শরীয়তে (যে কোনো প্রাণীর বা জড়বস্তুর) ছবি তোলা এবং ভিডিওচিত্র ধারণ করা সাধারণভাবে জায়েয (তবে, ছবি আঁকা নয়)। কেননা,
প্রথমত, ক্যামেরা দিয়ে তোলা স্থির ছবি বা ভিডিওচিত্র মূলত আলোর প্রতিফলন ও প্রতিসরণের মাধ্যমে সৃষ্ট আমাদের প্রতিবিম্ব, যা কাগজে ছাপানো কিংবা ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসে (কম্পিউটার, মোবাইল, ক্যামেরা ইত্যাদির মেমোরিতে) সেইভ করে রাখা যায়। আর কারও প্রতিবিম্ব এবং আঁকা ছবি এক নয়; কেননা আঁকা ছবিতে সৃষ্টিশীলতার ছোঁয়া থাকে, যা প্রতিবিম্বে থাকে না। তাই ছবি আঁকার প্রতি অর্পিত নিষেধসমূহ (যা হাদীছে বর্ণিত আছে - যেমন, হাশরের ময়দানে তা-তে প্রাণ সঞ্চার করতে হবে) ছবি তোলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
দ্বিতীয়ত, আলোকচিত্র বা তোলা ছবির প্রতিবিম্ব এবং আয়নায় বা পানিতে সৃষ্ট প্রতিবিম্বের মধ্যে প্রকৃতিগতভাবে পার্থক্য নেই। কোনো সাহাবী পানিতে প্রতিবিম্ব দেখে সৌন্দর্যচর্চা করেছেন বা চুল আঁচড়িয়েছেন এবং নবীজী (’আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) তা-তে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন মর্মে কোনো হাদীছ বা দলীল পাওয়া যায় না।
তৃতীয়ত, ছবি তোলা নাজায়েয মর্মে উম্মতের ইমামগণের মধ্যে আদৌ কোনো ইজমা হয়নি। এ কারণেও, ছবি তোলা সাধারণভাবে জায়েয। একইভাবে, ভিডিওচিত্র ধারণ করাও জায়েয।
তবে ছবি তোলা ও ভিডিওচিত্র ধারণ করা নাজায়েয হবে, যদি তোলা ছবি ও ভিডিওতে অশ্লীলতা, উচ্ছৃঙ্খলতা, বেহায়পনা বা এমন সব কর্মকান্ডের বহিঃপ্রকাশ থাকে, যা সমাজের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে; কেননা, শরীয়তে অশ্লীলতা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
এ প্রসঙ্গে নিম্নোক্ত আয়াতসমূহ দ্রষ্টব্যঃ
“কোন রকম অশ্লীলতার কাছেও যেও না তা প্রকাশ্যে হোক বা গোপনে হোক।” (সূরা আল-আনআমঃ ১৫১)
"আপনি বলুন, আমার পালনকর্তা কেবলমাত্র অশ্লীল বিষয়সমূহ হারাম করেছেন।" (সূরা আ'রাফঃ ৩৩)
"তিনি অশ্লীলতা, অসঙ্গত কাজ এবং অবাধ্যতা করতে বারণ করেন।..." (সূরা নাহলঃ ৯০)
এছাড়া হাদীছে আছে, "আল্লাহর রসূল (সল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ... অশ্লীলতা উচ্ছৃঙ্খলতার অংশ। আর উচ্ছৃঙ্খলতার ঠিকানা জাহান্নামে।" (আহমাদ ও তিরমিযী)