্রোজেন নামক হরমোন কমে যায়। ফলে যোনি শুকিয়ে যায়। এর ফলে বিভিন্ন পরজীবীর সংক্রমণ হয়। ফলে যোনিতে ইচিং হয় ।


০৮. ডায়াবেটিস, রেনাল ডিজিজ, একজিমা ও রক্তে কোন রোগ থাকলে ও অন্যান্য কোন রোগ থাকলেও যৌনাঙ্গে চুলকানি হয়।


০৯. মাসিকের সময় , অস্বাস্থ্যকর প্যাড ও কাপড় ব্যবহার করলে।


১০.যৌনকর্মীদের এই রোগগুলো বেশি হয়। তাই অবাধ যৌন আচরণের কারণে হয়ে থাকে।


১১.যৌনাঙ্গ সবসময় গরম ও আর্দ্র রাখলে।


১২.অপরিষ্কার থাকলে।


প্রতিকার :


০১. ছত্রাকের সংক্রমণ হলে, এন্টিফাংগাল ওষুধ যেমন – ketoconazole, miconazole, clotrimazole, tioconazole, fluconazole ইত্যাদি ওষুধ খেতে হয় ৩ থেকে ৫ দিন। তবে কিছু ওষুধ একদিনেও কাজ করে। তাই ডোজ ও কতদিন খাবেন তা জানতে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এছাড়া lactobacillus acidophilus ট্যাবলেট খাওয়া যেতে পারে এর সাথে।


০২. ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে এন্টিব্যায়োটিক ড্রাগস খেতে হয়। যে এন্টিবায়োটিকই খান না কেন তা কমপক্ষে ৫ থেকে ৭ দিন খাবেন।


০৩. প্যারাসাইটের সংক্রমণ হলে Metronidazole খেতে পারেন। এছাড়াও vaginal clindamycin cream (clencin) or tinidazole এইগুলো যোনিতে লাগাতে হয়।


০৪. বেশি চুলকানি হলে Lidocaine নামক জেল আক্রান্ত স্থানে লাগাতে পারেন। এতে সাময়িক আরাম হবে। কিন্তু পুরা সেরে যাবেনা। তাই ডাক্তারকে দেখাবেন।


০৫. চুলকানি কমানোর জন্য এন্টিহিস্টামিন যেমন – fexofenadine, loratadine খেতে পারেন।


০৬. এছাড়া প্রদাহ কমাতে steroid cream ব্যবহার করা যেতে পারে।


০৭. মেনোপোজের পর চুলকানি হলে ইস্ট্রোজেন সাপোজেটরি যোনিপথে ব্যবহার করা যেতে পারে।


প্রতিরোধঃ


বলা হয়ে থাকে যে কোন অসুখ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ করাই বেশি ভাল। সুতরাং এই রোগটি যাতে আপনার না হয় তাই আগেই সাবধান থাকুন ও নিচের কথাগুলো মেনে চলুন।


০১. রঙীন ও বেশি সুগন্ধিযুক্ত টয়লেট টিশ্যু ও সাবান যৌনাঙ্গে ব্যবহার করবেন না।


০২. ফেমিনিন হাইজিন স্প্রে ও ডুশ ব্যবহার করবেন না।


০৩. ভেজা কাপড় পরে বেশিক্ষণ থাকবেন না। গোসল বা ব্যায়ামের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভেজা কাপড়টি পাল্টে নিবেন। যারা সুইমিং পুলে সাঁতার কাটেন তাদের ক্লোরিনের কারণেও ইচিং হতে পারে , তাই সাবধান হন।


০৪. আপনার যৌনাঙ্গ পরিষ্কার রাখুন সবসময়। আর প্রসাব বা পায়খানা করার সময় হাত দিয়ে সামনে থেকে পেছনে এই নিয়মে পরিষ্কার করতে হবে। খেয়াল রাখবেন পায়খানার রাস্তার জীবাণু যেন যোনিতে না লাগে।


০৫. দই খান, এতে ল্যাকটোব্যাসিলাস নামক উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে।


০৬. সুতির কাপড় দিয়ে তৈরি অন্তর্বাস বা পেন্টি পরুন। সিনথেটিক পেন্টি পরবেন না।


০৭. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন।


০৮. ওজন কমান।


০৯. সহবাসের সময় কনডম ব্যবহার করুন।


১০. যোনি আর্দ্র ও ভেজা রাখবেন না।


১১. মাসিকের সময় নোংরা কাপড় ব্যবহার করবেন না। পরিষ্কার প্যাড ব্যবহার করুন।


১২. সহবাসের পর যৌনাঙ্গ ভাল ভাবে পরিষ্কার করুন। ধুয়ে ফেলুন।


১৩. সহবাসের পর প্রসাব করুন।


১৪. একাধিক ব্যক্তির সাথে যৌন সহবাস পরিত্যাগ করুন।


১৫. নিয়মিত গোসল করুন।


এই অসুখটি হলে অবশ্যই একজন গাইনোকোলজিস্ট বা একজন ডার্মাটোলজিস্ট বা চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যান। অবহেলা করবেন না বা লজ্জা পাবেন না। কারণ এর ফলে পরবর্তীতে আরও খারাপ কিছু হতে পারে।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

1 উত্তর
18 ডিসেম্বর 2017 "পড়াশোনা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন অজ্ঞাতকুলশীল
1 উত্তর
12 সেপ্টেম্বর 2019 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন কামরুল হাসান ফরহাদ (5,894 পয়েন্ট) 387 2015 2190
1 উত্তর
20 জুলাই 2018 "যৌন" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন অজ্ঞাতকুলশীল
1 উত্তর

28,156 টি প্রশ্ন

29,682 টি উত্তর

3,147 টি মন্তব্য

3,930 জন সদস্য



আস্ক প্রশ্ন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে কমিউনিটির এই প্ল্যাটফর্মের সদস্যের মাধ্যমে আপনার প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান পেতে পারেন এবং আপনি অন্য জনের প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান দিতে পারবেন। মূলত এটি বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য।

  1. rjsiraz

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  2. Hasan১

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  3. তামিম আল আদনানী

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  4. Tarun

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  5. Rasel rana

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

শীর্ষ বিশেষ সদস্য

...