আস্ক প্রশ্নে আপনাকে স্বাগতম ! এটি একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। এই সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন ...
167 বার প্রদর্শিত
"পড়াশোনা" বিভাগে করেছেন (49 পয়েন্ট) 1 2

1 উত্তর

0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন (525 পয়েন্ট) 5 8 41
মৌলিক গণতন্ত্র  ১৯৬০-এর দশকে জেনারেল আইয়ুব খানের শাসনামলে প্রবর্তিত একটি স্থানীয় সরকার পদ্ধতি। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল আইয়ুব খান একটি নতুন পদ্ধতির মাধ্যমে গণতন্ত্রকে তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে মৌলিক গণতন্ত্র আদেশ ১৯৫৯ জারি করেন। অবশ্য পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলোর অধিকাংশ এ সম্পর্কে ভিন্ন ধারণা পোষণ করত এবং তারা একে জেনারেল আইয়ুব খান এবং তাঁর সহযোগী কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর ক্ষমতা কুক্ষিগত করার একটি সুনিপূণ কৌশল হিসেবেই গণ্য করত।

প্রারম্ভিক পর্যায়ে মৌলিক গণতন্ত্র ছিল একটি পাঁচ স্তরবিশিষ্ট ব্যবস্থা। নিম্ন থেকে শুরু করে এ স্তরগুলো ছিল (১) ইউনিয়ন পরিষদ (পল্লী এলাকায়) এবং শহর ও ইউনিয়ন কমিটি (পৌর এলাকায়), (২) থানা পরিষদ (পূর্ব পাকিস্তানে), তহশিল পরিষদ (পশ্চিম পাকিস্তানে), (৩) জেলা পরিষদ, (৪) বিভাগীয় পরিষদ এবং (৫) প্রাদেশিক উন্নয়ন উপদেষ্টা পরিষদ।

একজন চেয়ারম্যান এবং প্রায়শ ১৫ জন সদস্য নিয়ে একেকটি ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত হতো। এতে নির্বাচিত এবং মনোনীত উভয় ধরনের সদস্যই থাকতেন। পরিষদের সদস্যদের দুই-তৃতীয়াংশ ছিলেন নির্বাচিত এবং এক-তৃতীয়াংশ ছিলেন মনোনীত বেসরকারি সদস্য, যারা সরকার কর্তৃক নিয়োজিত হতেন। তবে, ১৯৬২ সালের এক সংশোধনী দ্বারা মনোনয়ন প্রথা বিলোপ করা হয়। ফলে পরিষদের সদস্যবৃন্দ প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটাধিকারের ভিত্তিতে স্ব স্ব ইউনিয়নের জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতেন। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পরোক্ষভাবে সদস্যদের দ্বারা তাদের মধ্য থেকেই নির্বাচিত হতেন। এক দিক দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ছিল পূর্বেকার ইউনিয়ন বোর্ডেরই অনুরূপ, তবে ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বলা হতো মৌলিক গণতন্ত্রী। সারা দেশে সর্বমোট পরিষদের সংখ্যা ছিল ৭৩০০।

সরকারি ও বেসরকারি উভয় ধরনের প্রতিনিধি নিয়ে দ্বিতীয় স্তরের থানা পরিষদ গঠিত হতো। এসকল প্রতিনিধি নিজেরা ছিলেন ইউনিয়ন পরিষদ এবং শহর কমিটির চেয়ারম্যান। সরকারি সদস্যবৃন্দ দেশ গঠনমূলক কাজে থানার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করতেন এবং এদের সংখ্যা নির্ধারণ করতেন সংশ্লিষ্ট জেলার ম্যাজিষ্ট্রেট। তবে, সরকারি সদস্যদের সর্বমোট সংখ্যা কোনো ক্রমেই  বেসরকারি সদস্যদের সংখ্যার চেয়ে বেশি হতে পারত না। থানা পরিষদের প্রধান থাকতেন মহকুমা অফিসার (এস ডি ও), যিনি পদাধিকারবলে থানা পরিরষদের চেয়ারম্যান হতেন। মহকুমা অফিসারের অনুপস্থিতিতে সার্কেল অফিসার (উন্নয়ন) পদাধিকারবলে থানা পরিষদের সদস্য হিসেবে পরিষদের সভায় সভাপতিত্ব করতেন। পশ্চিম পাকিস্তানের ক্ষেত্রে থানাকে তহসিল বলে অভিহিত করা হতো এবং তহসিলের সভায় সভাপতিত্ব করতেন তহশিলদার। তখন পাকিস্তানে মোট ৬৫৫টি থানা ও তহশিল ছিল।

তৃতীয় স্তরে ছিল জেলা পরিষদ। একজন চেয়ারম্যান এবং সরকারি ও বেসরকারি সদস্যদের নিয়ে এ পরিষদ গঠিত হতো। সদস্যদের সংখ্যা ৪০-এর বেশি হতো না। সকল থানা পরিষদের চেয়ারম্যানই সংশ্লিষ্ট  জেলা পরিষদের সদস্য থাকতেন এবং উন্নয়ন বিভাগের জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে অন্যান্য সরকারি সদস্য মনোনীত হতেন এবং সমান সংখ্যক সদস্য মনোনীত হতেন বেসরকারি সদস্যদের মধ্য থেকে। বেসরকারি সদস্যদের অন্তত অর্ধাংশ মনোনীত হতেন ইউনিয়ন পরিষদ ও শহর কমিটির চেয়ারম্যানদের মধ্য থেকে। জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট পদাধিকারবলে এ পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতেন এবং পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতেন নির্বাচিত সদস্যদের দ্বারা। চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে চেয়ারম্যান কর্তৃক তাঁর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতেন ভাইস-চেয়ারম্যান। পাকিস্তানে ৭৪টি জেলা পরিষদ ছিল। মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তর ছিল জেলা পরিষদ। এটি ছিল জেলা বোর্ডের উত্তরসূরী প্রতিষ্ঠান। সদস্যসংখ্যার দিক দিয়ে এ পরিষদ ১৮৮৫ সালের অবস্থান থেকে অনেকখানি সরে এসেছে, কেননা তখন শতকরা ২৫ ভাগ সদস্য মনোনীত হতো।

চতুর্থ ও শীর্ষ স্তর ছিল বিভাগীয় পরিষদ। বিভাগীয় কমিশনার পদাধিকারবলে এ পরিষদের চেয়ারম্যান থাকতেন। এতে সরকারি ও বেসরকারি  উভয় ধরনের সদস্য ছিলেন। সর্বোচ্চ সংখ্যক সদস্য ছিলেন ৪৫ জন। সরকারি সদস্য ছিলেন বিভাগের অন্তর্গত সকল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সরকারি উন্নয়ন বিভাগের প্রতিনিধিবর্গ। সর্বমোট বিভাগীয় পরিষদের সংখ্যা ছিল ১৬।

মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থায় পাকিস্তানের দুই অংশে একটি করে প্রাদেশিক উন্নয়ন উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের ব্যবস্থা ছিল। গঠনবিন্যাসের দিক দিয়ে এটি ছিল বিভাগীয় পরিষদের অনুরূপ। ব্যতিক্রম এই যে, নিয়োজিত সদস্যদের এক-তৃতীয়াংশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মধ্য থেকে বেছে নেয়া হতো। এ পরিষদের বলতে গেলে কোন ক্ষমতাই ছিল না। তবে পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তানে প্রাদেশিক পরিষদ গঠিত হওয়ার পর এ পরিষদ বাতিল হয়ে যায়।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

1 উত্তর
0 টি উত্তর
1 উত্তর
04 মে 2018 "ইসলাম ধর্ম" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন অা ক ম আজাদ (8,268 পয়েন্ট) 93 546 689
0 টি উত্তর
24 ডিসেম্বর 2017 "নোটিস বোর্ড" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Mr. Proshn (58 পয়েন্ট) 3 6 14

28,156 টি প্রশ্ন

29,682 টি উত্তর

3,147 টি মন্তব্য

3,920 জন সদস্য



আস্ক প্রশ্ন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে কমিউনিটির এই প্ল্যাটফর্মের সদস্যের মাধ্যমে আপনার প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান পেতে পারেন এবং আপনি অন্য জনের প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান দিতে পারবেন। মূলত এটি বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য।

  1. Jahidul ISLAM

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  2. ratna

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  3. আবু উবাইদাহ

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  4. Apon

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  5. সালেহ

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

শীর্ষ বিশেষ সদস্য

...