আস্ক প্রশ্নে আপনাকে স্বাগতম ! এটি একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। এই সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন ...
503 বার প্রদর্শিত
"ধর্ম ও বিশ্বাস" বিভাগে করেছেন (2,723 পয়েন্ট) 104 700 745

1 উত্তর

0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন (2,796 পয়েন্ট) 161 422 438
image

নামাজ না পড়ার শাস্তি

আল্লামা ইবনে হযর মক্কী (রহ.) ফাজায়েলে আ'মাল মিনাল জাওয়াযের নামক গ্রন্থে একটি হাদিস উল্লেখ করেন। 

হাদিসটি হলো নিম্নরূপ : যে ব্যক্তি নামাজের ব্যাপারে অলসতা করে তাকে ১৫ ধরনের শাস্তি দেওয়া হবে। তার মধ্য থেকে পাঁচ ধরনের শাস্তি দুনিয়াতে। তিন ধরনের শাস্তি মৃত্যুর সময়। তিন ধরনের শাস্তি কবরে। তিন ধরনের শাস্তি কবর থেকে উঠানোর পর। দুনিয়াতে যে পাঁচ ধরনের শাস্তি হবে তা হলো, 


১. তার জীবনের বরকত ছিনিয়ে নেওয়া হবে। 
২. তার চেহারা থেকে নেককারদের নূর দূর করে দেওয়া হবে। 
৩. তার নেক কাজের কোনো বদলা দেওয়া হবে না। 
৪. তার কোনো দোয়া কবুল হবে না। 
৫. নেক বান্দাদের দোয়ার মধ্যে তার কোনো হক থাকবে না। 

মৃত্যুর সময় যে তিন ধরনের শাস্তি দেওয়া হবে : 

১. জিল্লতি ও অপমানের সঙ্গে সে মৃত্যুবরণ করবে। 
২. ক্ষুধার্ত অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করবে। 
৩. এমন পিপাসার্ত অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করবে যে, সমুদ্র পরিমাণ পানি পান করালেও তার পিপাসা মিটবে না। 

কবরে যে চার ধরনের শাস্তি হবে : 

১. কবর তার জন্য এমন সংকীর্ণ হবে যে, এক পাশের বুকের হাড় আরেক পাশে ঢুকে যাবে। 
২. তার কবরে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হবে। 
৩. তার কবরে এমন একটি সাপ নিযুক্ত করে দেওয়া হবে, যার চক্ষু আগুনের আর নখগুলো হবে লোহার, তার প্রত্যেকটি নখ লম্বা হবে একদিনের দূরত্বের পথ। তার আওয়াজ হবে বজ্রের আওয়াজের মতো বিকট। সাপ ওই বেনামাজিকে বলতে থাকবে, আমাকে আমার রব তোর ওপর নিযুক্ত করেছেন যাতে ফজরের নামাজ নষ্ট করার কারণে সূর্যোদয় পর্যন্ত তোকে দংশন করতে থাকি। জোহরের নামাজ নষ্ট করার কারণে আসর পর্যন্ত দংশন করতে থাকি। আসর নামাজ নষ্ট করার কারণে মাগরিব পর্যন্ত আর মাগরিবের নামাজ নষ্ট করার কারণে এশা পর্যন্ত, আর এশার নামাজ নষ্ট করার কারণে ফজর পর্যন্ত তোকে দংশন করতে থাকি। এই সাপ যখনই তাকে দংশন করবে তখনই সে ৭০ হাত মাটির নিচে ঢুকে যাবে (উঠিয়ে আবার দংশন করবে) এভাবে কেয়ামত পর্যন্ত এই সাপ তাকে আজাব দিতে থাকবে। 


কবর থেকে উঠানোর পর বেনামাজিকে যে চার ধরনের আজাব দেওয়া হবে : 

১. তার হিসাব খুব কঠিনভাবে নেওয়া হবে। 
২. আল্লাহতায়ালা তার ওপর রাগান্বিত হয়ে থাকবেন। 
৩. তাকে জাহান্নামে ঢুকানো হবে। 

চার. তার চেহারায় তিনটি লাইন লেখা থাকবে-

১. হে আল্লাহর হক নষ্টকারী! 
২. হে আল্লাহর গোস্বায় পতিত ব্যক্তি! 
৩. তুই দুনিয়াতে যেমন আল্লাহর হক নষ্ট করেছিস তেমনি আজ আল্লাহর রহমত থেকে তুই নিরাশ হয়ে যাবি। বেনামাজি এই মোট ১৫ ধরনের শাস্তি আস্বাদন করবে। 

আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব নামক গ্রন্থে বেনামাজির পরিণাম সম্পর্কে কয়েকটি হাদিস বর্ণনা করা হয়েছে। 
যেমন- এক হাদিসে আছে, রসুল (সা.) বলেছেন, নামাজ ছেড়ে দেওয়া মানুষকে কুফরির সঙ্গে মিলিয়ে দেয়। অন্য হাদিসে আছে নামাজ ছেড়ে দেওয়াটাই বান্দাকে কুফরির সঙ্গে মিলিয়ে দেয়। আরেক হাদিসে আছে ইমান ও কুফরির মাঝে পার্থক্য হলো নামাজ ছেড়ে দেওয়া। 
অপর এক হাদিসে আছে, নবী করিম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তির এক ওয়াক্ত নামাজ ছুটে গেল, তার থেকে যেন তার পরিবার-পরিজন ও ধনসম্পদ সবকিছুই কেড়ে নেওয়া হলো। (ইবনে হিব্বান,) সাধারণত পরিবার-পরিজন ও ধনসম্পদের পেছনে ব্যস্ত থাকার কারণে নামাজ ছুটে যায়। তাই নবী করিম (সা.) এভাবে বলেন। অর্থাৎ একজন ব্যক্তির কাছে তার পরিবার-পরিজন, ধনসম্পদ যেমন মূল্যবান ঠিক তেমনিভাবে নামাজ তার থেকেও অধিক মূল্যবান। তাই নামাজকে অতি মূল্যবান সম্পদ মনে করা উচিত। 

শরিয়তে বিনা উজরে দুই ওয়াক্ত নামাজ একসঙ্গে আদায় করা কবিরা গুনাহ, জামে তিরমিজির এক হাদিসে এসেছে, হজরত নবী করিম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি শরিয়তসম্মত কারণ ছাড়া দুই ওয়াক্তের নামাজ একসঙ্গে মিলিয়ে পড়ল, সে কবিরা গোনাহের দরজাসমূহের একটি দরজায় প্রবেশ করল। 

অপর হাদিসে হজরত আলী রাযি. বলেন, নবী করিম (সা.) বলেছেন, তোমরা তিন কাজে বিলম্ব করো না। এক. নামাজ, যখন সময় হয়। দুই. জানাজা, যখন তা তৈরি হয়। তিন. অবিবাহিত নারী, যখন তার উপযুক্ত স্বামী পাওয়া যায়। অর্থাৎ এ তিনটি কাজ করার সময় হলে সঙ্গে সঙ্গে করে নেওয়া উচিত। অপর হাদিসে এসেছে, একদিন নবী করিম (সা.) নামাজের বিষয় আলোচনা করতে গিয়ে বললেন, যে ব্যক্তি নামাজের গুরুত্ব দেয় না কেয়ামতের দিন তার জন্য নামাজ নূর হবে না। তার কাছে কোনো দলিল থাকবে না। নাজাতের জন্য তার কোনো উপায়ও থাকবে না। এরূপ ব্যক্তির হাশর হবে ফেরাউন, হামান ও উবাই ইবনে খলফের সঙ্গে। (মুসনাদে আহমদ, ইবনে হিব্বান) একবার নবী করিম (সা.) একটি স্বপ্নের কথা শুনালেন, তিনি বলেন আমাকে দুই ব্যক্তি সঙ্গে করে এক জায়গায় নিয়ে গেল। জাহান্নামে এক ব্যক্তিকে দেখলাম যে, তার মাথা পাথর দ্বারা আঘাত করে চূর্ণবিচূর্ণ করা হচ্ছে। এত জোরে পাথর মারা হচ্ছে যে, সে পাথর ছুটে গিয়ে দূরে পড়ছে, পুনরায় পাথর কুড়িয়ে আনতে আনতে মাথা আগের মতোই ঠিক হয়ে যাচ্ছে। পাথর এনে আবার আঘাত করা হচ্ছে। নবী করিম (সা.) সাথী দুজনকে জিজ্ঞাসা করলেন এই লোকটি কে? তখন তারা বলল এই ব্যক্তি কোরআন শরিফ শিক্ষা করে ছেড়ে দিয়েছিল এবং নামাজ না পড়ে ঘুমিয়ে যেত। অন্য হাদিসে আছে নবী করিম (সা.) একদল মানুষকে এ ধরনের শাস্তিতে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, আর জিবরাইল (আ.) উত্তরে বললেন এরা নামাজে অবহেলা করত। (আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব)। 

 লেখক : খতিব, নয়ানগর বায়তুল আমান জামে মসজিদ, বারিধারা, ঢাকা। (বাংলাদেশ প্রতিদিন)

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

2 টি উত্তর
14 নভেম্বর 2018 "ধর্ম ও বিশ্বাস" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন রাজকুমার (26 পয়েন্ট) 1 24 28
2 টি উত্তর
1 উত্তর
18 মার্চ 2018 "ইসলাম ধর্ম" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন ALAmin (161 পয়েন্ট) 29 150 166
1 উত্তর
04 সেপ্টেম্বর 2019 "ইসলাম ধর্ম" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন অা ক ম আজাদ (8,268 পয়েন্ট) 97 583 689

28,156 টি প্রশ্ন

29,682 টি উত্তর

3,147 টি মন্তব্য

3,945 জন সদস্য



আস্ক প্রশ্ন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে কমিউনিটির এই প্ল্যাটফর্মের সদস্যের মাধ্যমে আপনার প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান পেতে পারেন এবং আপনি অন্য জনের প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান দিতে পারবেন। মূলত এটি বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য।

  1. Jahed hussen

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  2. নাজমুল হুদা

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  3. Rayhan hossen

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  4. Atikul

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  5. Md.sakil

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

শীর্ষ বিশেষ সদস্য

...