আস্ক প্রশ্নে আপনাকে স্বাগতম ! এটি একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। এই সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন ...
220 বার প্রদর্শিত
"স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে করেছেন (5,894 পয়েন্ট) 387 2018 2190

1 উত্তর

0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন (5,894 পয়েন্ট) 387 2018 2190

আর্সেনিক সমস্যা ও প্রতিকার

আর্সেনিক মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর একধরনের বিষ। এর কোনো রং, গন্ধ ও স্বাদ নেই । বাংলাদেশের মানদন্ড অনুযায়ী পানীয় জলে আর্সেনিকের মাত্রা প্রতি লিটারে ৫০ মাইক্রো গ্রামের কম হলে সেটি নিরাপদ, যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার মতে এটি ১০ মাইক্রো গ্রামের কম হতে হবে (তথ্যসূত্র: বিবিএস)। আমাদের দেশের বেশির ভাগ এলাকার টিউবওয়েলের পানিতে আর্সেনি কপাওয়া গেছে। আর্সেনিক রয়েছে এমন টিউবওয়েলের পানি খাওয়ার জন্য বিভিন্ন এলাকার মানুষ আর্সেনিক জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। যারা আর্সেনিক দূষণের নেতিবাচক প্রভাব দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার তীব্র ঝঁকির মধ্যে রয়েছে। তাই এদের জন্যে প্রতিকারও জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ। অনেকে এ রোগের কারণে ধুঁকে ধুঁকে জীবন কাটাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে আর্সেনিক মুক্ত পানি নিশ্চিত করার উপায় গুলি জানা থাকলে পরিবারের স্বাস্থ্য ঝুঁকি মুক্ত রাখা সম্ভব ।

আর্সেনিক রোগীর লক্ষণসমূহ :

কোনো ব্যক্তির চুল, নখ ও চামড়া পরীক্ষা করলে বোঝা যায় যে, সে আর্সেনিকে আক্রান্ত কিনা। তবে এক জনের শরীরে আর্সেনিকের লক্ষণ প্রকাশ পেতে ৬ মাস থেকে ২০ বছর অথবা এর চেয়েও বেশী বছর সময় লাগে এবং তিনটি পর্যায়ে লক্ষণ গুলো দেখা দেয় ।

প্রথম পর্যায়ে অল্প মাত্রায় আর্সেনিকে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে যে সব লক্ষণ দেখা দেয় তা হলো :
রোগীর গায়ে (যেমন বুকে, পিঠে, পেটে) কালো দাগ দেখা দেয়। চামড়ার রং কালো হয়ে যায় বা ছোট ছোট কালো দাগ হয়।

হাত ও পায়ের তালু শক্ত খস খসে হয়ে যায় ও ছোট ছোট শক্ত গুটি দেখা দিতে পারে। পরে কালো কালো দাগ হয়।

গায়ের চামড়া মোটা ও খস খসে হয়ে যায়।

বমি বমি ভাব এবং বমি হয়; পাতলা পায়খানা হয়।

খাওয়া-দাওয়ায় অরুচি, রক্ত আমাশয়, মুখে ঘা ইত্যাদি দেখা দেয়।

কখনো কখনো জিহবার উপর ও গায়ের ভিতর কালো হয়ে যেতে পারে।

দ্বিতীয় পর্যায়ের লক্ষণ সমূহ :

চামড়ার বিভিন্ন জায়গায় সাদা, কালো বা লাল দাগ দেখা দেয়।

হাত-পায়ের তালু ফেটে যায় ও শক্ত গুটি ওঠে।

হাত-পা ফুলে ওঠে।

আর্সেনিক সমস্যা ও প্রতিকার :

কিডনি, লিভার ও ফুসফুস বড় হয়ে যায় ও টিউমার হয়।

হাত ও পায়ে ঘা হয়, পচন ধরে।

চামড়া, মূত্রথলি, ফুসফুসে ক্যান্সার হয়।

কিডনি ও লিভার অকেজো হয়ে যায়।

জন্ডিস হয়।

পেটে ও মাথায় ব্যথা হয়।

রক্ত বমি হয়।

আর্সেনিকে আক্রান্ত হলে করণীয় :-

আর্সেনিক রোগের উপসর্গ দেখা দিলে ডাক্তার অথবা স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মীর সাথে দেখা করতে হবে ও তাঁর পরামর্শ মেনে চলতে হবে।

অবশ্যই আর্সেনিক মুক্ত পানি পান করতে হবে।

নদী, পুকুর, বিল ইত্যাদির পানি ছেঁকে ২০ মিনিট ফুটিয়ে পান করা যায়।

বর্ষা কালে বৃষ্টির পানি পান করা যেতে পারে, এ জন্য বৃষ্টি শুরু হওয়ার ৫ মিনিট পর পানি ধরতে হবে।

আর্সেনিকে আক্রান্ত রোগী সব ধরনের খাবার খেতে পারেন। তবে শাক-সবজি ও পুষ্টিকর খাবার বেশি করে খেতে হবে।

আর্সেনিক দূষণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য করণীয়-

নলকূপ বসানোর আগে মাটির নিচের পানিতে আর্সেনিক মাত্রা পরীক্ষা করে দেখতে হবে;

পুরানো নলকূপের পানিতে আর্সেনিক আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে, টিউবওয়েল বসানোর আগে আশে পাশের টিউবওয়েলের পানি পরীক্ষা করতে হবে;

টিউবওয়েল বসানোর পর, গোড়া বাঁধানোর আগে আর্সেনিক পরীক্ষা করাতে হবে;

টিউবওয়েলের পানিতে আর্সেনিক পাওয়া গেলে টিউবওয়েলের মুখ লাল রং করতে হবে। পানিতে আর্সেনিক না থাকলে সবুজ রং করতে হবে। লাল রং দেখলে ঐ নলকূপের পানি খাওয়া যাবে না;

আর্সেনিক দূষণ মুক্ত টিউবওয়েলের পানি প্রতি ৬ মাস পর পর পরীক্ষা করাতে হবে। দেখতে হবে পানি আর্সেনিক দূষণমুক্ত আছে কিনা;

আর্সেনিক যুক্ত পানি রান্না ও খাওয়ার জন্য ব্যবহার করা যাবে না;

পাত কুয়ার পানিতে আর্সেনিক আছে কিনা পরীক্ষা করে পান করতে হবে;

পুকুর বা নদীর পানি বিশুদ্ধ করে পান করতে হবে। এজন্য এক কলসি (২০লিটার) পানিতে আধা চামচ (১০মিলিগ্রাম) ফিটকিরি মিশিয়ে ২-৩ ঘন্টা রেখে দিতে হবে। ফিটকিরি মিশালে পানির ময়লা কলসির নিচে জমা হবে। সাবধানে পাত্রের উপরের পরিস্কার পানি অন্য পাত্রে ঢেলে ফুটিয়ে পান করতে হবে;

বৃষ্টির পানি আর্সেনিক মুক্ত। তাই বৃষ্টি শুরু হওয়ার ৫ মিনিট পর পরিস্কার পাত্রে ধরে সেই পানি খাওয়া ও রান্নার কাজে ব্যবহার করা যায়।

আর্সেনিক যুক্ত পানি ফুটিয়ে খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে কারণ ফুটালে আর্সেনিক দূর হয় না বরং পানি শুকিয়ে গেলে তাতে আর্সেনিকের ঘনত্ব আরো বেরে যায়।


কামরুল হাসান ফরহাদ, সমন্বয়ক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত আছেন আস্ক প্রশ্ন ডট কমের সাথে। নিজের সমস্যার সমাধানের পন্থা নিজেই খুঁজে বের করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে ভালোবাসেন। প্রশ্ন অ্যানসারকে ভালোবেসে নিয়েছেন নিজে জানার ও অপরকে জানানোর জন্য।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

2 টি উত্তর
16 মে 2018 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Siddique (4,388 পয়েন্ট) 274 1555 1592
1 উত্তর
12 সেপ্টেম্বর 2019 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন কামরুল হাসান ফরহাদ (5,894 পয়েন্ট) 387 2018 2190
1 উত্তর
05 জুলাই 2018 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Sirazul islam (2,723 পয়েন্ট) 97 693 745

28,156 টি প্রশ্ন

29,682 টি উত্তর

3,147 টি মন্তব্য

3,934 জন সদস্য



আস্ক প্রশ্ন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে কমিউনিটির এই প্ল্যাটফর্মের সদস্যের মাধ্যমে আপনার প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান পেতে পারেন এবং আপনি অন্য জনের প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান দিতে পারবেন। মূলত এটি বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য।

  1. শারমিন

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  2. MD Rashed Ahmed

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  3. মোঃ শাওন ইসলাম

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  4. মুহা.ইয়াকুব

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  5. rjsiraz

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

শীর্ষ বিশেষ সদস্য

...