হাতের লেখা সুন্দর করার সর্বপ্রথম প্রয়োজন সুন্দর হাতের লেখার প্রতি প্রবল আকর্ষণ, অদম্য আগ্রহ। আর চাই কঠিন পরিশ্রম। কারন আপনার হাতের লেখা আপনার রুচির বহিঃপ্রকাশ করবে। প্রচলিত একটি প্রবাদ আছে: তিনটি বিষয় এমন আছে যে এগুলো যদি কোন ব্যক্তির অর্জিত হয় তাহলে তার জীবন সুখের, সফলতার। সুন্দরী স্ত্রী আর সুমধুর কণ্ঠস্বর এর সাথে সাথে অন্যতম অপর টি হলো সুন্দর হাতের লেখা। তাছাড়া মানব জীবনের মূল অধ্যায় “ছাত্র যুগের” সফলতার অনেকটা নির্ভর করে সুন্দর হাতের লেখার উপর, কেননা এর মাধ্যমেই আসে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল। নিম্নে তাই হাতের লেখা সুন্দর করার উপায় সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো।
সুন্দর হাতের লেখা শেখবার দুটি পন্থা অনুসরণ করা যেতে পারে। হয়তো কোন সুন্দর হস্তাক্ষর এর বই দেখে হুবহু উক্ত লেখা অনুকরন করে অথবা সুন্দর হস্তাক্ষরের অধিকারি কাহারো দিকনির্দেশনা সহকারে তার থেকে লেখা নিয়ে তদানুসারে শেখা। ক্ষেত্র বিশেষ এ পন্থা টিই বেশি কার্যকর।এখন আপনি যে পন্থাই অবলম্বন করুন না কেনো হাতের লেখা সুন্দর করার জন্য প্রথমে লেখার সুবিধামত আরাম করে বসবেন।
কলম কে তিন আঙ্গুল দিয়ে এক ইঞ্চি উপরে ধরবেন। যে বর্ণ কিংবা বাক্য অনুশীলন করবেন, প্রথমে সেটিকে গভীরভাবে লক্ষ্য করবেন। তার শুরু কিভাবে, শেষ কিভাবে, কয়টা ভাজ, ভাজটি কিরুপ, টানটি সোজা না বাকা, না বৃত্ত আকারের ইত্যাদি খুঁটিনাটি বিষয় গুলোকে কম পক্ষে পাঁচ বার গভীর মনোযোগের সাথে দেখবেন। যাতে বর্ণ কিংবা বাক্য আত্মস্থ হয়ে যায়। যেকোন বর্ণ বা শব্দ পাঁচ বার দেখে একবার লিখবেন, একবার দেখে পাঁচ বার লিখবেন না।
বর্ণমালার প্রতিটি বর্ণ বারবার, শতবার, প্রয়োজনে হাজারবার প্রেক্টিস করুন। লেখার সময় খুব ধৈর্যের সাথে ধীরেধীরে লিখবেন। কোনধরন এর তাড়াহুড়া করবেন না। শব্দ থেকে শব্দ একটু দূরত্ব বজায় রাখুন। যাতে পড়তে বিরক্তববোধ না হয়। প্রতিটি অক্ষরের উপর নিচ সমান করে লিখুন। প্রতিটি বর্ণের পরিমাপ সমান রাখুন। লাইন সোজা রাখার প্রতি সতর্ক থাকুন।
একবার লেখার পর মূল লেখা আর আপনার লেখা মিলিয়ে দেখবেন। বর্ণের কোন ভাজ হয়েছে আর কোন কোন ভাজ হয়নি, কোথায় ব্যতিক্রম, যা হয় নি তা কেন হয়নি গভীরভাবে ভাববেন। যেখানেই ব্যতিক্রম পাবেন তা মূল বর্ণ কিংবা বাক্যের অনুকরণে লাল কলম দিয়ে ঠিক করবে। যখনই লিখবেন হাতের নাগালে লাল কলম রাখবেন। লাল কলম দিয়ে ঠিক করার পর পুনরায় অদম্য আগ্রহ নিয়ে আবার নতুন ভাবে লিখবেন।
কোন শব্দ কিংবা বাক্য আয়ত্তে না আসলে হতাশ হবেন না অক্লান্ত লিখতেই থাকবেন, লেখতে লেখতে যখন মূলটির মত হুবহু হয়েছে বলে মনে করবেন, তখন আরেক ধাপ অগ্রসর হবেন। অর্থাৎ এ পর্যন্ত আপনি ধীরেধীরে লেখা সুন্দর করতে সক্ষম হয়েছেন। এখন চেষ্টা করবেন কিভাবে দ্রুত ও অনায়াসে মূলটির মত লেখা যায়।
প্রতিটি শব্দ কিংবা বাক্য কে এমন ভাবে আয়ত্ত করবেন, যাতে কোন চিন্তা ছাড়া নিঃসঙ্কোচে লিখতে পারেন। বর্ণমালার প্রতিটি বর্ণের আকার ও গঠন এমন ভাবে হৃদয়ঙ্গম করুন যাতে চোখ বন্ধ করেও লেখতে পারেন। মূলত অনায়াসে দ্রুত গতিতে সুন্দর করে লিখতে পারাই হলো লেখার কৃতিত্ব।