আস্ক প্রশ্নে আপনাকে স্বাগতম ! এটি একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। এই সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন ...
205 বার প্রদর্শিত
"প্রেম-ভালোবাসা" বিভাগে করেছেন (187 পয়েন্ট) 13 77 80

1 উত্তর

0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন (1,496 পয়েন্ট) 14 32 43


জটিল এই মানব জীবনে মানুষকে নানান চড়াই-উতরাই পার করতে হয়। ক্ষুদ্র এই জীবন সময়ে সবাই হন্য হয়ে সুখের পেছনে ছুটে বেড়ায়। সেই সুখ কখনো কারো জীবনে ধরা দেয় আবার কখনো সেই সুখ হয়ে যায় মরীচিকার মতো। সুখকে কখনো কোনো কিছুর দ্বারা পরিমাপ করা যায় না আবার তা বিনিময়যোগ্যও নয়। মানুষ যেমন তার কর্মফলের মাধ্যমে দুঃখকে ডেকে নিতে পারে তেমনি সুখকেও করে নিতে পারে নিজের জীবনের সঙ্গী হিসেবে। অর্থ্যাৎ মানুষ নিজেই তার জীবনে সুখকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে শুধুমাত্র তার কর্মকাণ্ডের উপর ভিত্তি করে। আপনই যদি আপনার জীবনের ক্ষতির দিকগুলো বাদ দিয়ে ভালোর দিকগুলো নিয়ে চর্চা করতে পারেন, তবেই সুখের দেখা পাবেন।

এমনই কয়েকটি অভ্যাস তুলে ধরছি যা আপনার জীবনে সুখ বয়ে আনবেঃ

১. সুখী থাকার সিদ্ধান্ত নিন

সুখ কখনো আপনা-আপনি চলে আসে না। অবশ্যই আপনাকে সুখী হওয়ার প্রত্যাশী হতে হবে এবং সেই মোতাবেক আপনাকে কাজ চালিয়ে যেতে হবে। আপনাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে প্রতিদিন আপনি এমন কিছু করবেন যার ফলে আপনি সুখী থাকতে পারবেন। আপনার জীবন এবং আপানার প্রতি পার্থিব ও স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। আপনার সম্পর্কে কোন প্রকারের দ্বিধান্বিত হওয়া যাবে না। আপনার সম্পর্কে আপনার পজিটিভ ধারণা আপনাকে সুখী করে তুলতে অনন্য ভূমিকা পালন করবে। আপনার প্রতিটি দিনকে আপনার শ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করুন দেখবেন দুঃখ আপনাকে স্পর্শ করতে পারছে না। 

২. দুশ্চিন্তামুক্ত থাকুন

দুশ্চিন্তা কখনই আপনার কোনো সমস্যার সমাধান হতে পারে না। এটা আপনাকে সমাধানের উপায় বের করতে ব্যাঘাত ঘটায়। সবচেয়ে বড় কথা হল দুশ্চিন্তা আপনাকে উদ্বিগ্ন করে তোলে এবং আপনার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় এমন তথ্য এসেছে যে, দুশ্চিন্তার কারণে মানুষের উচ্চ রক্তচাপের সৃষ্টি হয়। তাই সুস্থ ও সুখী জীবন-যাপন করতে হলে উদ্বিগ্ন ও চিন্তামুক্ত থাকতে হবে। 

৩. নেতিবাচক ধারণা থেকে বেরিয়ে আসুন

নেতিবাচক ধারণা আপনার চিন্তাধারাতে অন্যদের থেকে পিছিয়ে রাখে। এই ধারণা আপনার জীবন-যাপনের উপর নেতিবাচক ছাপ রাখে। যার ফলে আপনি সমাজে বিশিষ্টজন হিসাবে আত্মপ্রকাশ করতে পারেন না। আর সেটা হয়ে দাঁড়ায় আপনার জীবনে অশান্তির কারন। আন্যদের উপর নেতিবাচক ধারণা রাখা কিংবা পরনিন্দা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আপনার মন কলুষ মুক্ত থাকবে এবং আপনি সুখী থাকতে পারবেন।

৪. কৃতজ্ঞ থাকুন

আপনার নিজ জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে হবে। সেই সাথে সৃষ্টিকর্তা ও আপনার শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে হবে। নিজ জীবন ও আপনার বর্তমান অবস্থান নিয়ে খুশি থাকতে হবে। অহেতুক ভাগ্যকে দোষারোপ করা উচিত নয়। বাস্তবতায় বিশ্বাসী হয়ে বেঁচে থাকতে হবে। এমন অনেক লোক রয়েছেন যারা নিজ জীবনের প্রতি সন্তুষ্ট না থাকতে পেরে হতাশগ্রস্থ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল। তাই আপনার নিজ জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা জরুরী। সেইসাথে আপনার ধর্ম ও সৃষ্টিকর্তার প্রতি অনুগত থাকতে হবে। ধর্মীয় আনুগত্য আপনার মনকে পরিশুদ্ধ করে।পরিশুদ্ধ মন আপনার জীবনে শান্তি বৃদ্ধি করে।

৫. ক্ষমাশীল মনোভাব তৈরি করুন

জীবন পথে চলতে গিয়ে অনেক জনের সাথে বিভেদ বা বিদ্বেষমূলক পরিস্থিতির স্বীকার হতে হয়। এই পরিস্থিতিগুলো আপনাকে অস্থিতিশীল করে তোলে। যা আপনার জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আপনার জীবনে অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু ক্ষমাপরায়নতা আপনার জীবনে প্রশান্তি বয়ে আনে। আন্যের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করুন, দেখবেন সমাজের সকলের সাথে আপনার ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতি বেড়ে উঠেছে। আপনি অনেকের প্রিয় হয়ে উঠেছেন। সমাজে আপনি সম্মানিত হচ্ছেন। তখন আপনার জীবনে সুখ ও প্রশান্তি বৃদ্ধি পাবে।

৬. অধিক অর্থ কখনই সুখ বয়ে আনে না

পৃথিবীতে ভালোভাব বেঁচে থাকতে হলে আর্থের কোনো বিকল্প নেই। সমাজে ধনী-গরিবের যে শ্রেণিবিভাগ তা অর্থের দ্বারা পরিমাপ করা হয়। অর্থের দ্বারাই সমাজে আপনই মূল্যায়িত হবেন। কিন্তু মনে রাখবেন অধিক পরিমাণ অর্থ-সম্পদ কখনই সুখের কারণ হতে পারে না। বারং তাতে অশান্তি বেড়ে যায়। আপনি অর্থের পেছনে বেশি সময় দিলে জীবন থেকে অনেক মূল্যবান সময় হারিয়ে ফেলবেন। আপনার প্রকৃত জীবন থেকে বিচ্যুত হয়ে যাবেন। যা আপনার জীবনে বড় একটি ক্ষতির কারণ। তাই জীবনের জন্য প্রয়োজনের বেশি অর্থের সন্ধানে ছুটবেন না। দেখবেন, পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে বসবাস করতে পারবেন। 

৭. বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব গড়ে তুলুন

আপনার জীবনের প্রকৃত বন্ধুরা আপনার হাসি আনন্দের সঙ্গী হয়ে থাকে। নিঃসঙ্গতা কখনো আপনার জীবনে সুখ বয়ে আনতে পারে না। মানুষ কখনই এই পৃথিবীতে একা বাস করতে পারে না। একঘেয়েমিতা আপনাকে গ্রাস করে দেয়। বন্ধুমহল মানুষের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠজন হয়ে থাকে। তাঁরা আপনার সুখে-দুঃখে কিংবা কঠিন সময়ে সঙ্গ দিতে পারবে। এছারা আপনার নানান দুঃখ, আনন্দ বন্ধুদের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে পারবেন। অর্থাৎ ভালো বন্ধু আপনার জীবনে আশীর্বাদ হয়ে আসে। তাই নিঃসঙ্গতা ঝেড়ে ফেলে ভালো বন্ধু তৈরি করুন। দেখবেন জীবনের নানান রকম স্মৃতি তাদের সাথে সংযোজন হয়ে গেছে। যা আপনার জীবনে বাড়তি প্রাপ্তির ঘটায়। আর এই প্রাপ্তি আপনার জীবনে প্রশান্তি বয়ে আনে।

৮. অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা করবেন না

আপনার নিজের স্বকীয়তা থাকা থাকা আবশ্যক। মনে রাখবেন আপনি নিজের মাঝে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ও চরিত্র বহন করেন। আপনার নিজের অবস্থানের বা বৈশিষ্ট্যের সাথে অন্যের তুলনা করবেন না। এতে আপনার মাঝে হীনমন্যতার সৃষ্টি হয় এবং আপনি হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েন। বরং আপনার প্রয়োজন নিজের সাথে নিজের তুলনা করা। অর্থাৎ উন্নতি করতে চাইলে আপনি নিজেই নিজের সাথে প্রতিযোগীতা সৃষ্টি করুন। প্রতিজ্ঞ হন প্রতিনিয়ত নিজেকে হারিয়ে দেবার জন্য। এভাবে ঘটাতে থাকলে দেখবেন একদিন সবাইকে ছাপিয়ে আপনি সেরার কাতারে আবিষ্কার করে ফেলেছেন। আপনি নিজেই নিজের সাথে প্রতিযোগীতা সৃষ্টি করলে হীনমন্যতার তৈরি হবে না। যা অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা করলে নিজেকে অসুখী করার সম্ভাবনা তৈরি হয়। তাই নিজেকে নিজের মতো করে আবির্ভাব করুন এবং জীবনে সুখী হোন। 

৯.পরোপকারী হোন

নিজের মাঝে সহানুভূতির সঞ্চার করুন। অন্যকে সাহায্য করার জন্য উদ্যমী হোন। পরোপকারী কার্যকলাপ আপনার জীবনে প্রশান্তি বয়ে আনে। পরের ওপর নিজের মনের উগ্রতাকে দমিয়ে রাখে এবং আপনার মনে নির্মল প্রশান্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। আপনি পরোপকারী হলে অন্যের সাথে দূরত্ব কমে যাবে। মানুষের ওপর ক্ষোভ কিংবা রাগের দমন ঘটবে। দার্শনিক এমারসন বলেছিলেন, “এক মিনিটের রাগ আপনার জীবন থেকে ষাট সেকেন্ডের সুখকে কেড়ে নেয়।” অর্থাৎ রাগ আপনার জীবনের জন্য বড়ই ক্ষতিকর। তাই পরোপকারী হোন যা আপনার জীবনের পরোক্ষ সুখের জন্য সহায় হবে। 

১০. ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লক্ষ্য নির্ধারণ করুন

আপনার জীবনের একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকা চাই-ই-চাই। তা না হলে আপনার জীবন অর্থহীন হয়ে পড়বে। আপনি আপনার দৈনন্দিন কাজ যেগুলো নিজের এবং পরের উপকারী সেগুলোকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাগে ভাগ করে নিয়ে লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে থাকুন। ধরুন আপনি শীত ঋতুতে নিজ উদ্যোগে শীতবস্ত্র সংগ্রহ করে তা বিতরণ করার মনোস্থ করলেন। কিংবা বাড়ির কাজে আপনার মা’কে আজ সাহায্য করবেন। যখন আপনি এই লক্ষ্যগুলো অর্জন করতে পারবেন দেখবেন তখন আপনি আত্মতৃপ্ত হচ্ছেন। আর এই আত্মতৃপ্তি আপনার সুখকে বাড়িয়ে তোলে। 

তাই জীবনে শান্তি, আনন্দ কিংবা সুখকে বাড়িয়ে তুলতে আপনার অভ্যাসে পরিবর্তন এনে প্রতিনিয়ত চর্চা করতে থাকুন। দেখবেন অনাবিল সুখ আর আনন্দে আপনার জীবন পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

2 টি উত্তর
23 মার্চ 2018 "লাইফ স্টাইল" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Mehedi Hasan (3,352 পয়েন্ট) 94 549 631
10 টি উত্তর
29 মার্চ 2018 "সাধারণ জ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন আব্দুল করিম (44 পয়েন্ট) 1 6 6
3 টি উত্তর
29 মার্চ 2018 "সাধারণ জ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন আব্দুল করিম (44 পয়েন্ট) 1 6 6
2 টি উত্তর
22 মার্চ 2018 "সাধারণ জ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন অচেনা পথিক (52 পয়েন্ট) 42 272 277
2 টি উত্তর
22 মার্চ 2018 "প্রেম-ভালোবাসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন অচেনা পথিক (52 পয়েন্ট) 42 272 277

28,156 টি প্রশ্ন

29,682 টি উত্তর

3,147 টি মন্তব্য

3,920 জন সদস্য



আস্ক প্রশ্ন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে কমিউনিটির এই প্ল্যাটফর্মের সদস্যের মাধ্যমে আপনার প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান পেতে পারেন এবং আপনি অন্য জনের প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান দিতে পারবেন। মূলত এটি বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য।

  1. Jahidul ISLAM

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  2. ratna

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  3. আবু উবাইদাহ

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  4. Apon

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  5. সালেহ

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

শীর্ষ বিশেষ সদস্য

...