ঈদের ছুটিতে ঘরমুখো মানুষ নাড়ীর টানে ফিরবেন বাড়িতে। এ জন্য অনেককেই দীর্ঘক্ষণ যানবাহনে কাটাতে হতে পারে। এছাড়া ঘোরার পরিকল্পনা দীর্ঘ করেছেন বন্ধু-বান্ধব বা ভাইবোনদের পাল্লায় পড়ে। কিন্তু, ছোট্ট একটি সমস্যা মাটি করে দিতে পারে সব আনন্দ। দীর্ঘ বা ছোট যেকোনো ভ্রমণেই আপনার শত্রু হয়ে দাঁড়াতে পারে বমি হওয়ার প্রবণতা।
অনেক কারণে বমি হতে পারে। যেমন- কেউ ভীষণ অসুস্থ হলে, বিষাক্ত কিছু খেলে, বাজে গন্ধ বা বাজে স্বাদের খাবারের কারণে, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণে বা কোনো কারণে খাদ্যনালী বন্ধ হয়ে গেলেও বমি হতে পারে। অতিরিক্ত পরিশ্রম বা মোশন সিকনেসের কারণেও বমি হতে পারে।
তবে মোশন সিকনেস ভ্রমনের একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা। এক ধরনের মস্তিকের সমস্যার কারণে এটা হতে পারে। বিশেষ করে বাস, প্রাইভেটকার বা ইঞ্চিনচালিত এ ধরণের বাহনগুলিতে বমির সমস্যা হতে পারে। অন্তঃকর্ণ আমাদের শরীরের গতি ও জড়তার ভারসাম্য রক্ষা করে। যখন গাড়িতে চড়ি তখন অন্তঃকর্ণ মস্তিষ্কে খবর পাঠায় যে সে গতিশীল। কিন্তু চোখ বলে ভিন্ন কথা। কারণ তার সামনের বা পাশের মানুষগুলো কিংবা গাড়ির সিটগুলো থাকে স্থির। চোখ আর অন্তঃকর্ণের এই সমন্বয়হীনতার ফলে তৈরি হয় মোশন সিকনেস। এ কারণে তৈরি হয় বমি বমি ভাব, সেই সঙ্গে মাথা ঘোরা, মাথা ধরা প্রভৃতি।
যানবাহনে বমি থেকে রক্ষা পেতে
* এসময় খোলা জানালা দিয়ে লম্বা লম্বা শ্বাস নিতে পারেন।
* যাত্রা শুরুর একটু আগে ভরপেট খাবেন না বা পান করবেন না।
* ভ্রমণের সময় জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকলে সমস্যা কিছুটা কম হয়।
* গাড়িতে আড়াআড়ি বা যেদিকে গাড়ি চলছে সেদিক পেছন দিয়ে বসবেন না।
* সুপারি বা শুধু পান কিংবা চুইংগাম চিবানোতেও উপকার পাওয়া যেতে পারে।
* জানালার কাছে সিট নিন। জানালাটা খুলে দিন। খোলা বাতাসে মন-প্রাণ থাকবে চনমনে।
* ভ্রমনে যাদের বেশি সমস্যা হয় তারা গাড়িতে ওঠার আধঘন্টা আগে ডমপেরিডন জাতীয় ওষুধ খেয়ে নিতে পারেন।
* বমি ভাব দূর করতে সবচেয়ে কার্যকরী ভেষজ ওষুধ আদা। আদা কুচি করে কেটে মুখে নিয়ে চিবুতে পারেন। এতে করে আপনার বমি ভাবটি দূর হয়ে যাবে। যারা আদার ঝাঁজ সহ্য করতে পারেন না, তারা একটু গরমপানিতে আদা সিদ্ধ রসটি মুখে নিয়ে কুলি করলে মুখ থেকে বমির বিচ্ছিরি গন্ধও দূর হয়ে যাবে।
* যখনই বমি ভাব দেখবেন তখনি মুখে এক টুকরা লবঙ্গ রেখে দিন। ধীরে ধীরে চিবুতে থাকুন দেখবেন আপনার মুখ থেকে বমিভাব চলে গিয়েছে।
* পুদিনাপাতা বমিভাব দূর করতে দারুন কার্যকর। পুদিনার রস গ্যাস্ট্রিকজনিত বমিভাব দূর করতে বেশি কার্যকরী। তাই গ্যাস্ট্রিকজনিত বমিভাবে পুদিনা পাতা মুখে দিয়ে চিবুতে থাকুন।
* অনেকেই দারুচিনি চিবুতে পছন্দ করেন। দারুচিনি ভারী খাবারের পর খেলে হজমে খুব সাহায্য করে। তাই হজমের সমস্যাজনিত কারণে বমিভাব হলে খেতে পারেন এক টুকরা দারুচিনি।
* টক জাতীয় খাবারের ফলে শরীরের বমিভাব দূর হয়। লেবুর রসে রয়েছে সাইট্রিক এসিড যা বমিভাব দূর করতে বেশ কার্যকরী। কিন্তু গ্যাস্ট্রিকজনিত বমির ভাব হলে লেবু না খাওয়াই ভালো। তাছাড়া বমি ভাব হলে লেবুপাতার গন্ধ উপকারে আসতে পারে। কারণ লেবুর পাতা শুকলে বমি বমি ভাব দূর হয়।