চিঠি লেখার সময় যে সব দিক সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে সে সব হল:
1. চিঠির বক্তব্য সুস্পস্ট হতে হবে ।
2. সহজ সরল ভাষায় চিঠি লিখতে হবে ।
3. প্রকাশ ভঙ্গি হবে আকর্ষণীয়।
4. চিঠি লেখার পদ্ধতি মেনে চলতেহবে ।
5. হাতে লেখা চিঠিতে হস্তাক্ষর সুন্দর হ ওয়া উচিত ।
6. খামের নাম ঠিকানা স্পষ্টাক্ষরে লিখতে হবে।
চিঠিতে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো অর্ন্তভুক্ত থাকবে:
1.চিঠি লেখার স্থান ।
2.চিঠি লেখার তারিখ ।
3.প্রেরক –প্রাপক সম্পর্কের ভিত্তিতে প্রাপককে সম্বাধন ও প্রাথমিক সম্ভাষন ।
4.বিষয়বস্তু ।
5.চিঠির সমাপ্তিমূলক।
6.লেখকের নাম
7.চিঠির খামের শিরোনামে প্রাপকের নাম-ঠিকানা।
চিঠির বিভিন্ন অংশ
1.চিঠির ওপরের অংশ মঙ্গল সূচক শব্দ। 2.চিঠির ওপরের অংশের ডান কোনে স্থানের তারিখ ।
3.চিঠির ওপরের অংশের বাম দিকে প্রাপকের উদ্দেশে সম্বোধন।
4.চিঠির বক্তব্য বিষয়।
5.চিঠির শেষে ডান দিকে লেখকের স্বাক্ষর ও ঠিকানা।
6.চিঠির শিরনাম।
এই অংশ কয়টি চিঠির আনুষ্ঠানিকতা চিঠি লেখার বেলায় এগুলো মানতে হবে ।তবে চিঠির বৈচিত্র্যের প্রেক্ষিতে এসব বিষয় ও ভিন্ন রকম হতে পারে ।
1. মঙ্গলসূচক শব্দ:
ব্যক্তিগত চিঠিতে মঙ্গল সূচক শব্দ ব্যবহারের রীতি প্রচলিত আছে, ব্যবহারিক পত্রে তার আবশ্যকতা নাই। আগের দিনে এসব মঙ্গলসূচক শব্দ চিঠিতে ব্যবহৃত হত। এখনকার পুরান ঢংয়ের চিঠিতে এসবের ব্যবহার দেখা যেতে পারে । মঙ্গল সূচক শব্দ ব্যবহারে মুসলিম ও হিন্দু -রীতি নামে দুটো রীতি লক্ষ্য করা যায় । কোন কোন ক্ষেত্রে শব্দের ব্যবহারে স্বাতন্ত্র্য থাকার জন্য মুসলিম ও হিন্দু লেখক নিজস্ব রীতির শব্দ ব্যবহার করে থাকে । অন্য ধর্মাবলম্বীর বেলায় তেমনি স্বতন্ত্র শব্দ ব্যবহার পারে । মুসলিম রীতিতে ইয়া রব ,ইয়া আল্লাহ,আল্লাহুআকবর,এলাহি ভরসা ,৭৮৬ ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। হিন্দু রীতিতে আছে ওঁ’,ওম,শ্রী শ্রী র্দুগা হরি সহায় ,সরস্বৈত্যে নম: ইত্যাদি শব্দ ।
2. চিঠি লেখার স্থান ও তারিখ :
চিঠির ওপরের অংশের কোণে চিঠি লেখার স্থান ও তারিখ উল্লেখ করার রীতি প্রচলিত আছে । ব্যক্তিগত ও সামাজিক চিঠি এ ধরনের স্থান ও তারিখ নির্দেশিত থাকে । আবার কখনও কখনও চিঠির মূল বক্তব্যের শেষে ইতি দিয়ে তারিখ উল্লেখ করা হয় । নামের নিচে ও অনেকে তারিখ ঊল্লেখ করে।কখন ও পত্রের নিচের দিকে বাঁ পাশে ও তারিখ লেখা হয় । আবেদনপত্রে ও স্মারকপত্রে এ ধরনের স্থান -তারিখের ঊল্লেখ থাকে । অফিসের চিঠিতে ওপরের অংশে চিঠির নম্বর ও তারিখ থাকে।
3. চিঠির সম্বোধন :
চিঠি পত্রে বক্তব্য বিষয় লেখা শুরুর আগে বাম দিকে প্রাপকের ঊদ্দেশে সম্বোধন সূচক কথা লিখতে হয় । এতে মুসলিম ও হিন্দু রীতির মধ্যে পার্থক্য আছে। পত্র প্রেরক ও প্রাপকের সম্পর্ক ও বয়সের প্রেক্ষিতে এই সম্বোধন ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে । মুসলিম রীতিতে শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিকে ‘পাক জনাবেষু,বখেদমতেষু,ইত্যাদি এবং হিন্দু রীতিতে শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিকে ‘শ্রীচরণেষু,শ্রীচরণকমলেষু’পূজনীয়’ইত্যাদি শব্দ প্রয়োগকরা হয়। বয়সের দিক থেকে ছোটদের সম্বোধনে মুসলিম রীতিতে দোয়াবরেষু, এবং হিন্দু রীতিতে কল্যাণীয়েষু,স্নেহাস্পদ’ইত্যাদি লিখতে হয় । বন্ধুবান্ধবের প্রতি বন্ধুবর’ প্রিয়,প্রিয়বেরষু,সুহৃদয়েষু,ইত্যাদি শব্দ লেখার রিতি আছে।
4. চিঠির বক্তব্য:
চিঠির সম্বোধনের পর মূল বক্তব্য উপস্থাপন হয় ।এটাই চিঠির সবচেয়ে প্রয়োজনীয় দিক। বক্তব্য স্পষ্টভাবে সুশৃঙ্খলরূপে এখানে বিধৃত হবে । বক্তব্যের সূত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষার প্রয়োজনে বিভিন্ন অনুচ্ছেদে বক্তব্য বিষয় বিন্যস্ত হতে পারে ।
5. পত্র লেখকের স্বাক্ষর :
চিঠির বক্তব্য লেখা শেষ করার পর নিচে ডান দিকে লেখকের নাম স্বাক্ষর করতে হয় । কেউ বাম পাশেও সাক্ষর করে । চিঠির শেষাংশে ব্যক্তিগত কুশলাদি প্রকাশ করে দু-একটি কথা লেখা হয়। লেখকের সাথে সম্পক ও বয়সের প্রক্ষিতে পৃথক মুসলিম ও হিন্দুরীতির নিম্নরূপ শব্দ ব্যবহারের নিদশন রযেছে:
A. গুরুজনেরপ্রতি:স্নেহের,খাকসার,প্রণত,সেবক,স্নেহভাজন ইত্যাদি।
B. ছোটদের প্রতি :আশীবাদ,শুভাথী,তোমার ইত্যাদি।
C. বন্ধুবানধবের প্রতি:প্রীতিমুগ্ধ, তোমার,ইত্যাদি।
D. সাধারণ:আপনার বিশ্বস্ত ,নিবেদক ইত্যাদি।এসব শব্দ ব্যবহারে ওবৈচিত্র্য আছে।
6. চিঠির শিরোনাম:
চিঠি খামে ভরে প্রাপকের কাছেপাঠাতে হয়্।তাই খামের ওপরে প্রাপকের পূর্ন নাম ঠিকানা লেখা দরকার -যাতে প্রাপককে খুঁজে বের করতে কোন অসুবিধা না ঘটে ।খামের ওপরের অংশে ডান দিকে প্রয়োজনীয় ডাকটিকেট লাগাতে হয়।এইডাকটিকিটের নিচের অংশে প্রাপকের নাম,ঠিকানাআর চিঠিরখামে নিচের বাম দিকে প্রেরকের নাম,ঠিকানা লিখতে হয় । প্রাপকের নাম লেখার সময় জনাব, মৌলভী, মি:, শ্রীযুক্ত,শ্রীমান, শ্রীমতী, ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করা দরকার । অবশ্য নামের আগে শুধু জনাব, লেখার সরকারী নির্দেশ রয়েছে। পোস্টকার্ড নির্দিষ্ট স্থানে লেখতে হয়।