১)নালান্দা বিশ্ববিদ্যালয় (৬০০ খ্রিস্টপূর্ব)এ
এখনও টিকে আছে এমন একটি প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় ভারতের নালান্দা বিশ্ববিদ্যালয়। এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যিশুখ্রিস্টের জন্মেরও পূর্বে। এখানে ভারতীয় সংস্কৃতির অনেক পুরনো ঐতিহ্য রয়েছে, শিক্ষার ভিত্তিও অনেক পুরনো। একসময় ব্যাবিলন, গ্রিস, সিরিয়া এবং চীন থেকে ছাত্ররা এসে পড়ালেখা করত এখানে। অর্থনীতি, ব্যবসা, ভাষা, দর্শন, ব্যাকরণ, মেডিসিন, সার্জারি, সমরবিদ্যাসহ আরও অনেক বিষয়ে পড়ানো হত নালান্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সে সময়কার রাজা সকরাদিত্য প্রতিষ্ঠা করেন এ বিশ্ববিদ্যালয়। বলা হয়ে থাকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সে সময় একসাথে ১০ হাজার ৫শ ছাত্র পড়ালেখার সুযোগ পেত। সাফল্যের হার ছিল প্রতি ১০ জনে ৩ জন। মাত্র ৬ বছর বয়সে এখানে ভর্তির সুযোগ পেত ছাত্ররা। ২৯ মে ২০১৩ তারিখে বিবিসি সংবাদে প্রকাশিত তথ্যমতে, অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজ এবং ইউরোপের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় বলোগনা প্রতিষ্ঠিত হওয়ারও অনেক আগে প্রতিষ্ঠিত পৃথিবীর একটি বিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভারতের নালান্দা বিশ্ববিদ্যালয়। ১১৯৩ সালে ধংস হওয়ার আগে শত শত বছর ধরে উত্তর ভারতের বিহার রাজ্যের এই প্রতিষ্ঠানটি অত্যন্ত সুনামের সাথে মাথা উঁচু করে টিকে ছিল । নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের মতে, বৌদ্ধ শাসন আমলে নির্মিত এ প্রতিষ্ঠানটি থেকে অসংখ্য পণ্ডিত ব্যক্তি তৈরি হয়েছিলেন।
২)আল কারাওইন বিশ্ববিদ্যালয়(৮৫৯ খ্রিস্টাব্দ)পৃথিবীর দ্বিতীয় প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ইউনিভার্সিটি অব-আলকারাওইন, মরক্কো। প্রতিষ্ঠিত হয় ৮৫৯ সালে। বিশ্ববিদ্যালয়টি এখনও চালু আছে। ফাতিমা আল-ফিহরি নামের একজন মহিলা ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা । এর সাথে ছিল একটি মসজিদ। বিশ্ববিদ্যালয়টির সম্প্রসারণ হয়েছে খুব ধীর গতিতে।শুরুতে এখানে শিক্ষা দেয়া হত শুধু ন্যাচারাল সাইন্সের উপর। ১৯৫৭ সালের আগ পর্যন্ত আর কোনো শাখা খোলা হয়নি। পরবর্তী গর্যায়ে খুব দ্রুত সম্প্রসারিত হয়েছে এবং বর্তমানে এটি আফ্রিকার বৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নিয়েছে।৩)আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়(৯৭০-৯৭২ খ্রিস্টাব্দ)ইসলামি দুনিয়ার দ্বিতীয় প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়। এটি এখনও স্বমহিমায় টিকে আছে। আরবি সাহিত্য, সুন্নি ইসলামি শিক্ষা এবং ধর্মীয় শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে এখানে কুরআনিক বিজ্ঞান এবং প্রচলিত শিক্ষাসহ মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.)-এর শিক্ষা নিয়ে গবেষণা হয়ে থাকে।এখানে আধুনিক বিজ্ঞানও শিক্ষা দেয়া হয়। আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি এক অফুরন্ত জ্ঞানের ভাণ্ডার। ইসলামি দুনিয়ার অসংখ্য বই রয়েছে এই লাইব্রেরিতে এবং সাত মিলিয়ন বইয়ের পৃষ্ঠা সংরক্ষিত রয়েছে অন লাইনে। এত বিশাল সংরক্ষণ আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই।বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মিশরের ফাতিমিদ সাম্রাজ্যের সময়৷