যদি শিশুর পাতলা পায়খানা শুরু হলে তার শরীর থেকে যে পরিমাণ তরল বের হয়ে যাচ্ছে সেটার অভাব পূরণ করা দরকার। তা না হলে তার শরীরে মারাত্মক পানিশূন্যতা তৈরি হবে ৷ তাই কোলের শিশুকে বার বার বুকের দুধ খেতে দিন এবং যতবার সে চাইবে ততবারই তাকে খাওয়ান ৷ যদি বাচ্চার বয়স ৬ মাসের বেশি হয়, বুকের দুধ খাওয়ানো সহ তাকে অল্প অল্প করে পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ (ফুটিয়ে ঠান্ডা করা)পানি খাইয়ে দিন ৷ এছাড়া তাকে অন্যান্য স্বাভাবিক খাবারও খেতে দিতে হবে। এছাড়া তাকে প্রতি ঘন্টায় কয়েকবার চুমুক দিয়ে ওরাল স্যালাইন (ওআরএস) খাওয়ানোর চেষ্টা করুন৷ স্যলাইন তৈরী করে ৮-১২ ঘন্টার মধ্যে তা ব্যবহার করতে হবে। প্রত্যেকবার পাতলা পায়খানার পরে আপনার শিশুকে ১৫-২০ চা-চামচ ওআরএস খেতে দিন৷ যদি আপনার শিশু ওআরএস না খেতে চায়, তাহলে আপনি লবন চিনি দিয়ে লেবুর পানি, ডাল বা ভাতের মাড় বা ডাবের পানি দিতে পারেন৷
এই গরমে ডায়রিয়া প্রতিরোধের উপায়সমূহ
একটু সাবধান হলে এই গরমে খুব সহজেই শিশুসহ বড়দেরও ডায়রিয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব। যেমনঃ
গরমে শিশুরা প্রচুর ঘামে তাই তাদের অনেক বেশি পানি পিপাসা লাগে। তাই তাদের পানি ভালভাবে ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে পান করতে দিন এবং নিজেরাও বিশুদ্ধ পানি পান করুন।
গরমে খাবার বেশিক্ষণ ভাল থাকে না। তাই অসাবধানতাবশত কখনও শিশুকে পচা অথবা বাসি খাবার খাওয়াবেন না।
·গরমে ডায়রিয়ার জন্য দায়ী বিভিন্ন রোগজীবাণু যেমন ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক, ও গ্যাস্ট্রোএন্টারাইটিস নামক পরজীবী কৃমির বংশবৃদ্ধি অনেক বেশি হয়। তাই আপনার ঘরকে অবশ্যই সবসময় জীবাণুমুক্ত রাখার চেষ্টা করুন।
গরমের সময় শিশুকে বেশি বেশি খাওয়ার স্যালাইন ও তরল খাবার, যেমন- ভাতের মাড়, ডাবের পানি, ঘোল, টকদই, ফলের রস ও লবণ-গুড়ের শরবত খেতে দিতে পারেন। মনে রাখবেন স্যালাইনের কাজ ডায়রিয়া বন্ধ করা নয়। এটি শুধুমাত্র শরীরের পানি ও লবণের শূন্যতা পূরণ করে।
প্রতিবার পায়খানার পর ১০ থেকে ১৫ চামচ খাবার স্যালাইন আপনার শিশুকে খেতে দিন। অবশ্যই মনে রাখবেন, স্যালাইন ধীরে ধীরে খাওয়াতে হবে এবং এক এক চামচ করে সময় নিয়ে খাওয়াতে হবে।
শিশুকে অন্যান্য খাবার সঠিকভাবে দিতে হবে। সব রকমের খাবার, যেমন- খিচুড়ি, মাছ, মাংস, ডাল, ভাত, ডিম, কলা, ফলের রস, সবজি ইত্যাদি সবকিছুই শিশু খেতে পারবে।
খাবার রান্না করার সময় অবশ্যই সয়াবিন তেল দিবেন। কাঁচকলা ডায়রিয়ার তীব্রতা কমায় ও তাজা ফলের রস পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণে সহায়ক। তাই তাদের এসব খাবার খেতে দিন।
ডায়রিয়া চিকিৎসা করার সব থেকে গুরত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে পানিশূন্যতা হতে না দেয়া। যার মানে পায়খানার মাধ্যমে বের হয়ে যাওয়া পানি ও লবণের সময়মত প্রতিস্থাপন করা খুবই জরুরী। ডায়রিয়ার কারণে যেহেতু প্রয়োজনীয় পানি ও লবণ (যার মধ্যে রয়েছে চিনি, সোডিয়াম,পটাশিয়াম) শরীর থেকে বের হয়ে যায় আর তা শুধু পানিতে পাওয়া যায়না। সেজন্য ডায়রিয়ার রোগীকে যেই সব তরলে এইসবের মাত্রা বেশী থাকে যেমন ওরাল স্যালাইন, ডাবের পানি ইত্যাদি বেশী বেশী খেতে দিন
কামরুল হাসান ফরহাদ, সমন্বয়ক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত আছেন আস্ক প্রশ্ন ডট কমের সাথে। নিজের সমস্যার সমাধানের পন্থা নিজেই খুঁজে বের করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে ভালোবাসেন। প্রশ্ন অ্যানসারকে ভালোবেসে নিয়েছেন নিজে জানার ও অপরকে জানানোর জন্য।