আস্ক প্রশ্নে আপনাকে স্বাগতম ! এটি একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। এই সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন ...
331 বার প্রদর্শিত
"ইসলাম ধর্ম" বিভাগে করেছেন (44 পয়েন্ট) 159 588 602

1 উত্তর

0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন (2,796 পয়েন্ট) 159 422 438
নির্বাচিত করেছেন
 
সর্বোত্তম উত্তর

image

পবিত্র রমজান মাসের আমরা সঠিকভাবে রোজা পালন করতে চাই কিন্তু আমরা অনেকে জানি না রোজা পালনের সঠিক নিয়ম বা কি কি কারণে রোজা ভেঙে যায়। আসুন আমরা জেনে নেই কি করলে বা কোন কোন কাজে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়-

১. সহবাস- কোনো ব্যক্তি যদি রোজা রাখা অবস্থায় স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হয়। তাহলে তার বীর্যপাত হোক আর নাই হোক; তার রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে।

এই অবস্থায় রোজা ভঙ্গের ফলে ৫টি জিনিস সংঘটিত হয়-

ক. কবীরা গুনাহ; আর এর ফলে তাকে তাওবা করতে হবে;
খ. রোযা বাতিল হয়ে যাবে;
গ. তাকে ঐ দিনের অবশিষ্ট অংশ পানাহার ইত্যাদি থেকে বিরত থাকতে হবে;
ঘ. ঐ দিনের রোজা (রমজানের পরে) ক্বাযা করতে হবে;
ঙ. বৃহৎ কাফফারা আদায় করতে হবে। আর কাফ্ফারা হলো একাধারে দুই মাস রোজা রাখা অথবা একজন গোলাম আজাদ করা কিংবা ৬০ জন মিসকিনকে একবেলা খাবার খাওয়ানো।

২. সঙ্গম ব্যতিত অন্য পন্থায় বীর্যপাত- সহবাস ব্যতিত অন্যপন্থায় যদি কোনো রোজাদার যৌনস্বাদ নেয়ার জন্য স্পর্শকাতর কোনো যুবতী যৌবনা নারী সংস্পর্শে আসে; তাকে চুম্বন করে; জড়িয়ে ধরে অথবা হস্তমৈথুন করে ইত্যাদির মাধ্যমে বীর্যপাত ঘটায় তবে তার রোজা ভেঙে যাবে। (সবার জানা উচিত যে, এই কর্মগুলি যেমনিভাবে রোজার মাসে হারাম তেমনিভাবে অন্য সময়গুলোতেও হারাম।)

৩. পানাহার বা নাক দিয়ে খাদ্য গ্রহণ- সেটা উপকারি হোক বা অপকারি হোক; হালাল হোক বা হারাম হোক; অল্প হোক বা বেশি হোক রোজা ভেঙে যাবে।

আল্লাহ তা-আলা বলেছেন- ওয়া কুলু ওয়াশরাবু হাত্তা ইয়াতাবাইয়্যানা লাকুমুল খাইত্বুল আব্ইয়াজু মিনাল খাইত্বিল আসওয়াদি মিনাল ফাযরি। (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৭)

অর্থাৎ- আর পানাহার করা যতক্ষণ না কালো রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিস্কারভাবে দেখা যায়। (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৭)

৪. পানাহারের বিকল্প- রোজাদার যদি পানাহারের বিকল্প উপায়ে খাবার গ্রহণ করে- রক্ত গ্রহণ; শক্তিবর্ধক স্যালাইন গ্রহণ; এমন ইঞ্জেকশন যা আহারের কাজ করে অর্থাৎ গ্লুকোজ ইনজেকশন ইত্যাদি।

৫. ইচ্ছাকৃত বমি- রাসুল (সা.) বলেন- যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে সে যেন পরবর্তীতে রোজা ক্বাযা করে নেয়। (মুসলিম)

৬. হায়েজ-নেফাস- মহিলাদের হায়েজ (ঋতু) ও নেফাস (প্রসবজনিত রক্তক্ষরণ) হওয়া, এমনকি যদি ইফতারের কিছু সময় পূর্বেও হয় তাহলে রোজা ভেঙে যাবে।

৭. দূষিত রক্ত বের করা- দেহ থেকে দুষিত রক্ত বের করলে রোজা নষ্ট হবে কি হবে তা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে; তবে আসল কথা হলো দিনের বেলায় রোজা থাকা অবস্থায় এ কাজ না করাই উত্তম।

৮. নিয়ত বাতিল- নিয়ত প্রত্যেক ইবাদত তথা রোজার অন্যতম রুকন। আর সারাদিন সে নিয়্যত নিরবিচ্ছিন্নভাবে মনে জাগ্রত রাখতে হবে যে, আমি রোজাদার। যাতে রোজা নারা রাখার বা রোজা বাতিল করার কোনো দৃঢ় সংকল্প না করে বসে। বলা বাহুল্য রোজা না রাখার নিয়ত করলে এবং তার নিয়্যত বাতিল করে দিয়ে সারাদিনের পানাহার না করে উপবাস করলেও রোজা বাতিল গণ্য হবে। সুতরাং আমরা নিয়্যত করব এবং নিয়্যত রাখবো।

৯. মুরতাদ্দ হওয়া- কোনো রোজাদার যদি তার কোনো কথা, কাজের পরে যদি মুরতাদ্দ (কাফের) হয়ে যায় (আল্লাহর কাছে এই কাজ থেকে আশ্রয় চাই) তবে ওলামায়ে কেরামের সর্বসম্মতিক্রমে তার রোজা বাতিল হয়ে যাবে। অতপর সে যদি তাওবা করে পুনরায় মুসলিম হয়, তাহলে ঐ রোজা তাকে ক্বাযা করতে হবে; যদিও সে ঐ দিনে রোজা নষ্টকারী কোনো কাজ বা কোনো জিনিস ব্যবহার করেন নাই।

১০. বেহুশ হওয়া- রোজাদার যদি ফজর থেকে নিয়ে মাগরিব পর্যন্ত বেহুশ থাকে, তাহলে তার রোজা শুদ্ধ হবে না এবং তাকে ঐ দিনের রোজা ক্বাযা রাখতে হবে।

রোজা নষ্ট হওয়ার শর্ত-

উপরোক্ত আলোচনা সকল জিনিস কেবল তখনই রোজা নষ্ট করবে, যখন তার সাথে এই শর্তগুলি পাওয়া যাবে।

ক. রোজাদার জানবে যে, এই জিনিস এই সময়ে ব্যবহার কররে তারা রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। অর্থাৎ তা ব্যবহার করার সময় তার এ কথা অজানা থাকলে চলবে না যে, এই জিনিসি রোজা নষ্ট করে অথবা এখন রোজার সময়।

খ. তা যেন মনে স্মরণ রাখার সাথে ব্যবহার করে; ভুলে গিয়ে নয়।

গ. তা যেন নিজস্ব ইচ্ছা ও এখতিয়ারে ব্যবহার করে; অপরের তরফ থেকে বাধ্য হয়ে নয়। আল্লাহ বলেন- ‘কোনো ব্যাপারে তোমরা ভুল করলে তোমাদের কোনো অপরাধ নেই, কিন্তু ইচ্ছাকৃত করলে অপরাধ আছে। (সুরা আহযাব : আয়াত ৫)।

হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা যদি ভুল ও ত্রুটি করে ফেলি, তাহলে তুমি আমাদেরকে অপরাধী করো না। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ২৮৬)।

আমরা উক্ত কার্যাবলী থেকে নিজেদেরকে হেফাজত করে সুন্দরভাবে রোজা পালন করাই হবে মুসলিম জীবনের একান্ত কাজ। আল্লাহ আমাদের উক্ত নিয়ম-কানুনগুলো থেকে বিরত থাকার এবং আল্লাহ যেন আমাদেরকে উক্ত কাজগুলো থেকে বিরত রাখেন সেই তাওফিক চাই। 

আল্লাহ আমাদের কবুল করুন- আমীন।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

1 উত্তর
16 মে 2018 "ইসলাম ধর্ম" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Siddique (4,388 পয়েন্ট) 275 1557 1592
2 টি উত্তর
1 উত্তর
18 মে 2018 "ইসলাম ধর্ম" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Raju Ahamed (1,189 পয়েন্ট) 42 247 281
1 উত্তর

28,156 টি প্রশ্ন

29,682 টি উত্তর

3,147 টি মন্তব্য

3,938 জন সদস্য



আস্ক প্রশ্ন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে কমিউনিটির এই প্ল্যাটফর্মের সদস্যের মাধ্যমে আপনার প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান পেতে পারেন এবং আপনি অন্য জনের প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান দিতে পারবেন। মূলত এটি বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য।

শীর্ষ বিশেষ সদস্য

...