নিচে বর্ণিত উপায়গুলো অনুসরণ করলে আপনার চুল পড়া ই শুধু কমবে না বরং আপনি পাবেন খুব সুন্দর, সিল্কি ও স্বাস্থ্যবান চুল। চুল পড়া রোধে যে প্রক্রিয়া গুলো আছে তার বেশিরভাগ ই আপনি বাসায় বসে করতে পারবেন, তবে এগুলো ছাড়াও এমন কিছু উপায় আছে যার জন্য আপনাকে ডাক্তারের কাছে যেতে হতে পারে।
চলুন এখন কি কি উপায়ে চুল পড়া রোধ করা যায় তা জেনে নেইঃ
পেঁয়াজ ও রসুনঃ
সালফার (sulphur) এমন একটি উপাদান যা নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। রসুন ও পেঁয়াজের মধ্যে প্রচুড় পরিমাণে সালফার থাকে যা চুলের জন্য খুবই উপকারী। তাই যেভাবে আপনি রসুন ও পেঁয়াজ ব্যবহার করে চুল পড়া রোধ করতে পারেন তা হলঃ
# সমপরিমাণ পেঁয়াজের রস ও ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে মাথার ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ১ ঘন্টা। এরপর শ্যাম্পু করে ফেলুন। এটি সপ্তাহে ২ বার করে নিয়মিত ব্যবহার করুন।
# রঁসুনের ৫/৬ টি কোয়া নিয়ে বেঁটে নিন। এবার এই বাঁটা অংশটি নারিকেল তেলে কিছুক্ষন চুলায় ফুটিয়ে নিন। মিশ্রনটি ঠান্ডা হলে মাথার ত্বকে লাগান। সপ্তাহে ২/৩ বার করে নিয়মিত ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।
আলুঃ
আলু চুলের যত্নেও ব্যবহার করা যায়। যেভাবে আলু ব্যবহার করবেনঃ
# একটি জ্যুসার বা ব্লেন্ডারে ৩ টি আলু নিয়ে এর রস সংগ্রহ করুন। এবার আলুর রসে একটি ডিমের কুসুম, কিছু পরিমাণ পানি ও এক চা চামচ মধু মিশিয়ে নিন ভালো করে। ভেজা চুলে এই মিশ্রণটি লাগিয়ে রাখুন ৩০ মিনিট। এরপর হাল্কা কুসুম গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এই প্রক্রিয়াটি সপ্তাহে একবার করে কয়েক মাসের জন্য টানা ব্যবহার করে দেখুন। দেখবেন চুল পড়া কমে গেছে।
মেহেদি পাতাঃ
ন্যাচারাল ভাবে চুল রঙ ও চুলকে কন্ডিশন করার পাশাপাশি মেহেদি পাতা ব্যবহার করে চুল পড়া কমানো ও সম্ভব। যেভাবে ব্যবহার করবেনঃ
# ২৫০ মিলি সরিষার তেল নিন একটি টিনের কৌঁটায়। এবার এতে ৬০ গ্রাম মেহেদি পাতা (ধোয়া ও শুকনো) দিয়ে চুলার জ্বাল দিন যতক্ষন না পাতাগুলো পুড়ে যায়। এবার মিশ্রণটি একটি মসলিনের কাপড়ে ছেকে নিয়ে শুধু তেলটি রাখুন। এই তেল নিয়মিত মাথার ত্বকে ও চুলে লাগাবেন।
# এক কাপ শুকনো মেহেদি পাতার গুড়ার সাথে আঁঁধা কাপ দই মিশিয়ে নিন ভালো করে। মিশ্রণটি চুলে লাগান এবং যতক্ষণে চুল না শুকিয়ে যায় অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে মৃদু শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
নারকেলের দুধঃ
নারকেলের দুধ চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার জন্য খুব কার্যকর, তাই এটি যেভাবে ব্যবহার করবেনঃ
# নারকেলের দুধ প্রোটিন, আয়রন, পটাসিয়াম ও অপরিহার্য চর্বিতে পরিপূর্ণ। চুল ছাটাই ও ভাঙ্গন রোধে এটি সাহায্য করে। তাই আপনি যদি সুন্দর চুল পেতে চান তাহলে নারকেলের দুধ রাতে মাথার ত্বকে লাগিয়ে প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে মাথা ঢেকে রাখুন। সকালে উঠে ধুয়ে ফেলুন। এটি খুবই কার্যকর একটি উপায়।
# ডিম আরেকটি উপাদান যা সালফারে পরিপূর্ণ। তাই ডিম যেভাবে ব্যবহার করতে পারেনঃ
# ১ টি ডিমের সাদা অংশের সাথে ১ চা চামচ অলিভ অয়েল বিট করে নিন। এটি মাথার ত্বকে ও চুলে লাগান। ১৫-২০ মিনিট লাগিয়ে রেখে চুলে শ্যাম্পু করে নিন।
গ্রীন টিঃ
গ্রীন টি শুধু খাওয়ার জন্যই নয় চুলের জন্যও খুব উপকারী কেননা এতে প্রচূড় পরিমাণে আন্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। কুসুম গরম গ্রীন টি মাথার ত্বকে ১ ঘন্টা লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। চুলের বৃদ্ধির জন্য এটি ব্যবহার করতে পারেন।
এন্টি ড্যান্ড্রাফ শ্যাম্পু বন্ধ করুনঃ
যদি আপনার চুল পড়ে তবে আজই ব্যবহার করা বন্ধ করুন আমাদের দেশে খুব জনপ্রিয় কিছু এন্টি ড্যান্ড্রাফ শ্যাম্পু, যেমন head n shoulder, Pantene, Clear। মনে রাখবেন, সব এন্টি ড্যান্ড্রাফ শ্যাম্পুই যাদের চুল পড়ে তাদের জন্য ভয়ঙ্কর ক্ষতিকর।
এসব প্রক্রিয়ার পাশাপাশি চুলের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেই জিনিসটি সেটি হল পানি। তাই বেশি বেশি পানি পান করবেন।