আস্ক প্রশ্নে আপনাকে স্বাগতম ! এটি একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। এই সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন ...
260 বার প্রদর্শিত
"তথ্য ও প্রযুক্তি" বিভাগে করেছেন (44 পয়েন্ট) 159 588 602

1 উত্তর

0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন (2,796 পয়েন্ট) 159 422 438

২৪ ঘণ্টা সময় মাপার যন্ত্রের নাম ঘড়ি। পৃথিবীর সব থেমে থাকলেও থেমে থাকে না ঘড়ির কাঁটা। তবে অনেকের মধ্যে কৌতূহল রয়েছে, ঘড়ির কাঁটা কেন ডান দিকে ঘোরে? ঘড়ি আবিষ্কার হয়েছিল ইংল্যান্ড বা ইউরোপের কোনো দেশে। এর আগে ছিল সূর্যঘড়ি। ইংল্যান্ড পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে হওয়ায় সূর্য দক্ষিণ আকাশে হেলে থাকে। এ কারণে সূর্যঘড়ির যে দণ্ডের ছায়া দেখে সময় পরিমাপ করা হয়, সেই ছায়াটি বাঁ দিক থেকে ডান দিকে ঘোরে। কারণ, ওই স্থানটি উত্তর গোলার্ধে। ওখানে সূর্য যখন পূব থেকে পশ্চিমে যায়, তখন সূর্যঘড়ির দণ্ডের ছায়াটি বাঁ থেকে ডান দিকে ঘোরে। তাই ঘড়ি আবিষ্কারের সময় স্বাভাবিক ও অভিজ্ঞতালব্ধ চিন্তা অনুযায়ী ঘড়ির কাঁটা ডান দিকে ঘোরানোর পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।

এখন প্রশ্ন হলো, পশ্চিম-পূর্বের সঙ্গে বাঁ ও ডানের কী সম্পর্ক? এবার তাহলে একটা মানচিত্র নিয়ে বসা যাক। মানচিত্রের ওপরের দিকে একটা দিকনির্দেশক চিহ্ন থাকে। তার পাশে লেখা থাকে এন বা নর্থ। মানে, মানচিত্রের ওপরের দিকটা হলো নর্থ, বাংলায় যাকে বলে উত্তর। আর নিচের দিকটা হলো দক্ষিণ। তাহলে হিসাবে বাঁ দিকে পড়ে পশ্চিম আর ডান দিকে পূর্ব দিক। এ কারণেই ঘড়ির কাঁটা বাঁ দিক থেকে ডান দিকে যায়। মানে, আসলে ওটা বাঁ থেকে ডানে না, বলা উচিত পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে যায়।

সবচেয়ে প্রাচীন যে ঘড়িগুলো, সেগুলোতে কিন্তু কাঁটার ঘোরাঘুরির কোনো বিষয় ছিল না। হ্যাঁ, সূর্যঘড়িই হলো পৃথিবীর প্রাচীনতম ঘড়ি। এই সূর্যঘড়িও কিন্তু অনেক রকমের ছিল। সবচেয়ে প্রাচীন সূর্যঘড়ি বলা হয় মিসরীয়দের ওবেলিস্ককে। ধারণা করা হয়, মিসরীয়রা এই ঘড়ি বানানো শিখেছিল খ্রিস্টের জন্মেরও সাড়ে তিন হাজার বছর আগে। এ রকম আরেকটা ঘড়িকে বলা হয় ‘শ্যাডো ক্লক’। ওটা বানিয়েছিল ব্যাবিলনীয়রা, খ্রিস্টের জন্মের হাজার দেড়েক বছর আগে।

এখন, এই সূর্যঘড়িগুলোতে সময় দেখা হতো সূর্যের ছায়া দেখে। অর্থাৎ সময়-নির্দেশক যে কাঁটা বা দণ্ড, সেটা স্থির থাকত। সূর্যের আলোয় সে কাঁটার ছায়ার পরিবর্তন দেখেই সময় হিসাব করা হতো। আর এখনকার ঘড়িতে আবার উল্টো, এই কাঁটাগুলোই ঘুরে ঘুরে সময় জানান দেয়। ছায়া দেখার কোনো বালাই নেই। এই রকম ঘড়ি, মানে যেই ঘড়িতে কাঁটা ঘুরে ঘুরে সময় জানান দেয়, তেমন ঘড়ি প্রথম বানানো হয় ১৩ শতকে। তবে তখনই এই ঘড়িগুলো তেমন জনপ্রিয় হয়নি। হবে কী করে, তখনো যে মানুষের সময় দেখার তেমন দরকারই পড়েনি। সূর্য দেখেই মানুষ দিব্যি বুঝে নিত যে এখন সকাল না দুপুর, বিকেল না সন্ধ্যা। সময় নিয়ে এরচেয়ে বেশি মাথা ঘামানোর তেমন দরকারই ছিল না।

এরও মোটামুটি ৪০০ বছর পরে, ১৮ শতকে যখন কলকারখানা বসতে শুরু করল, তখন মানুষের নির্দিষ্ট করে সময় দেখার দরকার হতে শুরু করল। নির্দিষ্ট সময়ে কারখানায় যেতে হবে, নির্দিষ্ট সময়ে দুপুরের খাবার খেয়ে আবার কাজে লাগতে হবে, নির্দিষ্ট সময়ে ছুটি হবে, কারখানার নিয়মটাই যে তেমন! তখন সবার ওই কাঁটাওয়ালা ঘড়ির দরকার পড়ল, যাতে সবাই সময়মতো সব কাজ করতে পারে। ফলে ঘড়িও খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠল।

মজার ব্যাপার হলো, ঘড়ি যদি অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ডে আবিষ্কার হতো, তাহলে হয়তো ঘড়ির কাঁটা বাঁ দিকে ঘুরত। কারণ, দক্ষিণ গোলার্ধে সূর্যঘড়ির ছায়া উত্তর গোলার্ধের বিপরীত দিকে, অর্থাৎ ডান দিক থেকে বাঁ দিকে ঘোরে!

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

1 উত্তর
06 জুলাই 2018 "বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন R.A.rupu SR(pl) (3,509 পয়েন্ট) 104 1056 1111
1 উত্তর
0 টি উত্তর

28,156 টি প্রশ্ন

29,682 টি উত্তর

3,147 টি মন্তব্য

3,938 জন সদস্য



আস্ক প্রশ্ন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে কমিউনিটির এই প্ল্যাটফর্মের সদস্যের মাধ্যমে আপনার প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান পেতে পারেন এবং আপনি অন্য জনের প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান দিতে পারবেন। মূলত এটি বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য।

শীর্ষ বিশেষ সদস্য

...