মাথা জুড়ে সুন্দর ঘন চুল সবারই কাম্য? যাদের সেই চুল থেকেও ঝরে পড়ে তাদের কষ্ট অনেক বেশি। চলুন একইসঙ্গে জেনে নিই, চুল কেন পড়ে এবং কিভাবে এর সমাধান করা যায়? * চুল পড়ে যাওয়ার বড় কারণগুলো হচ্ছে, বংশগত কারণে মাথায় টাক পড়া, হঠাৎ করে চুল পড়ে যাওয়া, আর সন্তান হবার পরবর্তী সময় অর্থাৎ হরমোনের কারণে চুল পড়ে যাওয়া। বংশগত কারণে টাক পড়লে তেমন কিছু করার থাকে না। তবে বাকী দুটো কারণে চুল পড়লে সময়মতো চিকিৎসা করালে চুল রক্ষা করা সম্ভব বলে জানান জার্মানির ত্বক বিশেষজ্ঞ ডা. উটে লিংকা। * অনেক ছেলেদের ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যেই চুল পড়তে শুরু করে, তারপর একসময় একেবারেই টাক পড়ে যায়। সাধারণত জেনেটিক বা বংশগত কারণেই অসময়ে চুল পাকে বা টাক পড়ে যায়। বংশগত কারণে যে কোনো কিছু হলে সে ক্ষেত্রে মেনে নেওয়া ছাড়া খুব বেশি কিছু করার থাকে না। শুধুমাত্র মাথায় পরচুলা বা চুল লাগানোই এর একমাত্র সমাধান। * মেয়েদের সরাসরি টাক না পড়লেও চুল পড়ার সমস্যা হয়, তবে তা অনেকটা দেরিতে। মেয়েদের সাধারণত ৫০ বছরের পরে চুল পড়তে শুরু করে। মেয়েদের শরীরের হরমোনের তারতম্য হলে চুল বেশি পড়ে। ঋতুস্রাব, প্রসব এবং মেনোপজের কারণে বেশিরভাগ মেয়েদেরই চুল পড়তে পারে। বিশেষজ্ঞের মতে, এ নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই। * চুল পড়া বন্ধ হবে বা নতুন চুল গাজাবে – বাজারে এ ধরনের নানা আকর্ষণীয় ওষুধের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। অনেকেই উপায়ান্তর না দেখে এসব বিজ্ঞাপনে প্রলোভিত হয়ে চুলে নানা রকম তেল বা ওষুধ ব্যবহার করে থাকেন, যার ফল হয় উল্টো। বিশেষজ্ঞের মতে, এ সব দিকে না তাকিয়ে সরাসরি ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত। * শরীরে থাইরয়েডের মাত্রার তারতম্য হলে শুধু চুল পড়া নয় , নখ এবং ত্বকেও পরিবর্তন দেখা দেয়। তাছাড়া এই সমস্যায় অনেকে ক্লান্ত বোধও করেন। কাজেই নিজের মধ্যে এসব পরিবর্তন দেখলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। * শরীরে আয়রন এবং ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দিলেও চুল পড়তে পারে। সাধারণত মেয়েদের ক্ষেত্রে এটা বেশি হয়ে থাকে। তবে এসবই যে আসল কারণ তা নাও হতে পারে, ত্বকের ডাক্তারের কাছে সবকিছু পরীক্ষার পরই এটির সঠিক চিকিৎসা সম্ভব বলে জানান ত্বক বিশেষজ্ঞ উটে লিংকার। * খাদ্যে পুষ্টির অভাব এবং কড়া ডায়েটিংয়ের ফলেও চুল পড়তে পারে। তাই ভিটামিনযুক্ত খাবার এবং প্রচুর মাছ খাওয়া দরকার। বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ সুন্দর চুল ও ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। তাছাড়া দুধ, ডিম, শাক- সবজি অবশ্যই খাবারের তালিকায় রাখতে হবে। আর যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান করতে ভুলবেন না যেন! * ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থেকেও চুল পড়তে পারে, তবে তা বেশিদিন থাকে না। ওষুধ বন্ধ করে দিলেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নতুন চুল গজায়। ক্যানসার রোগীদের কেমোথেরাপি দেওয়ার পর পুরো মাথার চুল পড়ে গেলেও কিছুদিন পরে আবার নতুন চুল গজায়। * বিভিন্ন সংক্রামক রোগের কারণেও চুল পড়তে পারে। বর্তমানে যান্ত্রিক জীবনে স্ট্রেস থেকে মুক্ত, এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। বর্তমানে নারী-পুরুষ অনেকেই চুলে নানা ধরনের রং, শ্যাম্পু, ড্রায়ার, স্ট্রেটনার কত কী ব্যবহার করে থাকেন। অতিরিক্ত রাসায়নিক পদার্থ, অতিরিক্ত গরম তাপ, গরম পানি চুলকে খুব সহজেই নষ্ট করে ফেলতে পারে। এসব দিকে কিছুটা লক্ষ্য রাখলে চুল পড়া কমতে পারে।