অতিবেগুনী রশ্মির তরংদৈর্ঘ্য দৃশ্যমান আলোর তরংদৈর্ঘ্যের চেয়ে কম।আমরা জানি,আলো হচ্ছে ফোটন কণার প্রবাহ এবং এর শক্তির সমীকরণটি হচ্ছে,
E=hf=h.c/ λ
যেখানে, E=ফোটন কণিকার শক্তি
h=প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবক
c=আলোর বেগ, f=কম্পাঙ্ক এবং λ= তরঙ্গদৈর্ঘ্য
দেখা যাচ্ছে যে তরংদৈর্ঘ্য যত কমবে আলোর শক্তি ততই বেড়ে যাবে।দৃশ্যমান আলোর চেয়ে অতিবেগুনী রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম তাই তার শক্তি বেশি।আবার এক্স রে এবং গামা রে এর তরঙ্গদৈর্ঘ্য আরো কম তাই তাদের শক্তি আরো বেশি।
অতিবেগুনী রশ্মি বা আল্ট্রাভায়োলেট রে (UV) তিন ধরনের হয়।UV-A,B এবং C।তিন ধরণের রশ্মিরই তরঙ্গদৈর্ঘ্য দৃশ্যমান আলোর চেয়ে কম বা শক্তি বেশি।তাই আমাদের দেহের ক্ষতি করার ক্ষমতাও এদের বেশি।যেহেতু, UV-A এর চেয়ে UV-B এর এবং UV-B এর চেয়ে UV-C এর তরঙ্গদৈর্ঘ্য ছোট তাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর এদের মধ্যে UV-C।কিন্তু আমাদের সৌভাগ্য যে ওজোন স্তরের মধ্যে দিয়ে আসার সময় শক্তি বেশি হবার কারণে UV-C ওজোন পরমাণুকে ভেঙ্গে ফেলে এবং সেই কাজে শোষিত হয়ে যায়।তাই UV-C আর পৃথিবীতে আসতে পারেনা।কিন্তু UV-A ও B এর শক্তি তার চেয়ে কম বলে সেগুলো ওজোন স্তরে ওজোন পরমাণুকে ভাঙতে পারেনা এবং শোষিত না হয়েই পৃথিবীতে চলে আসে।
দেখা গেছে যে UV-A এর প্রতিক্রিয়াগুলো সাধারণত ধীরে ধীরে হয় এবং তার প্রভাবও দীর্ঘমেয়াদী,UV-B এর প্রতিক্রিয়াগুলো হয় তার তুলনায় অনেক দ্রুত।
যেমনঃ গরমের দিনে মাঠে ফুটবল বা ক্রিকেট খেলে আসার পর আমরা প্রায়ই দেখতে পাই যে আমাদের মুখ লাল হয়ে যায়।বাচ্চাকাচ্চাদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা আরো বেশি লক্ষ্য করা যায়।এর কারণ হচ্ছে UV-B থেকে শক্তি গ্রহণ করে আমাদের মুখের যে রক্তনালীগুলো রয়েছে সেগুলো আগের থেকে মোটা হয়ে যায় এবং আগের থেকে সেগুলো দিয়ে অনেক বেশি রক্ত চলাচল করতে পারে।তাই মুখের দিকে তাকালে মুখ লাল দেখায়!শুধু তাই না,রোদে থাকলে ত্বক যে কালো হয়ে যায় এটার পেছনেও দায়ী UV-B।
এগুলো ছিল ছোটখাটো ব্যাপার কিন্তু UV রশ্মি এর চেয়েও অনেক বড় ক্ষতি করতে পারে।চামড়ার ক্যান্সারের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান বলা যায় UV রশ্মির।চোখে ছানি পড়ার পেছনে এর হাত রয়েছে।এমনকি তুলনামূলকভাবে কম বয়সেই চামড়া কুঁচকে যাওয়ার কারণ হিসেবেও UV রশ্মির ভূমিকা আছে।