অদ্ভুত ১০ বৈশিষ্ট্য,,,,,, ,,
১।শুক্র গ্রহ আমাদের সৌরজগতে সূর্যের দ্বিতীয় নিকটতম গ্রহ এবং পৃথিবীর নিকটতম প্রতিবেশী গ্রহ।সৌরজগতের অন্য যে কোন গ্রহের থেকে শুক্র গ্রহে আগ্নেয়গিরির সংখ্যা সবথেকে বেশী। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরাএখন পর্যন্ত ১৬০০ এর বেশি আগ্নেয়গিরি শুক্র গ্রহের পৃষ্ঠদেশে খুজে পেয়েছেন যার অধিকাংশই সুপ্ত অবস্থায় রয়েছে।অবশ্য আরও অনেক বেশী আগ্নেয়গিরি থাকার সম্ভাবনা আছে যে গুলো আকৃতিতে ক্ষুদ্র বলে টেলিস্কোপ এ দেখা যায়না।
২। শুক্র গ্রহে একদিন হয় পৃথিবীর ২৪৩ দিনের সমান (অর্থাৎ একবার নিজ অক্ষে আবর্তিত হতে শুক্র গ্রহের ২৪৩ দিন সময় লাগে!) অথচ সূর্যের চারদিকে একবার ঘুরে আসতে শুক্র গ্রহের সময় লাগে ২২৪.৭ দিন। কি ভাবছেন? হ্যাঁ, শুক্র গ্রহে বছেরের থেকে দিন বড়!
৩। সৌরজগতের গ্রহ সমূহের মধ্যে শুক্র গ্রহের সাথেই পৃথিবীর মিল সব থেকে বেশী। দুই গ্রহেরই আকার প্রায় সমান এবং দুই গ্রহের গঠন উপাদানও প্রায় একইরকম।শুক্র গ্রহের কক্ষপথ পৃথিবীর নিকটতম। দুইটি গ্রহের পৃষ্ঠদেশ অপেক্ষাকৃত নতুন এবং উভয় গ্রহেরই বায়ুমন্ডল ঘন মেঘ দ্বারা ঢাকা। (বলার অপেক্ষা রাখেনা যে শুক্র গ্রহের বায়ুমন্ডল বিষাক্ত সালফিউরিক এসিড এর মেঘ দ্বারা গঠিত)
৪।যেহেতু শুক্র গ্রহের বায়ুমন্ডল ঘন কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস দ্বারা গঠিত, তীব্র গ্রীনহাউস ইফেক্ট এর জন্য এর পৃষ্ঠদেশের তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়ছে এবং তাপমাত্রা প্রায় ৮৭০ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা ৪৭০ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। শুক্র গ্রহের পৃষ্ঠদেশের তাপমাত্রা সিসাকে গলিয়ে ফেলার জন্য যথেষ্ট।
৫। শুক্র গ্রহে বায়ুমন্ডলের চাপ অতীব প্রচণ্ড, পৃথিবীর বায়ুমন্ডল চাপের প্রায় ৯০ গুণ। (পৃথিবীতে সমুদ্রের তলায়ে ১ কিমি নীচে এ রকম চাপ থাকে) বায়ুমন্ডলের এই চাপে মানুষের চিড়েচ্যাপ্টা হয়ে যাওয়ার কথা!
৬। শুক্র গ্রহকে আমরা পৃথিবী থেকে সূর্য এর সামনে দিয়ে প্রদক্ষিন করতে দেখতে পাই। শুক্র গ্রহ ছাড়াও বুধ গ্রহকে পৃথিবী থেকে অনুকূল অবস্থায়ে সূর্য এর সামনে দিয়ে প্রদক্ষিন করতে দেখতে পাওয়া যায়।
৭। শুক্র গ্রহ প্রথিবী থেকে দৃশ্যমান সবথেকে উজ্জলতম গ্রহ। এটি শুকতারা নামেও পরিচিত। রাতের আকাশে চাঁদের পরেই দৃশ্যমান উজ্জলতম লক্ষ্যবস্ত হলো এই শুকতারা।প্রকৃতপক্ষে এটি এতই উজ্জল যে ২০১১ সালে এয়ার কানাডার একজন পাইলট শুকতারাকে একটি ধাবমান আকাশযান হিসেবে ভুল করে বসেন এবং ফ্লাইট কন্ট্রোল রুমে সাহায্য চাইলে তাকে নিশ্চিত করা হয় যে ওটি শুক্রগ্রহ এবং তার প্লেন থেকে সেটি কোটি কোটি মাইল দূরে অবস্থান করছে!
৮। প্রাচিন ব্যাবিলনবাসি খ্রিষ্টপূর্ব ১৬০০ সালে প্রথম আকাশে শুক্র গ্রহের চলাচল লিপিবদ্ধ করেন।মহান গ্রীক গণিতবিদ পিথাগোরাস প্রথম প্রমাণ করেন যে সকাল ও সন্ধ্যায় আকাশে যে উজ্জ্বলতম নক্ষত্র দেখা যায় তা আসলে শুক্র গ্রহ।
৯। শুক্র গ্রহে বায়ুপ্রবাহের গতিবেগ প্রায় ঘণ্টা প্রতি ৪৫০ মাইল (৭২৪ কিমি) পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে!
১০। যেহেতু শুক্র গ্রহ পৃথিবীর অক্ষের মধ্যে থেকেই সূর্যকে প্রদক্ষিন করে, তাই চাঁদের মত শুক্র গ্রহের ও পূর্ণিমাও অমাবস্যাঘটে। যখন শুক্র গ্রহ সূর্যের বিপরীতে থাকে তখন তা পূর্ণিমাও দশাতে থাকে। আর যখন পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে থাকে তখন অমাবস্যাদশার সৃষ্টি হয়। ইতালীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলি ১৬১০ খ্রিস্টাব্দে এই দশা সর্বপ্রথম অবলোকন করেন।