সাওম ভঙ্গের কারণসমূহ হচ্ছেঃ
১) অসুস্থতা,
২) সফর। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ বলেন,
﴿فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٖ فَعِدَّةٞ مِّنۡ أَيَّامٍ أُخَرَۚ﴾ [البقرة: ١٨٤]
“আর যে ব্যক্তি অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে (সে সাওম ভঙ্গ করে) অন্য দিনে তা কাযা আদায় করে নিবে।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৮৫]
৩) গর্ভবতী নারীর নিজের বা শিশুর জীবনের আশংকা করলে সাওম ভঙ্গ করবে।
৪) সন্তানকে দুগ্ধদানকারীনী নারী যদি সাওম রাখলে নিজের বা সন্তানের জীবনের আশংকা করে তবে সাওম ভঙ্গ করবে।
৫) কোনো বিপদগ্রস্ত মানুষকে বাঁচাতে গিয়ে সাওম ভঙ্গ করা: যেমন পানিতে ডুবন্ত ব্যক্তিকে উদ্ধার, আগুন থেকে বাঁচাতে গিয়ে দরকার হলে সাওম ভঙ্গ করা।
৬) আল্লাহর পথে জিহাদে থাকার সময় শরীরে শক্তি বজায় রাখার জন্য সাওম ভঙ্গ করা। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের সময় সাহাবীগণকে বলেছিলেন, إِنَّكُمْ مُصَبِّحُو عَدُوِّكُمْ وَالْفِطْرُ أَقْوَى لَكُمْ فَأَفْطِرُوا “আগামীকাল তোমরা শত্রুর মোকাবেলা করবে, সাওম ভঙ্গ করলে তোমরা অধিক শক্তিশালী থাকবে, তাই তোমরা সাওম ভঙ্গ কর।”[1]
বৈধ কোনো কারণে সাওম ভঙ্গ করলে দিনের বাকী অংশ সাওম অবস্থায় থাকা আবশ্যক নয়। কেননা সে তো গ্রহণযোগ্য ওযরের কারণেই সাওম ভঙ্গ করেছে। এজন্য এ মাসআলায় বিশুদ্ধ কথা হচ্ছেঃ কোনো রুগী যদি অসুস্থতার কারণে দিনে সাওম ভঙ্গ করে আর দিন শেষ হওয়ার আগেই সুস্থ হয়ে যায়, তবে দিনের বাকী অংশ সাওম অবস্থায় থাকার কোনো আবশ্যকতা নেই। কোনো মুসাফির যদি সাওম ভঙ্গ অবস্থায় দিন থাকতেই সফর থেকে ফিরে আসে তারও দিনের বাকী অংশ সাওম অবস্থায় থাকার আবশ্যকতা নেই। অনুরূপ বিধান ঋতুবতী নারীর। কেননা এরা সবাই বৈধ কারণে সাওম ভঙ্গ করেছে। তাই ঐ দিবস তাদের জন্যই। তাতে তাদের প্রতি সিয়ামের আবশ্যকতা নেই। কেননা শরী‘আত তাদেরকে সাওম ভঙ্গের অনুমতি প্রদান করে আবার তা আবশ্যক করবে না।
এর বিপরীত মাসআলা হচ্ছে, রামাযান মাসের চাঁদ দেখা গেছে একথা যদি দিনের বেলায় প্রমাণিত হয়, তবে খবর পাওয়ার সাথে সাথে সাওমের নিয়ত করে নিতে হবে এবং দিনের বাকী সময় সাওম অবস্থায় কাটাতে হবে। উভয় মাসআলায় পার্থক্য সুস্পষ্ট। কেননা যখন কিনা দিনের বেলায় রামাযান মাস শুরু হওয়ার কথা প্রমাণিত হয়েছে, তখন তাদের ওপর সে দিনের সিয়াম পালন করা ওয়াজিব হয়ে গেছে। কিন্তু না জানার কারণে তাদের ওযর গ্রহণযোগ্য এবং তাদের সিয়াম বিশুদ্ধ। এ কারণে তারা যদি জানতে পারত যে আজ রামাযান শুরু হয়েছে, তবে সাওম রাখা তাদের জন্য আবশ্যক হত।
[1] সহীহ মুসলিম, অধ্যায়: সিয়াম, অনুচ্ছেদ: সফরে কাজের দায়িত্বে থাকলে সিয়াম ভঙ্গ করার প্রতিদান।
কামরুল হাসান ফরহাদ, সমন্বয়ক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত আছেন আস্ক প্রশ্ন ডট কমের সাথে। নিজের সমস্যার সমাধানের পন্থা নিজেই খুঁজে বের করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে ভালোবাসেন। প্রশ্ন অ্যানসারকে ভালোবেসে নিয়েছেন নিজে জানার ও অপরকে জানানোর জন্য।